কোহলি-শ্রেয়সদের হাতে এবার আইপিএলের মঞ্চ!
আইপিএলের আঠারো নম্বর আসর এ বার শুধু এক ফাইনাল ম্যাচ নয়—এ এক জমাট নাটক। দু’টি দলের মুখোমুখি লড়াই, যাদের একদিকে আছে তারকার ছড়াছড়ি, অন্যদিকে অবহেলিত প্রতিভার দ্যুতি। ইতিহাস, প্রমাণ, প্রতিশোধ আর আবেগ—সব মিলিয়ে মঙ্গলবারের ফাইনাল ক্রিকেটবিশ্বের কাছে হয়ে উঠেছে বহুমাত্রিক উত্তেজনার কেন্দ্র।
শ্রেয়সের পঞ্জাব: জিতলে নতুন অধ্যায়
গতবার কলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়ে ট্রফি জেতা শ্রেয়স আয়ার এবার পঞ্জাব কিংসের অধিনায়ক। দলটা তারকাবিহীন হলেও, শ্রেয়সের নেতৃত্বে তারা ছিল একটি পরিপূর্ণ দল—যেখানে গ্ল্যামার নয়, ছিল গেমপ্ল্যান। অর্শদীপ সিংহ, যুজবেন্দ্র চহল—দলের কয়েকজন নাম আছে, কিন্তু তারকাদের ইগো নেই। এই শান্ত, সুশৃঙ্খল পরিবেশেই গড়ে উঠেছে সাফল্যের ভিত্তি। মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের মতো ফর্মে থাকা দলকে হারিয়ে ফাইনালে ওঠা পঞ্জাব আত্মবিশ্বাসী, আবার বাস্তববাদীও—কারণ প্রথম কোয়ালিফায়ারে তারা হেরেছিল এই বেঙ্গালুরুর কাছেই।
শ্রেয়সের ব্যক্তিগত যুদ্ধও কম নয়। জাতীয় টেস্ট দলে জায়গা না পাওয়া, কেকেআরের ট্রফির পরও উপেক্ষা, সবকিছুর জবাব দিতে চান তিনি মাঠেই। আর তার থেকে বড় মঞ্চ হয়তো আর হয় না—একটি ফাইনাল, একটি ট্রফি, একটি সম্ভাব্য ক্যারিয়ার রিসেট।
কোহলির বেঙ্গালুরু: নামের ভার নয়, সম্মিলনের ছায়া
বেঙ্গালুরুর চেহারা উলটো। বিরাট কোহলি, জশ হেজলউড, ফিল সল্টের মতো নাম রয়েছে, কিন্তু নেতৃত্বে আছেন রজত পাটিদার বা জিতেশ শর্মা। সিনিয়ররা পরামর্শ দেন, হস্তক্ষেপ করেন না—ফলে জুনিয়র নেতারা আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। পুরো দল যেন এক লাইটহাউসের মতো—তীব্র আলো নয়, বরং দৃশ্যমান পথ দেখানো।
কোহলির আইপিএল ক্যারিয়ার শুরু হয়েছিল ২০০৮-এ। তবু এখনও ট্রফি অধরা। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রায় সব বড় শিরোপা জেতা এই ব্যাটসম্যানের ক্যারিয়ার যেন অসম্পূর্ণ থেকে গেছে শুধু এই একটি ট্রফির জন্য। ১৮ নম্বর জার্সি পরে আইপিএল ট্রফি তুলে ধরার স্বপ্ন এ বার সত্যি হতে পারে কি?
দুই কোচের লড়াই: পেশাদার অপমানের পাল্টা জবাব
দুই দলের কোচই একসময় বিতাড়িত—রিকি পন্টিংকে ছেড়ে দিয়েছিল দিল্লি, অ্যান্ডি ফ্লাওয়ারকে ছেটেছিল লখনউ। কিন্তু এবার এই দুই অপাংক্তেয়ই নিজের হাতে বানিয়েছেন ট্রফির দাবিদার দল। কোচিং মানে শুধু নেট সেশন নয়, মানসিক প্রস্তুতি, সঠিক পরিকল্পনা আর ছায়া নেতৃত্ব। পন্টিংয়ের কৌশলী মন্তব্য—শ্রেয়সকে আরও তাতিয়ে দিতে—সেদিকেও নজর থাকবে।
বৃষ্টির ছায়া, তবু আশার আলো
ম্যাচের দিন বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। তবে বিসিসিআই রেখেছে রিজার্ভ ডে। মঙ্গলবার না হলে খেলা হবে বুধবার। তবু দ্বিতীয় দিনও বৃষ্টি হলে সুবিধায় থাকবে পঞ্জাব—কারণ তারা লিগ টেবিলের শীর্ষে।
এত সব গল্প, হিসেব, আবেগ আর ইতিহাসের ভেতর থেকে বেরিয়ে আসবে একজন চ্যাম্পিয়ন—যাকে মনে রাখবে সময়। এবার প্রশ্ন, জবাবটা কে দেবে—বিরাট না শ্রেয়স?
সারা দিন “স্নান করে বেরোলাম” লুক—কীভাবে পাবেন তরতাজা ও সতেজ চুলের জাদু?

