খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় আন্তর্জাতিক তৎপরতা!
বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এবং বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা হঠাৎ করেই আরও গুরুতর হয়ে ওঠার পর দেশ-বিদেশে উদ্বেগ বাড়ছে। ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে দীর্ঘ দিন ধরে চিকিৎসাধীন খালেদাকে বিদেশে নিয়ে গিয়ে উন্নত চিকিৎসা দেওয়ার বিষয়ে পরিবারের আগ্রহ থাকলেও, তাঁর বর্তমান শারীরিক অবস্থায় তা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা। এই পরিস্থিতিতে বিদেশ থেকেই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের এনে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই চিনের একটি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদল ঢাকায় পৌঁছে গিয়ে মেডিক্যাল বোর্ডের সঙ্গে বৈঠকও করে ফেলেছে।
৮০ বছর বয়সি খালেদা জিয়া বহু দিন ধরেই নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছেন। গত ২৩ নভেম্বর তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। মাঝে মাঝে তাঁর অবস্থা কিছুটা স্থিতিশীল হলেও সামগ্রিক ভাবে উন্নতি দেখা যাচ্ছে না। সোমবার রাতে হঠাৎ করেই তাঁর শারীরিক অবস্থা মারাত্মক ভাবে অবনতি হলে কূটনৈতিক মহলেও উদ্বেগ তৈরি হয়। এই সময়েই ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে সামাজিক মাধ্যমে বার্তা দেন। তিনি জানান, খালেদার চিকিৎসার জন্য ভারত যে কোনও ধরনের সহায়তা করতে প্রস্তুত।
মোদী তাঁর বাংলায় লেখা পোস্টে লিখেছেন, “বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের বিষয়ে জেনে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন বোধ করছি। বাংলাদেশের জনজীবনে তাঁর অবদান অপরিসীম। তাঁর দ্রুত আরোগ্য কামনা করি। ভারত সম্ভাব্য সব ধরনের সাহায্য করতে প্রস্তুত।”
মোদীর এই বার্তা প্রকাশ্যে আসার পরেই বিএনপির পক্ষ থেকে ভারতের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানানো হয়।
শুধু ভারত নয়, খালেদার অসুস্থতা নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে তুরস্ক ও রাশিয়ার দূতাবাসও। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফও কয়েক দিন আগে তাঁর আরোগ্য কামনা করে বার্তা পাঠিয়েছেন।
চিন থেকে আসা চিকিৎসকদল ইতিমধ্যেই বাংলাদেশের মেডিক্যাল বোর্ডের সদস্যদের সঙ্গে চিকিৎসা সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে আলোচনা করেছেন। এই বোর্ডে রয়েছেন বাংলাদেশের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের পাশাপাশি আমেরিকার জন হপকিনস হাসপাতালে কর্মরত এক চিকিৎসক এবং লন্ডনের এক চিকিৎসকও। তাঁদের সঙ্গে সমন্বয় করেই খালেদার পরবর্তী চিকিৎসা পরিকল্পনা তৈরি হচ্ছে।
রাজনৈতিক অঙ্গন থেকে আন্তর্জাতিক মহল— সর্বত্রই এখন একটাই আশা, বেগম খালেদা জিয়া দ্রুত সুস্থ হয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরবেন। তাঁর শারীরিক অবস্থার ক্রমাবনতিতে রাজনৈতিক আবহে যেমন উত্তাপ বাড়ছে, তেমনই বাড়ছে মানবিক সহানুভূতি ও সাহায্যের হাতও। আন্তর্জাতিক সহযোগিতার এই উদাহরণ যেন দক্ষিণ এশিয়ার কূটনৈতিক সম্পর্ককেও নতুন মাত্রা দিচ্ছে।

