গাজায় সাংবাদিক হত্যাকাণ্ডে নেতানিয়াহুর দুঃখপ্রকাশ!
দক্ষিণ গাজার নাসের হাসপাতালে সোমবার দুপুরে ইজরায়েলি সেনার দুটি হামলায় অন্তত ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের মধ্যে রয়েছেন ছয়জন সাংবাদিক। আন্তর্জাতিক মহলের তীব্র সমালোচনার মুখে মঙ্গলবার ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু প্রথমবারের মতো প্রকাশ্যে দুঃখপ্রকাশ করেছেন। তিনি সামাজিক মাধ্যমে লিখেছেন, ‘‘নাসের হাসপাতালের ঘটনায় ইজরায়েল গভীরভাবে দুঃখিত। সাংবাদিক, স্বাস্থ্যকর্মী এবং সাধারণ মানুষের প্রাণের গুরুত্ব ইজরায়েল জানে।’’ পাশাপাশি তিনি জানান, এই হামলার ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে এবং যুদ্ধ সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধে নয়, বরং হামাসের বিরুদ্ধে।
নেতানিয়াহুর এই বক্তব্যকে অনেকেই আন্তর্জাতিক চাপ মোকাবিলার রাজনৈতিক পদক্ষেপ হিসেবে দেখছেন। এর আগে ১০ আগস্ট গাজা সিটির আল-শিফা হাসপাতালে ইজরায়েলি সেনার হামলায় আল জাজিরার পাঁচ সাংবাদিক নিহত হয়েছিলেন। দুই সপ্তাহের মধ্যেই ফের সাংবাদিক হত্যার ঘটনায় আন্তর্জাতিক নিন্দার ঝড় বইছে। গত দুই বছরে গাজায় সাংবাদিক নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ২৪৫ জনে।
এই হামলার প্রেক্ষিতে ইজরায়েলের অভ্যন্তরেও পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। নেতানিয়াহুর সরকারের বিরুদ্ধে জেরুসালেম ও তেল আভিভে শুরু হয়েছে ব্যাপক বিক্ষোভ। বন্দি ইজরায়েলিদের পরিবার এবং যুদ্ধবিরোধী সংগঠনগুলো মঙ্গলবার সারাদিনব্যাপী বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে। তেল আভিভে আয়ালন হাইওয়ে অবরোধ করে রাখা হয়েছে, পাশাপাশি হস্টেজেস অ্যান্ড মিসিং ফ্যামিলিস ফোরামের উদ্যোগে সাভিডোর সেন্ট্রাল স্টেশনে বিশাল সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে। বিক্ষোভকারীরা যুদ্ধবিরতি এবং বন্দিদের নিরাপদ প্রত্যাবর্তনের দাবি জানাচ্ছেন।
গাজায় নিহত সাংবাদিকদের মধ্যে রয়েছেন রয়টার্সের ফটো সাংবাদিক হোসাম আল-মাসরি, আল জাজিরার চিত্র সাংবাদিক মহম্মদ সালামা, ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক মারিয়ম আবু দাকা এবং এনবিসি নেটওয়ার্কের সাংবাদিক মোয়াজ আবু তাহা। তাদের মৃত্যু শুধু সংবাদমাধ্যম নয়, মানবাধিকার সংস্থাগুলোকেও স্তম্ভিত করেছে। বিশ্বজুড়ে সাংবাদিক নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ আরও গভীর হয়েছে।
নেতানিয়াহু যদিও হামাসকে নির্মূল করার প্রতিশ্রুতি বারবার দিয়েছেন, তবে বন্দিদের নিরাপদে ফিরিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি এখনও পূরণ হয়নি। তার এই দুঃখপ্রকাশ যুদ্ধবিরোধী আন্দোলন প্রশমিত করবে কিনা, তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। ইজরায়েলের অভ্যন্তরে জনমত এখন ক্রমশ যুদ্ধবিরোধী অবস্থানের দিকে ঝুঁকছে, যা নেতানিয়াহুর সরকারের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠছে।
এই ঘটনার পর ইজরায়েল-গাজা সংঘর্ষে নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে। মানবিক সংকট আরও গভীর হচ্ছে গাজায়, যেখানে হাসপাতাল ও সাংবাদিকদের উপর হামলা আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে তীব্র নিন্দিত হচ্ছে। বিশ্বজুড়ে চাপ বাড়ছে যাতে যুদ্ধ থেমে যায় এবং বন্দিদের নিরাপদে ঘরে ফেরানো যায়।
দক্ষিণী স্বাদের অনন্য ভর্তা: এল্লু থুভৈয়াল, গরম ভাতে ঘি মেখে খেতে একেবারে স্বর্গীয়

