গাড়ির প্রদর্শনীতে নজর কাড়ল শাস্ত্রীর ৩৯ বছরের পুরনো সেই অডি
গত চার দশক ধরে রবি শাস্ত্রী একটি গাড়িকে সযত্নে ধরে রেখেছেন, যে গাড়িটি তাঁর জীবন এবং ক্রীড়াজীবনের সঙ্গে গভীরভাবে সম্পর্কিত। এই গাড়িটি হল তাঁর প্রিয় ‘অডি ১০০’, যা ৩৯ বছর ধরে তাঁর গ্যারাজে স্থান পেয়েছে। গত কয়েক বছরে অনেক গাড়ি তাঁর গ্যারাজে এসেছে এবং গিয়েছে, কিন্তু এই গাড়ি কখনও বিদায় নেয়নি। শাস্ত্রীর কাছে এটি শুধুমাত্র একটি বাহন নয়, এটি একটি স্মৃতি, একটি অর্জন।
মুম্বইয়ে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত একটি পুরনো গাড়ির প্রদর্শনীতে শাস্ত্রী তার প্রিয় ‘অডি ১০০’ নিয়ে হাজির হন এবং সবার নজর কেড়ে নেন। এই গাড়িটির প্রতি তাঁর ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা স্পষ্টভাবে ফুটে ওঠে। ১৯৮৫ সালে বেনসন অ্যান্ড হেজেস ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপে সেরা ক্রিকেটারের পুরস্কার হিসেবে শাস্ত্রী এই গাড়িটি পেয়েছিলেন। সেই সময় তাঁর হাতে উঠেছিল সেরা ক্রিকেটারের খেতাব, যখন তিনি অস্ট্রেলিয়ায় ১৮৫ রান করেছিলেন এবং ৮ উইকেটও নিয়েছিলেন। ফাইনালে তার ব্যাট থেকে এসেছিল ৬৩ রানের একটি গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস, এবং একটি উইকেটও নিয়েছিলেন তিনি। এই অবিস্মরণীয় সাফল্যের স্মৃতিস্বরূপ পেয়েছিলেন ‘অডি ১০০’।
শাস্ত্রী নিজে কখনও এই গাড়ি ছাড়েননি, কারণ এটি তাঁর জন্য শুধুমাত্র একটি কেনা গাড়ি নয়, বরং একটি অর্জন, একটি গর্ব। তিনি জানালেন, “এটি আমার প্রিয় গাড়ি, কেননা এটি আমার অর্জিত। এই গাড়ির প্রতি আমার ভালোবাসা অক্ষুণ্ণ।” মুম্বইয়ে গাড়ি প্রদর্শনীতে গাড়িটির প্রতি তাঁর অগাধ ভালোবাসা আবারও প্রকাশিত হয়, যখন প্রায় ২৫ বছর পর তিনি নিজে গাড়িটি চালান।
এই পুরনো গাড়িটি আজও সবার নজর কাড়ে, এবং শাস্ত্রী নিজে যখন এটি চালাচ্ছিলেন, তখন সেখানে উপস্থিত সবাই মুগ্ধ হয়ে যান। শাস্ত্রী তার অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে সমাজমাধ্যমে একটি পোস্ট করেন, যেখানে তিনি লেখেন, “আমার বাচ্চা ২৫ বছর পর! রেমন্ড অটো ফেস্টে গাড়িটা চালাতে পেরে রোমাঞ্চিত লাগছে। ভারতের পুরনো রত্নগুলোকে এভাবে প্রদর্শনের সুযোগ করে দেওয়ার জন্য গৌতম সিঙ্ঘানিয়াকে ধন্যবাদ। অবিশ্বাস্য উদ্যোগ। প্রায় ৪০ বছর আগে ভারত যখন চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল, তখনকার মতোই উজ্জ্বল দেখাচ্ছে গাড়িটা।”
শাস্ত্রীর এই পুরনো গাড়িটির প্রতি অদম্য ভালোবাসা এবং তার স্মৃতিচারণা শুধু একটি পুরনো গাড়ির গল্প নয়, বরং ভারতীয় ক্রিকেটের একটি অংশ, একটি যুগের প্রতীক। অডি ১০০ শুধুমাত্র একটি গাড়ি নয়, এটি ভারতীয় ক্রিকেটের এক মহত্বপূর্ণ সময়ের স্মৃতি বহন করে। শাস্ত্রী তার এই গাড়িটির প্রতি যে শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসা দেখিয়েছেন, তা সত্যিই প্রমাণ করে যে তিনি শুধু ক্রিকেটের কিংবদন্তি নন, বরং তিনি একজন সংগ্রামী এবং স্মৃতি রক্ষকও।
