Saturday, May 10, 2025

“চেয়ারম্যান না দেখা করা পর্যন্ত ছাড়ব না!”— এসএসসি ভবনে উত্তাল চাকরিহারাদের আন্দোলন

Share

চেয়ারম্যান না দেখা করা পর্যন্ত ছাড়ব না!!

সোমবার রাতটা সল্টলেকের আচার্য সদনে যেন পরিণত হয়েছিল এক উত্তাল মঞ্চে। চাকরি হারানো একদল প্রাক্তন শিক্ষক তাঁদের দাবিতে অনড় হয়ে ঘেরাও করে রাখলেন স্কুল সার্ভিস কমিশনের (এসএসসি) ভবন। তাঁদের একটাই দাবি—কমিশনের চেয়ারম্যানকে দেখা করতেই হবে! না হলে ছাড়ানো হবে না অফিসে আটকে থাকা আধিকারিকদের।

গত বৃহস্পতিবার থেকে তালিকায় নাম না-থাকা শিক্ষক-শিক্ষিকারা বারবার এসএসসি ভবনের সামনে বিক্ষোভ দেখিয়ে আসছেন। তাঁদের অভিযোগ, ওএমআর শিটে গলদ রয়েছে বলেই তাঁদের ‘অযোগ্য’ হিসেবে দাগিয়ে দেওয়া হয়েছে, অথচ এখনও আদালতে এসব প্রমাণিত হয়নি। তাহলে এই আগেভাগে ‘অযোগ্য’ তকমা দিয়ে কেন বন্ধ করে দেওয়া হলো তাঁদের বেতন?

আন্দোলনকারীদের কথায়, “এটা তো শুধু একটা চাকরির প্রশ্ন নয়, এটা আমাদের মর্যাদা, পরিবার চালানোর লড়াই। যে ভুল এসএসসি করেছে, তার দায় আমরা কেন নেব?”

সোমবার দুপুরে হাজরা মোড়ে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। পরে সন্ধ্যার পর আবার এসএসসি ভবনের সামনে বসেন অবস্থানে। এ বার বিক্ষোভের তীব্রতা এতটাই বেড়ে যায় যে অন্তত ১৯ জন অফিসার ভিতরে আটকে পড়েন। আন্দোলনকারী রীতেশ ঘোষ জানান, “আমরা কিছু আধিকারিককে আটকে রেখেছিলাম, তবে কয়েকজন পাঁচিল টপকে পালিয়ে গিয়েছেন। দাবি না মানা পর্যন্ত আমরা এখান থেকে সরব না।”

শনিবারও আন্দোলনকারীরা শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর বাড়ির সামনে জড়ো হয়েছিলেন। কিন্তু মন্ত্রী তখন বাড়িতে না থাকায় তাঁরা বসে পড়েন ধর্নায়। পরে পুলিশের মাধ্যমে সাক্ষাতের আশ্বাস মেলার পর সেখান থেকে সরে যান।

পরদিন সোমবার তাঁদের পরিকল্পনা ছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ির সামনে মিছিলের। সেই অনুযায়ী কালীঘাটের দিকে যাত্রা শুরু করেন তাঁরা। কিন্তু হাজরা মোড়ে পুলিশের বাধায় আটকে যায় মিছিল, শুরু হয় ধস্তাধস্তি, এবং কিছু আন্দোলনকারীকে পুলিশ আটকও করে।

এই আন্দোলনের পেছনে রয়েছে হাজার হাজার ‘অযোগ্য’ তকমা পাওয়া প্রার্থীর হতাশা আর ক্ষোভ। যদিও রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘দাগি’ নন এমন ১৭,২০৬ জনের একটি নতুন তালিকা তৈরি হয়েছে, যাঁদের নাম সুপ্রিম কোর্টেও জমা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ওই তালিকা থেকে আবার বাদ গিয়েছে আরও ১,৮০৩ জন।

এসএসসি সূত্র জানায়, এই বাদ পড়াদের ওএমআর শিটসহ নানা জায়গায় সমস্যা রয়েছে, তাই তাঁদের ‘যোগ্য’ বলা যাচ্ছে না। এখন মোট ১৫,৪০৩ জনকে ‘যোগ্য’ হিসেবে গণ্য করা হয়েছে এবং তাঁদের আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত স্কুলে যাওয়ার এবং বেতন পাওয়ার অনুমতি রয়েছে।

তবে যাঁরা বাদ পড়েছেন, তাঁদের প্রশ্ন—“এই ‘অযোগ্যতা’ কাদের ভুলে? যদি প্রক্রিয়াতেই গলদ থাকে, তাহলে তার দায় পড়ছে কেন আমাদের কাঁধে?”

চাকরি হারিয়ে পথে নেমে যাওয়া এই শিক্ষক-শিক্ষিকাদের চোখে এখন একটাই আশার আলো—বিচার, আর তা যদি না আসে, আন্দোলন চলবেই।

বিএসএফ কর্তাদের আশ্বাসেও থেমে নেই উৎকণ্ঠা, সোমবার পঞ্জাব যাচ্ছেন পূর্ণমের স্ত্রী

Read more

Local News