চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে পন্থের খেলার সম্ভাবনা কম!
২০২৫ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির জন্য ভারত ইতিমধ্যেই ১৫ জনের দল ঘোষণা করেছে। অভিজ্ঞ এবং তরুণদের সমন্বয়ে তৈরি এই দল নিয়ে প্রত্যাশা তুঙ্গে। কিন্তু বড় প্রশ্ন হলো, এই ১৫ জনের মধ্যে প্রথম একাদশে কাদের জায়গা হবে?
প্রধান নির্বাচক অজিত আগরকর এবং অধিনায়ক রোহিত শর্মা জানিয়েছেন, জসপ্রীত বুমরাহর ফিটনেস নিয়ে কিছুটা সংশয় রয়েছে। তবুও তাঁকে দলে রাখা হয়েছে, ধরে নেওয়া হয়েছে তিনি খেলতে পারবেন। এদিকে, ব্যাটিং গভীরতা এবং বোলিংয়ের বৈচিত্র্য বজায় রাখতে দলে বেশ কিছু অলরাউন্ডারকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তবে উইকেটরক্ষক হিসেবে লোকেশ রাহুলকেই প্রাধান্য দেওয়া হতে পারে, ফলে ঋষভ পন্থের একাদশে থাকার সম্ভাবনা ক্ষীণ। চলুন, সম্ভাব্য একাদশটি কেমন হতে পারে, তা বিশ্লেষণ করা যাক।
টপ অর্ডার
ভারতের টপ অর্ডার প্রায় স্থির। অধিনায়ক রোহিত শর্মা এবং সহ-অধিনায়ক শুভমন গিল ইনিংস শুরু করবেন। শুভমনের সাম্প্রতিক ফর্ম এবং রোহিতের অভিজ্ঞতা দলের শক্তি বাড়াবে। তিন নম্বরে দেখা যাবে বিরাট কোহলিকে। এই জায়গায় কোহলির কোনও বিকল্প এখনও তৈরি হয়নি। তাঁর অভিজ্ঞতা এবং ধারাবাহিকতা ভারতের ব্যাটিং মেরুদণ্ড।
মিডল অর্ডার
চার নম্বরে সম্ভবত খেলবেন শ্রেয়স আয়ার। এক দিনের ফরম্যাটে তাঁর সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স এবং ঘরোয়া ক্রিকেটে ফর্মের জন্য এই জায়গায় তাঁর নাম প্রায় নিশ্চিত। পাঁচ নম্বরে খেলবেন লোকেশ রাহুল, যিনি উইকেটরক্ষকের দায়িত্বও পালন করবেন। এক দিনের বিশ্বকাপেও রাহুল এই ভূমিকায় সফল ছিলেন। তাঁর স্থির ব্যাটিং দলের চাপ সামলাতে সহায়ক হবে।
ঋষভ পন্থকে এই অবস্থানে দেখা যাবে না বলেই মনে করা হচ্ছে। যদিও পন্থ ভারতীয় দলে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন, তবে রাহুলের অভিজ্ঞতা এবং সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স তাঁকে এগিয়ে রাখবে।
অলরাউন্ডার বিভাগ
ভারত প্রথম একাদশে তিন জন অলরাউন্ডার রাখতে পারে। হার্দিক পাণ্ড্য, অক্ষর পটেল এবং ওয়াশিংটন সুন্দর দলের ছয়, সাত এবং আট নম্বরে খেলতে পারেন। রোহিত শর্মা নিজেই বলেছেন, এই অলরাউন্ডাররা ব্যাটিং বা বোলিং, দুই ক্ষেত্রেই দলের গভীরতা বাড়াবে। দলের ভারসাম্য বজায় রাখতে তাঁদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ হবে।
হার্দিক পাণ্ড্য দলের নির্ভরযোগ্য ফিনিশার এবং প্রয়োজনে ১০ ওভার বল করার সামর্থ্য রাখেন। অক্ষর এবং সুন্দর, দুজনেই স্পিন-বোলিং অলরাউন্ডার, যাঁরা ব্যাটিং লাইনআপে গভীরতা যোগ করেন। দুবাইয়ের স্পিন-বান্ধব পিচে তাঁদের ভূমিকা আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে।
বোলার বিভাগ
বোলিং বিভাগের তিনটি জায়গায় থাকবেন বিশেষজ্ঞ বোলাররা। জসপ্রীত বুমরাহ দলে থাকবেন, যদি তিনি পুরোপুরি ফিট হয়ে যান। চিকিৎসকরা ইতিবাচক ইঙ্গিত দেওয়ার পরই তাঁকে দলে রাখা হয়েছে। নতুন বলে তাঁর সঙ্গে থাকবেন মহম্মদ শামি, যিনি বুমরাহর সেরা পার্টনার।
স্পিন বিভাগে কুলদীপ যাদব থাকবেন প্রধান ভরসা। তিনি দলের একমাত্র চায়নাম্যান স্পিনার, যাঁর উইকেট নেওয়ার ক্ষমতা ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে। কুলদীপ ব্যাটিং অর্ডারের ন’নম্বরে নামবেন।
ভারতের সম্ভাব্য একাদশ
১. রোহিত শর্মা (অধিনায়ক)
২. শুভমন গিল (সহ-অধিনায়ক)
৩. বিরাট কোহলি
৪. শ্রেয়স আয়ার
৫. লোকেশ রাহুল (উইকেটরক্ষক)
৬. হার্দিক পাণ্ড্য
৭. অক্ষর পটেল
৮. ওয়াশিংটন সুন্দর
৯. কুলদীপ যাদব
১০. মহম্মদ শামি
১১. জসপ্রীত বুমরাহ
কৌশলগত দিক
ভারতের ম্যাচগুলি দুবাইয়ে হবে। এই পিচে স্পিনাররা বিশেষ ভূমিকা নেবেন। তাই তিন স্পিনার থাকা স্বাভাবিক। আবার, হার্দিক বা বুমরাহ ১০ ওভার বল করতে না পারলে ছ’জন বোলার প্রয়োজন হবে। এজন্য অলরাউন্ডারদের সংখ্যা বেশি রাখা হয়েছে।
শেষ কথা
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ভারতের দল ভারসাম্যপূর্ণ। ব্যাটিং গভীরতা, বোলিং বৈচিত্র্য এবং অভিজ্ঞতার মিশ্রণ এই দলকে শক্তিশালী করে তুলেছে। পন্থের মতো একজন প্রতিভাবান ক্রিকেটারকে একাদশে দেখা না গেলেও, দলের সামগ্রিক কাঠামো শক্তপোক্ত। এখন দেখার, এই সম্ভাব্য একাদশ ভারতের হয়ে ট্রফি ঘরে তুলতে কতটা সফল হয়।
ঠান্ডায় বরফ-জলে মুখ ডোবাতে পারছেন না? ত্বকচর্চার অন্য উপায়ও জানিয়েছেন আলিয়া