Sunday, November 30, 2025

কৃত্রিম স্বর্গবাড়ি—নাইয়া দ্বীপে ধনী ক্লাসের নতুন ঠিকানা, ভিলার জন্য গুনতে হবে শতকোটি!

Share

কৃত্রিম স্বর্গবাড়ি—নাইয়া দ্বীপে ধনী ক্লাসের নতুন ঠিকানা!

দুবাইয়ের সমুদ্রতট আর কৃত্রিম দ্বীপ—এই মিলনক্ষেত্রই একসময় বিশ্বের ধনকুবেরদের পছন্দের ঠিকানা হয়ে উঠেছিল। পাম জুমেইরাহর দৌলতেই হাজারো কোটিপতি ভিলা-প্রাসাদ সজ্জা করেছেন। কিন্তু এখন আরেকটি কৃত্রিম দ্বীপ চাইছে ধনাঢ্য অভিজাতদের মনোযোগ: নাইয়া (Naiya) দ্বীপ—সমুদ্রের ধারে, শহুরে কোলাহল থেকে দূরে, ব্যক্তিগত গোপনীয়তা ও বিলাসিতার সংমিশ্রণে তৈরির এক নয়া প্রজেক্ট।

নাইয়ার প্রকল্প ঘিরে খবর: আর্সেলর-মিত্তলের কর্ণধারসহ কয়েকজন সুপ্রতিষ্ঠিত ধনকুবে এখানে বিশাল প্লট কিনেছেন। এক রিপোর্ট বলছে—নাইয়ার একটি ভিলার নেওয়ার মূল্য প্রায় ১০৯ কোটি টাকা; আর প্লটের আয়তন ২১ হাজার থেকে ৪৮ হাজার বর্গফুটের মধ্যে হতে পারে। জমির দাম তো তার চেয়ে বহু গুণ — অর্থাত্‌ যারা এখানে বাড়ি পাবেন, তাদের জন্য আর্থিক ব্যাকগ্রাউন্ডটা মাপা দরকার হবে না বললেই চলে।

প্রকল্পের নকশা ও সুযোগ-সুবিধা আধুনিক অভিজাতদের জীবনধারাকে মাথায় রেখে করা হচ্ছে। কোনো ঝাঁ-চকচকে আকাশচুম্বীর গ্লাস-বড়–নির্মাণ নয়— বরং খোলামেলা পরিবেশে ব্যক্তিগত ভিলাসহ নিম্নঘনত্বের আবাসন থাকবে। প্রতিটি ভিলার সঙ্গে থাকবে নৌকাবিহারের আলাদা ডক, সমুদ্রতটে নামার ব্যক্তিগত পথ, এবং প্রাইভেট স্পেস—শহুরে ঢেউয়ের সঙ্গে মিলবে না এমন এক গোপন জীবনের প্রতিশ্রুতি। রাস্তা-ঘাট, রেস্তোরাঁ, শপিং মল যা প্রয়োজন—সেসবই আছে, তবে সবকিছুই সীমিত স্কেলে, শুধু বাসিন্দা ও অতিথিদের জন্য।

প্রকল্প পরিচালনায় রয়েছে শামাল হোল্ডিং—দুবাইয়ের অভিজাত রিয়েল এস্টেট খাতের পরিচিত এক নির্মাণ ও বিনিয়োগ সংস্থা। নকশা দিচ্ছেন শেভাল ব্ল্যাঙ্কের মতো স্বতন্ত্র স্থপতি; তারা বলছে নাইয়াকে বাড়তি ব্যস্ত শহরের কপি বানানো হচ্ছে না— বরং ইকো-সেন্সিটিভ, ব্যক্তিগত এবং আরামদায়কভাবে সাজানো হবে। প্রতিষ্ঠাতারা প্রকল্পে আবাসন সংখ্যা সীমিত রাখার কথাই বলেছেন, তাই প্রতিটি প্লট-ভিলা আর সামাজিক সুযোগ-সুবিধা একেবারেই এক্সক্লুসিভ হিসেবে বিবেচিত হবে।

নাইয়ার আরেকটি বড় আকর্ষণ—গোল্ডেন ভিসা সুবিধা। যে ক্রেতারা এখানে জমি বা বাড়ি কিনবেন, তাদের ১০ বছরের সংযুক্ত আরব আমিরশাহির গোল্ডেন ভিসা পাওয়ার সুযোগ থাকবে—যা ধনকুবে ও বিনিয়োগকারীদের কাছে বড় প্রলোভন। তাছাড়া এখানে কর-কৌশল, উত্তরাধিকারের সুবিধা ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা—এগুলো মিলিয়ে ধনী-বিচারকরা দুবাইকে স্থায়ী ঠিকানায় পরিণত করতে আগ্রহী হচ্ছেন। এমন ভাবনা-চেতনায় লক্ষ্মী মিত্তল-রকম শিল্পপতিদের নামও এ তালিকায় উঠে এসেছে; ব্রিটেনের করনীতি-পরিবর্তন ও বিদেশে নিরাপদ আশ্রয় খোঁজার প্রেক্ষিতে অনেকে পশ্চিম এশিয়ায় দৃষ্টি সরিয়েছেন।

প্রকৃতপক্ষে নাইয়া দ্বীপকে পুরোপুরি একটি পর্যটনকেন্দ্র বানানোর পরিকল্পনা নেই— বরং এটিকে মরুশহরের এক অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ উপকূলীয় আবাস হিসেবে গড়ে তোলা হবে। সেখানে শুধু বাসিন্দা ও তাঁদের আমন্ত্রিত অতিথিরাই আসবেন; শহুরে কোলাহল ও ভিড় এখানে ঢুকবে না। ফলে যারা নগরের আড্ডা-গোপনীয়তা, নীরবতা ও ব্যক্তিগত বিলাসিতা চান—তাদের জন্য নাইয়া এক সরকারি-নিবাচিত ‘বাণিজ্যলক্ষ্মী’র মতো নতুন ঠিকানার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে।

নির্মাণ কাজ সম্পূর্ণ হওয়ার প্রত্যাশা ২০২৯ সাল—তাহলে এর আগেই কাঁচামাল, ডিজাইন ও প্লট বরাদ্দ নিয়ে কৌতূহল বাড়ছে। মূল্য উঠতে উঠতে থাকুক—কিন্তু এমন বাড়ির মালিক হওয়া মানে কেবল একটি সম্পত্তির মালিক হওয়া নয়; এটি এক ধরণের জীবনধারার নাম—নিঃসন্দেহে বিশ্বের সোনালি অভিজাত শ্রেণীর আরেকটি প্রতীকী ঠিকানা।

Read more

Local News