Monday, December 1, 2025

চুরি যাওয়া মালপত্র বাংলাদেশে পাচার! জলঙ্গিতে ধৃত তিন অভিযুক্ত

Share

চুরি যাওয়া মালপত্র বাংলাদেশে পাচার!

মুর্শিদাবাদের জলঙ্গি এলাকা আবারও উঠে এলো চোরাচালান চক্রের কেন্দ্রে। এক চাঞ্চল্যকর ঘটনায় চুরি যাওয়া বৈদ্যুতিন সামগ্রী বাংলাদেশে পাচারের অভিযোগে তিনজনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। এই ঘটনায় শুধু সীমান্তবর্তী এলাকায় নিরাপত্তার ফাঁকই নয়, উঠে এসেছে একটি সুপরিকল্পিত চোরাচালান চক্রের ইঙ্গিতও।

কীভাবে ফাঁস হল চক্র?

জানা গিয়েছে, সম্প্রতি জলঙ্গির একটি গ্রামে পুলিশ তল্লাশির সময় একটি বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় বেশ কিছু মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ, ট্যাব, রাউটার ও অন্যান্য দামি ইলেকট্রনিক সামগ্রী। এই সামগ্রীগুলো বেশিরভাগই নতুন এবং এর কোনও বৈধ ক্রয়রসিদ ছিল না। সন্দেহ হওয়ায় পুলিশ তিনজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। তখনই বেরিয়ে আসে আসল চিত্র।

ধৃতদের পরিচয় ও কাজের ধরন

ধৃত তিনজনই স্থানীয় বাসিন্দা। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, তাঁরা দীর্ঘদিন ধরে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জায়গা থেকে চুরি হওয়া বা চোরাই বাজার থেকে কেনা মোবাইল, ল্যাপটপসহ অন্যান্য সামগ্রী সংগ্রহ করত। এরপর সেইসব সামগ্রী সীমান্ত পেরিয়ে পাচার করা হত বাংলাদেশে।

তদন্তে উঠে এসেছে, চক্রটি এতটাই সক্রিয় ছিল যে, চোরাই মাল পাচারের জন্য তারা নির্দিষ্ট ‘কন্ট্রাক্টর’ বা দালালের সাহায্য নিত। এই দালালরাই সীমান্ত পারাপার ও পুলিশি নজর এড়িয়ে মাল পাঠানোর ব্যবস্থা করত।

পুলিশের বক্তব্য

জলঙ্গি থানার এক আধিকারিক জানিয়েছেন, “গোপন সূত্রে খবর পেয়ে আমরা অভিযান চালাই। চুরি যাওয়া জিনিসপত্র উদ্ধারের পাশাপাশি তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদে আরও তথ্য উঠে আসছে। আমরা পাচারের সম্পূর্ণ নেটওয়ার্ক ভাঙার চেষ্টা করছি।”

পুলিশ আরও জানিয়েছে, বাংলাদেশে এই ধরনের ইলেকট্রনিক সামগ্রীর চাহিদা বেশি। তাই সীমান্ত লাগোয়া এলাকাগুলিকে বেছে নিয়েছে এই চক্র। তদন্তকারীরা সন্দেহ করছেন, এই চক্রে আরও অনেকে জড়িত থাকতে পারে, এমনকি আন্তর্জাতিক স্তরেও এর যোগসূত্র থাকতে পারে।

কেন বারবার জলঙ্গি?

জলঙ্গি এলাকার ভৌগোলিক অবস্থান ও আন্তর্জাতিক সীমান্ত সংলগ্ন হওয়ায় এটি পাচারকারীদের কাছে দীর্ঘদিন ধরেই সুবিধাজনক এলাকা হিসেবে বিবেচিত। আগেও এই এলাকা থেকে গরু, মাদক, সোনার পাচারের অভিযোগ উঠেছে। এখন সেই তালিকায় যুক্ত হল ইলেকট্রনিক সামগ্রী।

স্থানীয়দের উদ্বেগ

স্থানীয়দের মধ্যে এই ঘটনার পর থেকেই উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে। অনেকেই বলছেন, এলাকার তরুণদের একাংশ এই ধরনের বেআইনি কাজের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে। প্রশাসনের উচিত দ্রুত এই ধরনের চক্র ভেঙে ফেলা এবং এলাকার যুবকদের সচেতন করা।

উপসংহার

চুরি যাওয়া জিনিসপত্র পাচার করে সীমান্ত পেরোনো ঘটনা নতুন নয়। কিন্তু ইলেকট্রনিক সামগ্রীর মতো দামি ও সহজে বহনযোগ্য জিনিসের চোরাচালান একটি বড় সমস্যা হয়ে উঠছে। এই ঘটনায় প্রশাসনের সজাগ ভূমিকা প্রশংসনীয় হলেও, প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে—এই ধরনের চক্র কি কেবল তিনজনকে ধরেই থেমে যাবে? নাকি আসল মাথাদেরও গ্রেফতার করা সম্ভব হবে? উত্তর দেবে তদন্ত।

বিশ্বে তেলের দাম আকাশছোঁয়া, রাশিয়া থেকে কিনে ভারতে স্থিতিশীলতা!

Read more

Local News