চাকরিহারাদের শেষ আশ্রয় সুপ্রিম কোর্ট!
পশ্চিমবঙ্গে ২৬ হাজার চাকরি বাতিলের ধাক্কা যেন বিদ্যুৎস্পৃষ্ট করে দিয়েছে হাজার হাজার পরিবারকে। কেউ সদ্য চাকরিতে যোগ দিয়েছেন, কেউ বছরের পর বছর শিক্ষকতা করে আসছিলেন—হঠাৎ এক রায়ে যেন সব শেষ! তবে এবার সেই রায় পুনর্বিবেচনার আর্জি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দরজায় দাঁড়াল রাজ্য সরকার ও স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)।
সুপ্রিম কোর্ট সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামী ৮ মে প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্না ও বিচারপতি সঞ্জয় কুমারের বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হতে পারে। ঠিক এক মাস আগে, ৩ এপ্রিল, একই বেঞ্চ এসএসসির ২০১৬ সালের পুরো নিয়োগপ্যানেল বাতিল করে দেয়।
⚖️ কেন বাতিল হয়েছিল ২৬ হাজার চাকরি?
এসএসসির নিয়োগপ্রক্রিয়ায় একাধিক দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগে সুপ্রিম কোর্ট ওই প্যানেল থেকে ২৫,৭৩৫ জনের নিয়োগ বাতিল করে দেয়। আদালতের পর্যবেক্ষণে উঠে আসে—যোগ্য ও অযোগ্য প্রার্থীদের আলাদা করে চিহ্নিত করা সম্ভব হয়নি, কারণ তথ্য ছিল অসম্পূর্ণ। ফলে ‘পুরো প্যানেল’ বাতিল করা ছাড়া উপায় ছিল না।
রায়ে জানানো হয়, দাগি প্রার্থীদের বেতন ফেরত দিতে হবে এবং নতুন করে স্বচ্ছ নিয়োগ শুরু করতে হবে। যদিও রায়ের কার্যকারিতা এখনও শুরু হয়নি।
📝 রায় বদলের আর্জি রাজ্য ও এসএসসির
এর আগে এসএসসি ইঙ্গিত দিয়েছিল, যাঁরা যোগ্য তাঁদের চাকরি ফেরাতে চায় তারা। সেই অনুযায়ীই এবার তারা রিভিউ পিটিশন দায়ের করেছে। রাজ্যও একই পথে হেঁটেছে। তাদের বক্তব্য, এত সংখ্যক শিক্ষক চাকরি হারালে রাজ্যের শিক্ষাব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে পড়বে, বিশেষত মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরে।
এর আগেই রাজ্যের মধ্যশিক্ষা পর্ষদের একটি আবেদন শুনে শীর্ষ আদালত জানায়, দাগি প্রার্থীদের বাদ দিয়ে নবম-দশম ও একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষকরা ডিসেম্বর ২০২৫ পর্যন্ত ক্লাস নিতে পারবেন। তবে শর্ত থাকে, ৩১ মে’র মধ্যে নতুন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে হবে।
📌 আইনজীবীদের মতামত
চাকরিহারাদের পক্ষে আইনজীবী ফিরদৌস শামিম বলেন, “এই রায় বদলানোর সম্ভাবনা খুবই কম। কারণ আদালতের রায় ছিল তথ্যের অভাব এবং অনিয়মের প্রমাণের উপর ভিত্তি করে। এতদিন পর কেন আবার রিভিউ পিটিশন, সেটাও প্রশ্নের বিষয়।”
তিনি আরও বলেন, “এর আগে যখন মধ্যশিক্ষা পর্ষদ আবেদন করেছিল, তখন আদালত শর্তসাপেক্ষে কিছুটা ছাড় দিয়েছিল। কিন্তু এখন পূর্ণ রায় বদলানো আদৌ সম্ভব কিনা, তা নিয়েই সংশয় রয়েছে।”
👩🏫 চাকরিহারাদের দুশ্চিন্তা তুঙ্গে
রাজ্যের স্কুলগুলিতে অনেক জায়গাতেই এখন বিষয়ভিত্তিক শিক্ষক শূন্য হয়ে পড়েছে। যারা চাকরি হারিয়েছেন, তাঁদের জীবনে অনিশ্চয়তা ছায়ার মতো। কেউ ঋণ নিয়ে সংসার চালিয়েছেন, কেউ দূর-দূরান্তে পোস্টিং নিয়ে জীবন সাজিয়েছিলেন—এখন তাঁদের সামনে শুধুই অন্ধকার।
শেষ কথা:
৮ মে’র শুনানিতেই নির্ভর করছে ২৬ হাজার চাকরিপ্রার্থীর ভবিষ্যৎ। রাজ্য ও এসএসসির শেষ চেষ্টা—এই রায় পাল্টানো। তবে সুপ্রিম কোর্ট কি তাঁদের এই আর্জি শুনবে? নাকি আগের রায়েই পড়বে সিলমোহর? সেই উত্তর পেতে অধীর আগ্রহে দিন গুনছেন হাজার হাজার চাকরিহারা।
চোট উপেক্ষা করে সোনা! পুণেতে ঋতু ও প্রতিষ্ঠার জিমন্যাস্টিকে স্বর্ণোজ্জ্বল লড়াই

