ভারতের সঙ্গে শুল্ক আলোচনায় ট্রাম্প!
মাত্র চার দিন হাতে—তবুও সম্ভাবনার জানালাটা এখনও খোলা। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘোষিত শুল্ক নীতির জেরে বিশ্বজুড়ে চাপানউতোরের আবহে, ভারতের জন্য আসতে পারে স্বস্তির খবর। কারণ, ট্রাম্প এখন তিন ‘বন্ধু’ দেশের সঙ্গে আলোচনায় বসেছেন—এদের মধ্যে রয়েছে ভারত, ইজ়রায়েল ও ভিয়েতনাম।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন-এর দাবি অনুযায়ী, এই তিন দেশের সঙ্গে বর্ধিত শুল্ক নিয়ে চলেছে গোপন স্তরের কূটনৈতিক আলোচনা। ট্রাম্প ইতিমধ্যেই জানিয়েছেন, যদি আলোচনায় ইতিবাচক অগ্রগতি হয়, তবে বর্ধিত শুল্ক কমানো বা পুরোপুরি প্রত্যাহার করারও সম্ভাবনা রয়েছে।
ভিয়েতনামের বার্তা: শুল্ক শূন্য করতে প্রস্তুত
এই তিন দেশের মধ্যে সবচেয়ে স্পষ্ট বার্তা এসেছে ভিয়েতনামের দিক থেকে। ট্রাম্প নিজেই জানিয়েছেন, ভিয়েতনামের কমিউনিস্ট পার্টির জেনারেল সেক্রেটারি তো ল্যামের সঙ্গে তাঁর অত্যন্ত ‘ইতিবাচক’ আলোচনা হয়েছে। টো ল্যাম আশ্বাস দিয়েছেন, যদি সমঝোতা হয়, আমেরিকার পণ্যে তারা শুল্ক পুরোপুরি তুলে নেবে। এমন অবস্থানে দাঁড়িয়ে ট্রাম্প তাঁকে ধন্যবাদও জানিয়েছেন এবং ভবিষ্যতে সাক্ষাতের ইঙ্গিত দিয়েছেন।
ভারতের অবস্থান: আলোচনার টেবিলে কি সমঝোতা হবে?
ভারতের ক্ষেত্রেও আলোচনা চলছে, যদিও সরকারিভাবে কিছু প্রকাশ করা হয়নি। ট্রাম্প ভারতের ওপর ২৬ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক বসানোর ঘোষণা করেছেন। এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে ৯ এপ্রিল রাত ১২টা ১ মিনিট থেকে। তবে যদি এই চার দিনের মধ্যেই সমঝোতা হয়, তাহলে এই শুল্ক কার্যকর নাও হতে পারে।
ইজ়রায়েলের ওপর ১৭ শতাংশ এবং ভিয়েতনামের ওপর সর্বোচ্চ ৪৬ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা এসেছে ট্রাম্পের তরফ থেকে। কিন্তু একইসঙ্গে তিনি জানিয়েছিলেন, যে কোনও দেশ যদি আমেরিকার জন্য ‘অভূতপূর্ব কিছু’ করে, তাহলে শুল্ক মকুবের কথাও ভাবা হবে।
প্রতিক্রিয়ায় উত্তপ্ত আন্তর্জাতিক মঞ্চ
ট্রাম্পের শুল্কনীতির জেরে ইতিমধ্যেই বিশ্ব বাজারে অস্থিরতা ছড়িয়েছে। চিন দ্রুত পাল্টা পদক্ষেপ করে তাদের পণ্যের ওপর ঘোষিত ৩৪ শতাংশ শুল্কের জবাবে, আমেরিকান পণ্যের ওপর সমান পরিমাণ বাড়তি শুল্ক বসিয়েছে। শুধু তাই নয়, চিন ১১টি মার্কিন কোম্পানির ব্যবসাও বন্ধ করে দিয়েছে তাদের দেশে। বন্ধ হয়েছে গুরুত্বপূর্ণ খনিজ রফতানি। কানাডাও আমেরিকান গাড়ির ওপর নতুন শুল্ক ঘোষণা করেছে।
এই প্রেক্ষাপটে ভারতের মতো দেশের জন্য ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনার ফল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। সমঝোতা হলে দেশের শিল্পপতিরা কিছুটা স্বস্তি পাবেন, শুল্কের অতিরিক্ত বোঝা পড়বে না আমদানি নির্ভর পণ্যে। আর যদি সমঝোতা না হয়, তাহলে তার সরাসরি প্রভাব পড়বে ভারতের রপ্তানি খাতে।
চার দিনের হিসাব-নিকাশ
সময় কম, চাপে টান। হাতে মাত্র চার দিন। এই সময়ের মধ্যেই সমঝোতার সূত্র পাকাতে পারলে ট্রাম্পের শুল্কনীতি নিয়ে তৈরি হওয়া অনিশ্চয়তা কিছুটা হলেও কাটবে। আর যদি না-পারে, তাহলে বিশ্ব অর্থনীতিতে আবার বড়সড় ধাক্কার আশঙ্কা থাকছেই।
এই দড়ি টানাটানির শেষে কোন পথে হাঁটবে ভারত ও ট্রাম্প প্রশাসন—সেদিকে এখন তাকিয়ে বিশ্ব।
ট্রাম্পের ‘পাল্টা শুল্ক’ ঘোষণার অপেক্ষায় বিশ্ব, ভারতের চিন্তা বাড়ছে!