Monday, December 1, 2025

খনিজ চুক্তি নিয়ে জ়েলেনস্কির শর্ত, আমেরিকা ডাকলে ফের যাব, জানালেন ব্রিটেন থেকে

Share

ইউক্রেন-আমেরিকার সম্পর্ক এখন টানাপোড়েনের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকের পর খনিজ চুক্তি স্বাক্ষর না হওয়ায় কিছুটা হতাশ ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কি। তবে তিনি এখনই আশা ছাড়ছেন না। রবিবার ব্রিটেন থেকে এক সাক্ষাৎকারে জানালেন, আমেরিকা যদি ফের ডাকে, তবে তিনি আবারও বৈঠকে যেতে প্রস্তুত। কিন্তু তার আগে তিনি চান, ইউক্রেনের বাস্তব পরিস্থিতির কথা শোনা হোক এবং যুদ্ধের মূল কারণগুলো বিবেচনা করা হোক।


🔹 হোয়াইট হাউস থেকে ব্রিটেন, তারপর কী বললেন জ়েলেনস্কি?

খনিজ সম্পদ সংক্রান্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি স্বাক্ষর করতেই সম্প্রতি আমেরিকা সফরে গিয়েছিলেন জ়েলেনস্কি। সেখানে তিনি ট্রাম্প ও ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভান্সের সঙ্গে বৈঠক করেন। কিন্তু আলোচনার মাঝেই উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় শুরু হয়। চুক্তিটি শেষ পর্যন্ত বাতিল হয়ে যায়।

পরিস্থিতি এতটাই তিক্ত হয় যে, জ়েলেনস্কি মধ্যাহ্নভোজও না করেই হোয়াইট হাউস থেকে বেরিয়ে আসেন। এরপর সোজা ব্রিটেন পাড়ি দেন এবং প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টার্মারের সঙ্গে বৈঠক করেন। রবিবার লন্ডনের এক সম্মেলনে তিনি আবারও আমেরিকার সঙ্গে চুক্তির বিষয়ে ইচ্ছাপ্রকাশ করেন, তবে শর্তসাপেক্ষে।

তিনি বলেন,
👉 “আমরা এখনও চুক্তি স্বাক্ষরে রাজি, কিন্তু আমাদের কথাও শুনতে হবে। যুদ্ধ কারা শুরু করল, কারা ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন করল, সেটাও বিবেচনা করতে হবে।”


🔹 ট্রাম্পের সঙ্গে সংঘাত: কোথায় মূল সমস্যা?

২০২৪ সালে দ্বিতীয়বার আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই ট্রাম্প ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ নিয়ে নতুন নীতি গ্রহণ করেছেন। তিনি শান্তির স্বার্থে ইউক্রেনকে রাশিয়ার সঙ্গে সমঝোতার পরামর্শ দিয়েছেন। কিন্তু জ়েলেনস্কি এতে রাজি হননি।

হোয়াইট হাউসে ট্রাম্প ও ভান্স তাঁকে বোঝানোর চেষ্টা করেন, “যুদ্ধ বন্ধ করতে হলে কিছু আপস করতেই হবে।” জ়েলেনস্কির দাবি, “এটা শুধুই সমঝোতার ব্যাপার নয়, এটা সার্বভৌমত্বের প্রশ্ন!”

👉 এই নিয়েই বৈঠক উত্তপ্ত হয়ে ওঠে, এবং খনিজ চুক্তি বাতিল হয়ে যায়।


🔹 ইউরোপের পাশে জ়েলেনস্কি, ব্রিটেন দিল ২৪ হাজার কোটি টাকা!

আমেরিকায় সমর্থন কমলেও, ইউরোপের দেশগুলো জ়েলেনস্কির পাশে দাঁড়িয়েছে। লন্ডনের সম্মেলনে তিনি জানান,
👉 “ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা শক্তিশালী করা মানেই শান্তির সবচেয়ে বড় নিশ্চয়তা।”
👉 “আমরা ইউরোপ থেকে সম্পূর্ণ সমর্থন পাচ্ছি, কারণ তারা চায় যুদ্ধ বন্ধ হোক, কিন্তু তার জন্য নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দরকার।”

ব্রিটেন ইতিমধ্যেই ইউক্রেনের জন্য ২৪ হাজার কোটি টাকার প্রতিরক্ষা ঋণ অনুমোদন করেছে, যা অস্ত্র উৎপাদনে ব্যবহার করা হবে।


🔹 আমেরিকাকে নতুন বার্তা, ফের বৈঠকের সম্ভাবনা?

হোয়াইট হাউসে ঘটনার পরেও আমেরিকার সঙ্গে সম্পর্ক পুনরুদ্ধারে আশাবাদী জ়েলেনস্কি। তিনি বলেছেন,
👉 “আমাকে যদি ফের আমেরিকায় আমন্ত্রণ জানানো হয়, আমি আবার যাব। কিন্তু আমাদের অবস্থানকেও গুরুত্ব দিতে হবে।”

এছাড়াও তিনি স্পষ্ট করে দিয়েছেন,
👉 “পুতিনের সঙ্গে কোনো জমি বিনিময়ের চুক্তিতে আমরা যাব না। আমাদের সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে আপস করা সম্ভব নয়।”


🔹 শেষ কথা

যুদ্ধের দুই বছর পেরিয়ে গেলেও ইউক্রেন-রাশিয়া সংঘাত থামার কোনো লক্ষণ নেই। ট্রাম্প প্রশাসন যুদ্ধের অবসান চাইলেও, জ়েলেনস্কি চান সম্মানের সঙ্গে শান্তি। তিনি চান ইউক্রেনের ভূখণ্ড অক্ষুণ্ণ রেখেই আলোচনা হোক। এখন দেখার বিষয়, আমেরিকা তাঁকে নতুন করে বৈঠকের জন্য ডাকবে কি না এবং ইউক্রেনের শর্ত মানবে কি না!

‘প্যাক-ফ্যাক’ থেকে ‘আমার আইপ্যাক’— কেন বদলে গেল মমতার অবস্থান?

Read more

Local News