Friday, February 21, 2025

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে পাকিস্তানে নজিরবিহীন নিরাপত্তা—১২ হাজার পুলিশ, ১০ হাজার এআই ক্যামেরা!

Share

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি!

প্রায় তিন দশক পর আইসিসির কোনও বড় প্রতিযোগিতা আয়োজন করতে যাচ্ছে পাকিস্তান। বুধবার থেকে শুরু হতে যাওয়া চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ২০২৫ ঘিরে দেশটির সরকার এবং নিরাপত্তা সংস্থাগুলি কোনও ঝুঁকি নিতে চাইছে না। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ফেরানোর এই উদ্যোগকে সফল করতে পাকিস্তান জুড়ে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। করাচি, লাহোর এবং রাওয়ালপিন্ডি—এই তিন শহরে বসানো হয়েছে নজিরবিহীন নিরাপত্তা বলয়, যাতে ক্রিকেটার ও দর্শকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায়।

নিরাপত্তায় প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার

পাকিস্তান পুলিশ দাবি করেছে, এই প্রতিযোগিতার জন্য কার্যত ‘লোহার বর্ম’ তৈরি করা হয়েছে। পুরো নিরাপত্তা ব্যবস্থায় যুক্ত করা হয়েছে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি, যার মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হলো ১০,০০০ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন (AI) ক্যামেরা

এই ক্যামেরাগুলি মানুষের মুখের মিল শনাক্ত করতে পারবে, ফলে সন্দেহভাজন কাউকে সহজেই চিহ্নিত করা সম্ভব হবে। এ ছাড়া প্রতিটি স্টেডিয়ামের আশপাশে, প্রবেশ ও বহির্গমন পথে এবং টিম হোটেলগুলোর সামনে বাড়তি নজরদারি রাখা হয়েছে।

করাচিতে পাঁচ হাজার পুলিশ মোতায়েন

করাচির পুলিশ জানিয়েছে, শহরজুড়ে পাঁচ হাজারেরও বেশি পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। যে কোনও জরুরি পরিস্থিতি সামলাতে বিশেষ প্রশিক্ষিত ‘সোয়্যাট টিম’ প্রস্তুত রাখা হয়েছে। করাচির ডিআইজি মকসুদ আহমেদ বলেন,

“দলগুলো বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন মাঠে অনুশীলন করবে। তাই প্রতিটি স্থানে কঠোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। স্টেডিয়াম, টিম হোটেল, প্রবেশ পথ ও ছাদে বিশেষ বাহিনী মোতায়েন থাকবে।”

লাহোরে নজিরবিহীন নিরাপত্তা বলয়

লাহোরে ১২,০০০ পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালন করবে, যা পাকিস্তানের ইতিহাসে কোনও ক্রীড়া ইভেন্টের জন্য সবচেয়ে বড় নিরাপত্তা প্রস্তুতি। এর মধ্যে রয়েছে—

✅ ১২ জন সিনিয়র কর্মকর্তা
✅ ৩৯ জন ডিএসপি
✅ ৮৬ জন ইন্সপেক্টর
✅ ৬,৬৭৩ জন কনস্টেবল
✅ ৭০০ জন উচ্চপদস্থ অফিসার
✅ ১২৯ জন মহিলা কনস্টেবল

স্টেডিয়ামের ভেতরে ও বাইরে প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান নজরদারির আওতায় থাকবে।

রাওয়ালপিন্ডিতে কড়া নিরাপত্তা

রাওয়ালপিন্ডি স্টেডিয়ামে মোতায়েন করা হয়েছে ৫,০০০-এরও বেশি পুলিশ সদস্য। টিম বাস চলাচলের সময় রাস্তাগুলো পুরোপুরি বন্ধ রাখা হবে এবং পুলিশের কনভয় থাকবে।

আগের তুলনায় অনেক বেশি সংগঠিত নিরাপত্তা

করাচির বাসিন্দা মহম্মদ তাহা বলেন,

“আগে যখন পাকিস্তানে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ফিরেছিল, তখন পুরো শহর বন্ধ করে দেওয়া হতো। স্টেডিয়ামের আশপাশে কাউকে ঢুকতে দেওয়া হতো না। এবারও নিরাপত্তা কড়া, তবে আগের তুলনায় অনেক বেশি সংগঠিত ও আধুনিক।”

সমর্থকদের সুবিধার জন্য বিশেষ ফ্লাইট

নিরাপত্তার পাশাপাশি দর্শকদের যাতায়াত সহজ করতে পাকিস্তান এয়ারলাইন্স করাচি, ইসলামাবাদ এবং লাহোরের মধ্যে বিশেষ ফ্লাইট চালু করেছে।

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি সফল করতে পাকিস্তানের কঠোর প্রস্তুতি

সন্ত্রাসবাদের কারণে দীর্ঘদিন পাকিস্তান আন্তর্জাতিক ক্রিকেট আয়োজন করতে পারেনি। কিন্তু এবার আইসিসির গুরুত্বপূর্ণ প্রতিযোগিতা সুষ্ঠুভাবে আয়োজন করতে দেশটি কোনো ছাড় দিতে রাজি নয়। ১০ হাজার এআই ক্যামেরা, বিশেষ বাহিনী ও হাজার হাজার পুলিশ সদস্য মোতায়েন করে পাকিস্তান এক নজিরবিহীন নিরাপত্তা বলয় তৈরি করেছে।

এই আয়োজন সফল হলে পাকিস্তানের আন্তর্জাতিক ক্রীড়া আয়োজনের ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধার হবে এবং ভবিষ্যতে আরও বড় টুর্নামেন্ট আয়োজনের সুযোগ পাবে দেশটি।

মাটির নীচ থেকে গর্জনের শব্দ! ভূমিকম্পের নতুন অভিজ্ঞতায় আতঙ্কিত দিল্লিবাসী— কেন হল এমন?

Read more

Local News