Saturday, February 22, 2025

চাকরির টোপ দিয়ে হাওড়ার যুবককে অপহরণ, পুলিশ উদ্ধার করল, ধৃত ৩

Share

হাওড়ার যুবককে অপহরণ

হাওড়ার লিলুয়া থানার জগদীশপুর দেবীপাড়ার বাসিন্দা রবিশঙ্কর কেশরীর সাথে ঘটে যাওয়া এক ভীতিকর অপহরণের ঘটনায় পুলিশ সফলভাবে তাকে উদ্ধার করেছে এবং অভিযুক্ত ৩ দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করেছে। এই ঘটনায় পুলিশ জানিয়েছে, সমাজমাধ্যমে চাকরির টোপ দিয়ে যুবককে অপহরণ করা হয় এবং পরে তার পরিবারের কাছে মুক্তিপণ দাবি করা হয়। তবে, শেষমেশ পুলিশের তৎপরতায় অপহৃত যুবক শারীরিকভাবে সুস্থ অবস্থায় উদ্ধার হন।

ঘটনার শুরু হয় যখন রবিশঙ্কর কেশী একটি চাকরি সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি দেখে সমাজমাধ্যমে যোগাযোগ করেন। ৩৫ বছর বয়সী রবিশঙ্করকে একটি কোম্পানির সুপারভাইজ়ার পদে চাকরি দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয় এবং তাকে মাসিক ১৭,২০০ টাকা বেতন দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। তিনি চাকরির আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে সোমবার দুপুর ৩টে নাগাদ লিলুয়ার ভট্টনগর বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছান।

কিন্তু, সেখানে গিয়ে রবিশঙ্কর বুঝতে পারেন যে, এটি ছিল একটি বড় ধরনের ফাঁদ। তার সামনে অস্ত্র নিয়ে কিছু দুষ্কৃতী এসে তাকে জোর করে অপহরণ করে। এরপর তাকে সূর্যনগরের একটি বাড়িতে নিয়ে গিয়ে আটকে রাখা হয়। অপহরণকারীরা রবিশঙ্করের ফোন থেকে তার স্ত্রীর কাছে ফোন করে মুক্তিপণের জন্য ৪০ হাজার টাকা দাবি করেন। তারা হুমকি দেন যে, টাকা না দিলে রবিশঙ্করকে খুন করে ফেলা হবে।

রবিশঙ্করের পরিবার, যারা নিম্নবিত্ত পরিবারের সদস্য, খুব দ্রুত গয়না বন্ধক রেখে ২০ হাজার টাকা জোগাড় করে অপহরণকারীদের একটি মোবাইল নম্বরে ইউপিআই (UPI) মাধ্যমে পাঠিয়ে দেন। কিন্তু টাকা পাওয়ার পরেও রবিশঙ্করের ওপর অত্যাচার চলতে থাকে। অভিযোগ, তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হয় এবং তাকে বিবস্ত্র করে ছবি তোলা হয়। এরপর অপহরণকারীরা হুমকি দেয়, যদি পুলিশে অভিযোগ করা হয়, তবে ওই বিবস্ত্র ছবি সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হবে।

তবে, রবিশঙ্করের পরিবার নিরাশ হয়নি এবং পরে তারা লিলুয়া থানার আউটপোস্টে গিয়ে অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ পাওয়ার পরেই পুলিশ দ্রুত কাজ শুরু করে এবং রাতেই অপহরণকারীদের মোবাইল ফোন ট্র্যাক করে তাদের অবস্থান শনাক্ত করে। পুলিশ জানতে পারে, ভট্টনগর থেকে তিন দুষ্কৃতী পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। এরপর পুলিশ অভিযান চালিয়ে তিন অভিযুক্তকে আটক করে এবং রবিশঙ্করকে উদ্ধার করে।

হাওড়া সিটি পুলিশের যুগ্ম কমিশনার, কে শবরীরাজ কুমার, বলেন, “ধৃতদের বিরুদ্ধে অপহরণসহ একাধিক ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। তদন্তের স্বার্থে তাদের আরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। মুক্তিপণ হিসেবে যে টাকা নেওয়া হয়েছিল, সেগুলোও উদ্ধার করা হয়েছে। মঙ্গলবারই ধৃতদের হাওড়া আদালতে তোলা হয়েছে।”

এই ঘটনার পর, পুলিশের তৎপরতায় অপরাধীদের গ্রেফতার ও অপহৃত যুবককে উদ্ধার করা হয়েছে, তবে তা সত্ত্বেও এই ঘটনা সমাজের জন্য একটি বড় উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। সমাজমাধ্যমের মাধ্যমে চাকরি সংক্রান্ত বিজ্ঞাপন দেওয়ার নামে এ ধরনের অপরাধে সাধারণ মানুষ আরও সজাগ ও সতর্ক হতে হবে।

Read more

Local News