গদ্দার মন্তব্যের পর বিপাকে কৌতুকশিল্পী কুণাল
ভারতের কৌতুকশিল্পী কুণাল কামরা আবারও বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে। মহারাষ্ট্রের উপমুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্দেকে ‘গদ্দার’ বলে সম্বোধন করার পর থেকেই একের পর এক হুমকি পাচ্ছেন তিনি। কুণালের ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে জানা গেছে, ইতিমধ্যেই ৫০০-রও বেশি হুমকি ফোন এসেছে তাঁর কাছে। হুমকিদাতারা বারবার বলছেন, “টুকরো টুকরো করে ফেলা হবে!”
কী ঘটেছিল?
সম্প্রতি কুণাল কামরা ‘নয়া ভারত’ নামক এক অনুষ্ঠানে ভারতের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে ব্যঙ্গাত্মক মন্তব্য করেন। একনাথ শিন্দের রাজনৈতিক অবস্থান পরিবর্তন নিয়েও তিনি তীর্যক মন্তব্য করেন। নিজের একটি ভিডিওতে কুণাল জনপ্রিয় হিন্দি গানের সুরে শিন্দের অঙ্গভঙ্গি এবং চেহারা নিয়ে বিদ্রূপ করেন। যদিও সরাসরি শিন্দের নাম নেননি কৌতুকশিল্পী। তবুও ভিডিওটি প্রকাশ্যে আসার পর শিবসেনার (শিন্দে গোষ্ঠী) কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
ভাঙচুর ও মামলা
ক্ষোভ এতটাই চরমে পৌঁছায় যে, শো-এর রেকর্ডিং করা স্টুডিওতে শিবসেনা সমর্থকেরা ভাঙচুর চালান। পাশাপাশি মুম্বই পুলিশের কাছে কুণালের বিরুদ্ধে মানহানির অভিযোগ দায়ের করা হয়। ইতিমধ্যেই পুলিশ তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সমন পাঠিয়েছে। কুণালের আইনজীবীর তরফ থেকে এক সপ্তাহ সময় চাওয়া হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিক্রিয়া
এ প্রসঙ্গে মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফডণবীশ বলেন, “এটা কোনও হাস্যরস নয়। জননেতাদের এভাবে অপমান করা মেনে নেওয়া যাবে না। কুণালের ক্ষমা চাওয়া উচিত। না হলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
কুণালের অবস্থান
তবে সমস্ত হুমকি ও আইনি ঝামেলার মুখেও নিজের অবস্থানে অনড় রয়েছেন কুণাল। তিনি সাফ জানিয়েছেন, ক্ষমা চাওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। তাঁর কথায়, “আমি আদালতের নির্দেশ মেনে চলব, কিন্তু ক্ষমা চাইব না। ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ সমাজের প্রতিচ্ছবি তুলে ধরে এবং আমি সেই পথেই থাকব।”
হুমকির প্রতিক্রিয়া
কৌতুকশিল্পীর ঘনিষ্ঠদের মতে, এই মুহূর্তে কুণালের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ বেড়েছে। তাঁর পরিবার ও বন্ধুবান্ধবরা তাঁকে নিরাপত্তা বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন। তবে কুণাল এখনই জনসমক্ষে কথা বলবেন কি না, সে বিষয়ে নিশ্চিত নন।
সমাপ্তি
এই ঘটনার মধ্য দিয়ে ভারতে বাকস্বাধীনতা ও রাজনৈতিক ব্যঙ্গ-বিদ্রুপের সীমা নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। কুণাল কামরার এই সাহসী অবস্থান তাঁর সমর্থকদের মধ্যে প্রশংসা কুড়িয়েছে, যদিও রাজনৈতিক মহলে তা তীব্র প্রতিক্রিয়ার জন্ম দিয়েছে। সামনের দিনগুলোতে এই বিতর্ক কোন পথে এগোয়, সেটাই এখন দেখার বিষয়।