কোয়েটা স্টেশনে বিস্ফোরণ
পাকিস্তানের কোয়েটা শহরের প্রধান রেলস্টেশনে শনিবার সকালে ভয়াবহ বিস্ফোরণে ১৪ জন পাকিস্তানি সেনা-সহ ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে, আহত হয়েছেন ৬০ জনেরও বেশি। স্থানীয় সময় সকাল পৌনে ৯টার দিকে কোয়েটা স্টেশনের ১ নম্বর প্ল্যাটফর্মে এই বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণের ফলে স্টেশনের একাংশ সম্পূর্ণভাবে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে, এবং আতঙ্কিত যাত্রীরা দৌড়াদৌড়ি শুরু করে। বেশ কয়েকটি দেহের অংশ প্ল্যাটফর্মে ছড়িয়ে পড়েছে, কোথাও হাত, কোথাও পা, আবার কোথাও পুরো দেহ ছিন্নভিন্ন হয়ে পড়েছে। বিস্ফোরণের কারণে স্টেশনের ছাউনির বিশাল অংশও উড়ে গিয়ে আকাশ দেখা যায়।
বিস্ফোরণের সময় প্ল্যাটফর্মে উপস্থিত ছিলেন অনেক যাত্রী, তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন পাকিস্তানি সেনা সদস্যও ছিলেন। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বিস্ফোরণটি একটি আত্মঘাতী হামলা ছিল বলে প্রাথমিক তদন্তে মনে হচ্ছে। হামলাকারী সম্ভবত যাত্রীদের ভিড়ে আত্মগোপন করেছিল এবং বিস্ফোরক ভর্তি ব্যাগটি বিস্ফোরণস্থলের কাছে রেখে দেয়।
এখনও পর্যন্ত নিহতদের মধ্যে ১৪ জন পাকিস্তানি সেনা সদস্য এবং অন্যান্য সাধারণ নাগরিকও রয়েছেন। হামলার লক্ষ্য ছিল ওই সেনা সদস্যরা, কারণ তারা ট্রেনে ওঠার জন্য প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে ছিল এবং হামলাকারী তাদের নিশানা করেছিল। বিস্ফোরণের সময় ওই প্ল্যাটফর্মে প্রায় ১০০ জন যাত্রী উপস্থিত ছিলেন। পুলিশের ধারণা, বিস্ফোরণে ব্যবহৃত হয়েছে ৬-৮ কেজি বিস্ফোরক। তবে, এখনও স্পষ্টভাবে বলা হয়নি হামলার ধরন কেমন ছিল, এবং পুলিশ এবং বম্ব স্কোয়াডের তদন্ত চলছে।
অন্যদিকে, পাকিস্তানের কোয়েটার পুলিশ সুপার মহম্মদ বালোচ জানিয়েছেন, প্রাথমিক তদন্তে মনে হচ্ছে একটি ব্যাগে বিস্ফোরক ভর্তি করা হয়েছিল এবং সেটি স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে রেখে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে। তবে বিস্ফোরণের ধরণ দেখে এটিকে আত্মঘাতী হামলা বলেও সন্দেহ করা হচ্ছে।
এই বিস্ফোরণের ঘটনায় বিস্ফোরক ব্যবহারের সাথে জড়িত হামলাকারী কতজন ছিল, তা এখনও নিশ্চিত হয়নি। তবে পুলিশের ধারণা, হামলাকারী এক বা একাধিক ব্যক্তি হতে পারে যারা যাত্রীদের মধ্যে গোপন হয়ে এই ভয়াবহ হামলাটি চালিয়েছে।
অপরদিকে, পাকিস্তানের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত রিপোর্টে বলা হয়েছে যে, বিস্ফোরণটি একটি পরিকল্পিত হামলা হতে পারে, যেখানে হামলাকারী একটি ব্যাগে বিস্ফোরক রেখে চলে যায়। তবে, তারপরে বিস্ফোরণ ঘটানোর জন্য সেটি তার নিজের দেহে ব্যবহৃত হতে পারে। পুলিশের বিশেষ বম্ব স্কোয়াড ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে এবং বিস্ফোরণের প্রকৃতি এবং হামলাকারীদের পরিকল্পনা নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে।
পাকিস্তানের কোয়েটা স্টেশন এলাকায় বিস্ফোরণটি তীব্র আতঙ্ক তৈরি করেছে, এবং প্রশাসন পরিস্থিতি মোকাবিলায় সতর্ক অবস্থায় রয়েছে।