খেলতে খেলতে মাঠেই হৃদরোগে
ক্রিকেট মাঠে এক মর্মান্তিক ঘটনা ঘটল, যখন ৩৫ বছর বয়সি ক্রিকেটার ইমরান পটেল মাঠেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু বরণ করলেন। পুণের গারওয়ার স্টেডিয়ামে বৃহস্পতিবার এক ক্লাব স্তরের ম্যাচে অংশ নিতে নেমেছিলেন ইমরান। ব্যাট করতে নেমে একদম শুরুর দিকে তিনি বুকে প্রচণ্ড ব্যথা অনুভব করেন। সেই সঙ্গে কাঁধে ব্যথা অনুভূত হলে, তিনি আম্পায়ারের অনুমতি নিয়ে মাঠ ছেড়ে সাজঘরে ফিরতে শুরু করেন। কিন্তু সাজঘরের দিকে যাচ্ছিলেন, তখনই হঠাৎ মাঠে লুটিয়ে পড়েন ইমরান। তারপরে তাঁকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ইমরান, যিনি একজন অলরাউন্ডার হিসেবে পরিচিত ছিলেন, মাঠে সব সময় সক্রিয় থাকতেন এবং খেলাও খুব ভালোবাসতেন। শরীর ফিট রাখতে তিনি কোনো প্রচেষ্টা কখনো বাদ দেননি। কিন্তু হঠাৎ এমন একটি হৃদরোগের কারণে তাঁর মৃত্যু সবার কাছে এক বিরাট শক হয়ে এসেছে। যেহেতু ইমরান এর আগে কখনো কোনো শারীরিক অসুবিধার কথা জানাননি, তাই তাঁর বন্ধু, সতীর্থরা এখনও বিশ্বাস করতে পারছেন না যে একজন সুস্থ ক্রিকেটার এমনভাবে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেলেন।
ইমরানের সতীর্থ নাসির খান বলেন, “ইমরান কখনো অসুস্থ হয়নি। তিনি সবসময় সুস্থ ও ফিট থাকতেন। এমন একজন ক্রিকেটারের মৃত্যু মেনে নেওয়া আমাদের জন্য খুবই কঠিন। ক্রিকেট ছিল তাঁর জীবনের অঙ্গ। আমরা এখনও বিশ্বাস করতে পারছি না যে সে আর আমাদের মধ্যে নেই।”
ইমরানের মৃত্যু শুধু তাঁর সতীর্থদের জন্য নয়, তার পরিবারের জন্যও একটি অপ্রত্যাশিত শোকের খবর। ইমরান স্ত্রী এবং তিনটি মেয়ের পিতা। তাঁর সবচেয়ে ছোট মেয়ে মাত্র চার বছর বয়সী। নিজের পরিবারে তিনি এক আদর্শ পিতা ও স্বামী ছিলেন। পাশাপাশি, ইমরান একটি ক্রিকেট দলের মালিক ছিলেন এবং তাঁর প্রোমোটিং ব্যবসা ও ফলের রসের দোকানও ছিল। শারীরিক কোনো রোগ ছাড়াই এমন একটি আকস্মিক মৃত্যু, তাঁর পরিবারের জন্য অবিশ্বাস্য।
বিশ্ববিদ্যালয় এবং ক্লাব স্তরের খেলা সব সময়ই কঠিন, তবে ইমরানের মতো একজন নির্ভরযোগ্য এবং ফিট ক্রিকেটারের মৃত্যুর ঘটনায় খেলার জগতের মানুষগুলো এখন শোকস্তব্ধ। সবাই এখনও ভাবছে কীভাবে একজন শক্তিশালী ও সুস্থ খেলোয়াড় হঠাৎ এমন অপ্রত্যাশিত মৃত্যু ঘটাল।
এখনও পর্যন্ত, তাঁর মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে কোনো নির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে, শারীরিকভাবে সুস্থ এক খেলোয়াড়ের এমন আকস্মিক মৃত্যু নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন। তবে এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হল, তার পরিবার এবং পরিচিতদের কীভাবে এই শোক কাটিয়ে উঠতে হবে।
ইমরানের মৃত্যু খেলাধুলার দুনিয়ায় এক বড় শূন্যতার সৃষ্টি করেছে। তার সতীর্থরা তাঁর অনুপস্থিতি মেনে নিতে পারছেন না, তবে তার জীবনযাত্রা, খেলা এবং পরিবারের প্রতি তার ভালোবাসা সব সময়ই স্মরণীয় থাকবে।