গম্ভীরের একচেটিয়া শাসন!
ভারতীয় ক্রিকেটে এখন একটাই নাম সবচেয়ে জোরে উচ্চারিত হচ্ছে—গৌতম গম্ভীর। গত বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর ভারতীয় দলের প্রধান কোচ হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে বদলে গিয়েছে অনেক কিছু। বদলে গিয়েছে ড্রেসিংরুমের পরিবেশ, নিয়ম-কানুন, এমনকি দলের অভ্যন্তরীন সম্পর্কও। আর এই সবকিছুর কেন্দ্রবিন্দুতে আছেন একটাই মানুষ—গম্ভীর। তিনি বুঝিয়ে দিয়েছেন, দলের নেতা কে!
দ্রাবিড় বনাম গম্ভীর: দু’ধরনের নেতৃত্ব
রাহুল দ্রাবিড় ছিলেন সংযত, নিরব এবং সহনশীল। ক্রিকেটারদের ভুলে ঢাল হয়ে দাঁড়াতেন, কখনোই সামনে এসে দোষারোপ করতেন না। অন্যদিকে গম্ভীর ততটাই ঠোঁটকাটা, স্পষ্টবাদী ও কড়া সিদ্ধান্ত নেওয়ায় বিশ্বাসী। কারও ভুল হলে তাঁকে ছেড়ে কথা বলেন না। দলের মধ্যে নিজের কর্তৃত্বের ছাপ রাখতে এক মুহূর্তও পিছপা নন তিনি।
সহকারী কোচদের ছাঁটাই: গম্ভীরের সিদ্ধান্তে সিলমোহর
গম্ভীরের অনুরোধে যাঁরা ভারতীয় দলের সহকারী কোচ হিসেবে আসেন—অভিষেক নায়ার, মর্নি মর্কেল, রায়ান টেন দুশখাতে—তাঁদের মধ্যে প্রথমজনের চাকরি চলে গিয়েছে। একইসঙ্গে বাদ পড়েছেন দীর্ঘদিন ধরে থাকা ফিল্ডিং কোচ টি দিলীপ। তাঁদের ছাঁটাইয়ের মূল কারণ গম্ভীরের অপ্রসন্নতা। বিশেষ করে, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ব্যাটিং ব্যর্থতার পর থেকেই নায়ারের প্রতি তাঁর অসন্তোষ বাড়ছিল।
রোহিতের ছায়া থেকে বেরিয়ে এসেছেন গম্ভীর
নায়ার ও দিলীপ, দু’জনেই রোহিত শর্মার ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত। কিন্তু গম্ভীরের আমলে রোহিতের প্রভাব যে অনেকটাই কমে এসেছে, তা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। ড্রেসিংরুমের তথ্য বাইরে যাওয়াকে কেন্দ্র করে গম্ভীর ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন, আর বোর্ডও বুঝে গেছে—কাকে রাখতে হবে, কাকে নয়।
তারকা সংস্কৃতির অবসান
গম্ভীর কোচ হওয়ার পর থেকেই তারকাদের জন্য আলাদা সুবিধা বন্ধ হয়ে গেছে। আলাদা গাড়ি, ব্যক্তিগত রাঁধুনি বা স্ত্রী-সন্তান নিয়ে বিদেশ সফরের নিয়ম—সব কিছুর উপর কড়াকড়ি বসেছে। দলের সকলকে এক নিয়মে চলতে হবে—এই বার্তা দিয়েছেন গম্ভীর।
রোহিত-গম্ভীর সম্পর্কের শীতলতা
রোহিতের সঙ্গে গম্ভীরের সম্পর্ক খুব একটা মধুর নয়। দ্রাবিড়ের সময়ে রোহিতের যে স্বাধীনতা ছিল, তা এখন আর নেই। এমনকি অস্ট্রেলিয়া সফরের শেষ টেস্টে গম্ভীর ফর্মে না থাকা রোহিতকে একাদশ থেকে বাদ দিতে দ্বিতীয়বার ভাবেননি।
গম্ভীর মানেই শেষ কথা
সঞ্জু স্যামসনের মতো ক্রিকেটাররা এখন নিয়মিত সুযোগ পাচ্ছেন। দল নির্বাচন থেকে মাঠের কৌশল—সবকিছুতেই গম্ভীরের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত। নির্বাচক প্রধান অজিত আগরকরের সঙ্গেও তাঁর দারুণ সমন্বয়। যাঁরা তাঁদের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারছেন না, তাঁদের সরে যেতে হচ্ছে—নায়ার ও দিলীপ সেই তালিকার সাম্প্রতিকতম উদাহরণ।
গত ১০ মাসে গম্ভীর পরিষ্কার করে দিয়েছেন—ভারতীয় ক্রিকেটে তিনিই শেষ কথা। তিনি বস্। তাঁর সময় যত দিন চলবে, দলের রিমোট থাকবে তাঁর হাতেই।
দেশ ছেড়ে কাতারে সংসার? সইফ-করিনার নতুন জীবন শুরু হতে চলেছে!

