Tuesday, February 11, 2025

চিনের নজরে আমেরিকার ‘নিঃশব্দ ঘাতক’, বদলে যাবে সামরিক শক্তির সমীকরণ?

Share

চিনের নজরে আমেরিকা

এত দিন পর্যন্ত মার্কিন পরমাণু শক্তিচালিত ‘স্টেলথ’ ডুবোজাহাজ গুলিকে বিশ্বের অন্যতম ‘নিঃশব্দ ঘাতক’ বলে মনে করা হতো। কিন্তু এবার সেই ধারণাকে বদলে দিতে পারে চিনের নতুন আবিষ্কার। বেজিঙের বিজ্ঞানীদের দাবি, তাঁরা এমন একটি প্রযুক্তি তৈরি করেছেন, যার মাধ্যমে সমুদ্রের গভীরে থাকা সবচেয়ে নিখুঁত ও নিঃশব্দ মার্কিন ডুবোজাহাজগুলিকেও শনাক্ত করা সম্ভব। এই খবর প্রকাশ্যে আসতেই ওয়াশিংটনে নড়েচড়ে বসেছে প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা।


🔎 কীভাবে কাজ করবে চিনের নতুন প্রযুক্তি?

চিনের জিয়ান প্রদেশের নর্থওয়েস্টার্ন পলিটেকনিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (NPU) গবেষকদের মতে, সমুদ্রের গভীরে ডুবোজাহাজ চলাচলের সময় চৌম্বকীয় ক্ষেত্র তৈরি হয়। এই ক্ষেত্রকে বিশ্লেষণ করেই মার্কিন ডুবোজাহাজগুলিকে চিহ্নিত করা সম্ভব বলে দাবি করেছেন বিজ্ঞানীরা।

📌 ‘কেলভিন ওয়েক মডেল’ নামে একটি বিশেষ প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে, যা জলের নিচে ভি-আকৃতির চৌম্বকীয় তরঙ্গ শনাক্ত করতে সক্ষম।
📌 সুপার কম্পিউটার ব্যবহার করে ডুবোজাহাজের গতি, আকার ও অবস্থান নির্ণয় করা যাবে।
📌 গবেষণায় দেখা গেছে, ‘নিঃশব্দ ঘাতক’ মার্কিন ‘সি-উল্ফ’ ডুবোজাহাজগুলোকেও নির্ভুলভাবে শনাক্ত করা সম্ভব হচ্ছে।

চিনের এই আবিষ্কার সত্যি হলে, বিশ্বের সামরিক শক্তির সমীকরণ বদলে যেতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।


💥 মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগ কেন বাড়ছে?

যদি চিন সত্যিই পরমাণু চালিত মার্কিন ডুবোজাহাজ শনাক্ত করতে সক্ষম হয়, তাহলে তা ওয়াশিংটনের জন্য এক বিরাট বিপদ হয়ে দাঁড়াবে। কারণ,

🔹 ‘সি-উল্ফ’ শ্রেণির মার্কিন ডুবোজাহাজ গুলি সবচেয়ে শক্তিশালী এবং আধুনিক স্টেলথ প্রযুক্তি ব্যবহার করে।
🔹 এগুলি এতটাই নিখুঁত যে, একবার সমুদ্রের নিচে ডুব দিলে সনাক্ত করা প্রায় অসম্ভব ছিল।
🔹 মার্কিন ডুবোজাহাজগুলির প্রধান লক্ষ্য শত্রুর রণতরী ধ্বংস করা, সামরিক ঘাঁটিতে আক্রমণ চালানো এবং গুপ্তচরবৃত্তি করা।

এখন চিন যদি এগুলিকে সহজেই খুঁজে বের করতে পারে, তাহলে আমেরিকার সামরিক কৌশলে বড়সড় পরিবর্তন আনতে হবে।


⚔️ চিন-মার্কিন প্রতিদ্বন্দ্বিতা কি নতুন যুদ্ধের ইঙ্গিত?

ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে সামরিক দখলদারিত্ব নিয়ে বহু দিন ধরেই চিন-আমেরিকার মধ্যে উত্তেজনা চলছে। এই অঞ্চলে মার্কিন ডুবোজাহাজগুলির উপস্থিতি চিনের জন্য মাথাব্যথার কারণ।

📌 ২০২১ সালে দক্ষিণ চিন সাগরে মার্কিন ‘ইউএসএস কানেকটিকাট’ ডুবোজাহাজ ধ্বংস হয়েছিল।
📌 তখন ধারণা করা হয়েছিল, চিনই হয়তো কোনোভাবে সেটিকে সনাক্ত করে ধ্বংস করেছে।
📌 এবার নতুন এই প্রযুক্তি সত্যি হলে, ভবিষ্যতে মার্কিন ডুবোজাহাজগুলো চিনা নৌসেনার আক্রমণের ঝুঁকিতে পড়তে পারে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, চিন-তাইওয়ান সংঘাত হলে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি যুদ্ধে জড়াতে পারে। সেই ক্ষেত্রে চিনের নতুন প্রযুক্তি মার্কিন নৌবাহিনীর জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠবে।


🚀 পরবর্তী পদক্ষেপ কী হতে পারে?

আমেরিকা এখন নতুন প্রতিরক্ষামূলক প্রযুক্তি তৈরি করার দিকে মনোযোগ দেবে।
আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (AI) ব্যবহার করে ডুবোজাহাজের অবস্থান গোপন করার নতুন উপায় বের করার চেষ্টা করবে।
নৌবাহিনীর কৌশলগত পরিবর্তন আনতে পারে, যাতে চিনের নজর এড়ানো সম্ভব হয়।
✅ চিনের দাবি সত্যি হলে, আন্তর্জাতিক সামরিক ভারসাম্যে বড় পরিবর্তন আসতে পারে।

বিশ্বের দুই পরাশক্তির মধ্যে এই প্রযুক্তিগত দ্বন্দ্ব নতুন সামরিক প্রতিযোগিতার ইঙ্গিত দিচ্ছে। এখন দেখার বিষয়, এই লড়াই কতদূর গড়ায় এবং কার প্রযুক্তি শেষ পর্যন্ত জয়ী হয়।

৩০০ কিলোমিটার যানজটে অচল কুম্ভযাত্রা! ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে পুণ্যার্থীরা, বন্ধ রেলস্টেশনও

Read more

Local News