‘গোমাংস খেয়ে রাম সাজছেন!’ রণবীর কপূরকে ঘিরে বিতর্ক!
রণবীর কপূরকে রামের চরিত্রে অভিনয় করতে দেখে বেজায় চটেছেন দর্শকের একাংশ। তাঁদের দাবি, গোমাংস খাওয়া মানুষ কখনও ভগবান রামের ভূমিকায় অভিনয় করতে পারেন না। পুরনো এক সাক্ষাৎকার ঘিরে ফের বিতর্কের মুখে পড়েছেন বলিউডের জনপ্রিয় এই অভিনেতা। তবে এমন পরিস্থিতিতে রণবীরের পাশে দাঁড়িয়েছেন গায়িকা ও সমাজকর্মী চিন্ময়ী শ্রীপদা। তীব্র সমালোচনার পাল্টা দিয়ে সমাজের দ্বিচারিতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।
বিষয়টির সূচনা এক সমাজমাধ্যম পোস্ট থেকে। সেখানে রণবীর ও সাই পল্লবীর একটি ছবি পোস্ট করে লেখা হয়—“গোমাংস খাদক ভগবান রামের চরিত্রে অভিনয় করছে। বলিউডের যে কী অবস্থা!” এই মন্তব্য মুহূর্তে ভাইরাল হয়ে যায়। প্রসঙ্গত, ২০১১ সালে এক সাক্ষাৎকারে রণবীর নিজেই বলেছিলেন, “আমি পেশোয়ারি খাবার ভালবাসি। পাঁঠার মাংস, পায়া আর গোমাংস আমার খুব প্রিয়। হ্যাঁ, আমি গোমাংস খাই।” দীর্ঘ ১৫ বছর পরেও সেই মন্তব্য যেন ফিরে এসে তাঁকে দংশন করছে।
নতুন ছবিতে রাম চরিত্রে অভিনয়ের জন্য রণবীর কিছু সময় নিরামিষ খাদ্য গ্রহণ করেছিলেন, এক সাক্ষাৎকারে তা-ও জানিয়েছেন। তবুও বিতর্ক থামেনি। সমালোচকেরা বলছেন, শুধুমাত্র গোমাংস খাওয়ার জন্য কেউ রামের চরিত্রে অভিনয় করতে পারেন না—এটা ভক্তির অপমান। অন্যদিকে, অনেকেই বলছেন, অভিনয় একজন শিল্পীর কাজ, তার ব্যক্তিগত খাদ্যাভ্যাসের সঙ্গে ধর্মীয় ভাবনার মেলবন্ধন টানার কোনও মানে হয় না।
এই আবহেই চিন্ময়ী শ্রীপদা লেখেন, “ঈশ্বরের নাম করে কোনও বাবাজি ধর্ষক হতে পারে, আর সে পরে ভোট পাওয়ার জন্য প্যারোলে মুক্তি পায়। এই ভক্তের ভারতবর্ষে কে কী খাচ্ছে, সেটাই সবচেয়ে বড় ইস্যু হয়ে উঠেছে!” তাঁর এই মন্তব্য স্পষ্টতই সমাজের মূল্যবোধ নিয়ে তির্যক ব্যঙ্গ।
রণবীরের পাশে দাঁড়িয়ে তিনি বোঝাতে চেয়েছেন, একজন মানুষের ব্যক্তিগত খাদ্যাভ্যাস বা অতীত মন্তব্যকে ভিত্তি করে ধর্মীয় বা আধ্যাত্মিক চরিত্রে তাঁর অভিনয়কে প্রশ্ন করা অনুচিত। বরং নজর দেওয়া উচিত শিল্পের গুণমান ও অভিনয়ের মানে।
রণবীরের সঙ্গে ছবিতে সীতার চরিত্রে অভিনয় করছেন সাই পল্লবী। লক্ষ্মণের ভূমিকায় রয়েছেন রবি দুবে এবং রাবণের চরিত্রে অভিনয় করছেন দক্ষিণী সুপারস্টার যশ। পরিচালকের দাবি, এই ছবি রামায়ণের গল্পকে আধুনিক চিত্রনাট্যে সাজিয়ে উপস্থাপন করবে, যা ধর্মীয় ভাবনাকে সম্মান জানাবে, কিন্তু সময়োপযোগী দৃষ্টিভঙ্গিতেও প্রশ্ন তুলবে।
এখন দেখার, বিতর্কের আবহে এই ছবি কতটা দর্শক টানতে পারে। তবে রণবীরের প্রতি এমন ব্যক্তিগত আক্রমণ নিঃসন্দেহে প্রশ্ন তোলে—একজন শিল্পী কি কখনও তাঁর পছন্দের জন্য বিচারযোগ্য? নাকি আমরা আজও শিল্পের মূল্যায়নের বদলে ব্যক্তি বিশ্বাস ও অভ্যাস নিয়েই বেশি ব্যস্ত?
গলওয়ান উপত্যকায় রক্তাক্ত সলমন খান! ভাইজানের নতুন ছবির পেছনে রয়েছে ভারতের সাহসী ইতিহাস

