Sunday, November 30, 2025

ক্যামেরার সামনে সহজ, কিন্তু বাস্তব এত সরল নয়— মায়ের জীবনে নতুন মানুষ মানিয়ে নিতে পারব কি না জানি না: রুক্মিণী

Share

মায়ের জীবনে নতুন মানুষ মানিয়ে নিতে পারব কি না জানি না: রুক্মিণী

ছবির প্রচার, বিজ্ঞাপনের শুটিং, নতুন প্রকল্প— সব মিলিয়ে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন অভিনেত্রী রুক্মিণী মৈত্র। যদিও সাম্প্রতিক কয়েক মাসে তাঁকে ঘিরে নানা বিতর্ক ও আলোচনার ঝড় বয়ে গেছে, তবু তিনি নিজের লো-প্রোফাইল জীবন বজায় রেখেছেন। তার মাঝেই মুক্তি পাচ্ছে তাঁর নতুন ছবি ‘হাঁটি হাঁটি পা পা’, যেখানে ফুটে উঠেছে বাবা-মেয়ের সম্পর্কের অনুভূতি। ছবির প্রচারের ফাঁকেই নিজের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে খোলামেলা কথা বললেন তিনি— বিশেষ করে মা মধুমিতা মৈত্রের সঙ্গে তাঁর গভীর সম্পর্ক এবং এক বাস্তব প্রশ্ন, মায়ের জীবনে নতুন কারও জায়গা কি তিনি মেনে নিতে পারবেন?


শৈশব থেকেই মুম্বইয়ের সঙ্গে যোগ

অনেকে অভিযোগ করেন, রুক্মিণী নাকি এখন কলকাতায় কম থাকেন। এতে নায়িকা খুশি নন। তিনি বললেন—
👉 “ছোট থেকে মুম্বই আমার দ্বিতীয় বাড়ি। বাবা বলতেন, পরীক্ষায় ভাল করলে আমাকে মুম্বই নিয়ে যাবেন, পছন্দের জিনিস কিনে দেবেন। তাই আজও ওই শহরের সঙ্গে একটা আবেগের যোগ রয়েছে।”

বর্তমানে কাজের সূত্রে তাঁর মুম্বই যাতায়াত বেশি হলেও, কলকাতাকে তিনি নিজের প্রথম ঠিকানাই মনে করেন।


ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে নীরবতা— কেন?

সম্প্রতি প্রযোজক-অভিনেতা দেবের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক নিয়ে বহু প্রশ্ন উঠেছে। আবার নেটিজেনরা জানতে চান, কেন রুক্মিণী কম ছবি করছেন।
এ বিষয়ে রুক্মিণীর সোজা জবাব—

👉 “আমি কোনও দিনই সমাজমাধ্যমে খুব সক্রিয় নই। কাজ থাকলেই সামনে আসি। তাতে এত হইচই কেন হচ্ছে জানি না!”

তিনি আরও জানান, তাঁর ব্যক্তিগত জীবন একান্তই তাঁর নিজের। কাজ ছাড়া কোথায় থাকেন বা কী করেন— তা জানতেই হবে এমন নয় বলে মনে করেন তিনি।


বাবা-মেয়ের গল্পে নিজের আবেগের ছোঁয়া

‘হাঁটি হাঁটি পা পা’ ছবিটি বাবা-মেয়ের সম্পর্ক নিয়ে। ট্রেলর আসার পর তুলনা শুরু হয় ‘পিকু’র সঙ্গে। তবে রুক্মিণীর মতে—

👉 “ছবির গভীরে আরও অনেক বড় গল্প রয়েছে— মা-বাবার অনুভূতি, তাঁদেরও মানুষের মতো চাওয়া-পাওয়া থাকা— এসব আজও সমাজে বলা হয় না।”

২০১৭ সালে বাবাকে হারিয়েছেন রুক্মিণী। এরপর থেকে মা-ই তাঁর শক্তি, আশ্রয়, বন্ধু। তিনি বলেন—

👉 “মা আমার সব কথা জানে। কিন্তু কখনও ভাবি— আমার তো নিজের দুনিয়া আছে। মায়ের? ওঁর কাউকে কি দরকার হয় না?”

এই জায়গাতেই আসে সেই কঠিন স্বীকারোক্তি—


“বাস্তবে মায়ের কারও সঙ্গে সম্পর্ক হলে মানিয়ে নিতে পারব কি না, জানি না”— রুক্মিণীর দ্বিধা

ছবির গল্প যেমন বাবা-মেয়ের আবেগ ঘিরে, তেমনি একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ছুঁয়ে যায়— মা-বাবার একাকিত্ব।

রুক্মিণী বলেন—
👉 “ছবির শুটে ক্যামেরার সামনে এসব বলা সহজ। কিন্তু নিজের জীবনে এমন সময় এলে? সত্যিই জানি না কীভাবে সামলাব। মায়ের জীবনে নতুন কেউ এলে মানিয়ে নিতে পারব কি না বলার মতো সাহস এখনই নেই।”

তাঁর স্বীকারোক্তি— সত্যি কথা বলা সহজ নয়।
সময় ও পরিস্থিতির উপর নির্ভর করবে তাঁর প্রতিক্রিয়া।


সমালোচনা নয়, ইতিবাচকতায় বিশ্বাস

এই বছর তাঁর দুটি ছবি— ‘বিনোদিনী’ এবং ‘হাঁটি হাঁটি পা পা’— জাতীয় স্তরে প্রশংসা পাচ্ছে। তাই বিতর্ক বা কটূক্তি নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছেন না রুক্মিণী।

তিনি হেসে বলেন—
👉 “আমি মেয়ে, কিন্তু বোকা মেয়ে নই। হাজারটা ভাল মন্তব্যের মাঝে একটা খারাপ কথার জন্য আমি থেমে যাব না।”


শেষ কথা

কাজের দুনিয়ায় উজ্জ্বল আলোয় থাকা সত্ত্বেও ব্যক্তিগত জীবন, পরিবার ও নিজের আবেগকে গুরুত্ব দেন রুক্মিণী।
মায়ের সঙ্গে বন্ধুত্ব, বাবাকে হারানোর যন্ত্রণা, এবং ভবিষ্যতের বাস্তব প্রশ্ন— সবকিছুই ভেবেচিন্তে, পরিণত মন নিয়ে সামলাচ্ছেন তিনি।

Read more

Local News