সোনু নিগমের মন্তব্যে ক্ষুব্ধ কর্ণাটক!
কন্নড় ভাষায় গান গাওয়ার অনুরোধ, আর সেই অনুরোধকে একেবারে সন্ত্রাসের সঙ্গে তুলনা! আর তাতেই চরমে উঠেছে বিতর্ক। বলিউড গায়ক সোনু নিগমের একটি মন্তব্য নিয়ে উত্তাল এখন কর্ণাটকের কন্নড় সমাজ। অভিযোগ উঠেছে, তিনি কন্নড়ভাষীদের অনুভূতিতে আঘাত করেছেন এবং ঘৃণার বাতাবরণ তৈরি করেছেন। ফলস্বরূপ, তাঁর নামে বেঙ্গালুরু থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
কোথা থেকে শুরু?
২৫ এপ্রিল বেঙ্গালুরুর ভার্গো নগরের একটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে সংগীত পরিবেশন করতে এসেছিলেন সোনু নিগম। হাজারো শ্রোতার ভিড়ে এক যুবক বারবার কন্নড় ভাষায় গান গাওয়ার জন্য অনুরোধ জানাতে থাকেন গায়কের কাছে। প্রথমে সোনু বিষয়টিকে হালকা হাসি-ঠাট্টার ছলেই সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু সেই যুবক নাকি ক্রমাগত অনুরোধ জানিয়ে যাচ্ছিলেন, এমনকি কিছুটা উদ্ধত ভঙ্গিতে।
এই অবস্থায় বিরক্ত হয়ে সোনু নিগম মঞ্চেই বলে ওঠেন, “পহেলগাঁও-তেও ঠিক এ ভাবেই জোর করে কিছু চাপিয়ে দেওয়া হয়েছিল। ভাবুন, কাকে কী বলছেন!” এই মন্তব্যেই চক্ষু চড়কগাছ কন্নড় সমাজের।
কে কী বলছে?
সোনুর কথায় ক্ষুব্ধ কন্নড়পন্থী সংগঠন ‘কর্ণাটক রক্ষা বেদিকে’। তাঁদের দাবি, একজন শ্রোতার কাছ থেকে গান চাওয়ার মতো সহজ অনুরোধকে সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে তুলনা করে কন্নড় ভাষাভাষী মানুষদের অপমান করা হয়েছে। শুক্রবার ওই সংগঠন বেঙ্গালুরু শহর জেলা ইউনিট পুলিশের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করে, যেখানে সোনুর বিরুদ্ধে ঘৃণা ছড়ানো এবং জাতিগত বিদ্বেষ ছড়ানোর অভিযোগ তোলা হয়।
কেন এত ক্ষোভ?
কন্নড় ভাষা কর্ণাটকের গর্ব, আর এই ভাষা নিয়ে সংবেদনশীলতা ঐ রাজ্যের মানুষের মধ্যে প্রবল। সেখানে একটি গানের অনুষ্ঠানে একজন জনপ্রিয় গায়ক, যিনি বহু বছর ধরে দক্ষিণ ভারতে পারফর্ম করে আসছেন, এমন মন্তব্য করলে ক্ষোভ তো তৈরি হবেই। স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, সোনু চাইলে সৌজন্যতার সঙ্গে বিষয়টি এড়িয়ে যেতে পারতেন। কিন্তু পহেলগাঁও-এর মতো স্পর্শকাতর ঘটনা টেনে এনে পুরো প্রসঙ্গটিকে অযথা বিতর্কিত করে তুলেছেন তিনি।
সোনুর অবস্থান কী?
সোনু নিগম এখনো পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে এই ঘটনা নিয়ে কোনও বিবৃতি দেননি। তবে সূত্রের খবর, তিনি নিজেকে আক্রমণের শিকার বলেই মনে করছেন। তাঁর দাবি, মঞ্চে গান গাওয়ার সময় এক শ্রোতার অশোভন আচরণ তাঁকে অপ্রস্তুত করে দেয়। কিন্তু কন্নড় সমাজের চোখে, এটি একজন বহিরাগত শিল্পীর ভাষাগত অসহিষ্ণুতা এবং অসম্মানের পরিচায়ক।
বিতর্কের ইতি কোথায়?
এই ঘটনার পর এখন নজর প্রশাসনের দিকেও। পুলিশ সূত্রে খবর, অভিযোগ গ্রহণ করা হয়েছে এবং বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে এখন প্রশ্ন—একজন গায়কের মুখনিঃসৃত একটি মন্তব্য আদৌ আইনি পর্যায়ে পৌঁছাবে, না কি এটি ধামাচাপা পড়ে যাবে আরেকটি বিতর্কের গা-সওয়া শব্দ হয়ে?
ভাষা নিয়ে আবেগ থাকতেই পারে, কিন্তু সেই আবেগ যদি শালীনতার সীমা না লঙ্ঘন করে, তবেই তা গৌরবের চিহ্ন। আর শিল্পীদেরও উচিত, তাঁরা যেন সেই সংবেদনশীলতার মর্যাদা বজায় রাখেন—মঞ্চে হোক বা মাইক্রোফোনে।
কাশ্মীরে টানা ৮ দিন সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘন, পাঁচ জায়গায় গুলি পাক সেনার! পাল্টা জবাব দিল ভারতীয় সেনাও

