Friday, January 31, 2025

কুম্ভমেলায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড: গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে ছড়াল আতঙ্ক, পুড়ল একাধিক তাঁবু

Share

কুম্ভমেলায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড

রবিবার বিকেলে প্রয়াগরাজের কুম্ভমেলায় ঘটে গেল এক ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড। মেলার ১৯ নম্বর সেক্টরের একটি তাঁবুতে হঠাৎ করেই আগুন ধরে যায়। মুহূর্তের মধ্যে সেই আগুন আশপাশের তাঁবুগুলিতে ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনায় প্রায় ৫০টি তাঁবু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে প্রাথমিক অনুমান। তবে সৌভাগ্যবশত এখনও পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

আগুনের উৎস: অনুমান ও বিস্ফোরণের ভয়াবহতা

সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, তাঁবুগুলোর ভেতর থেকে বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া যায়। পুলিশ এবং দমকল বিভাগ প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে, গ্যাস সিলিন্ডার ফেটে বিস্ফোরণের ফলেই এই অগ্নিকাণ্ড ঘটে থাকতে পারে। কুম্ভমেলার জন্য তৈরি অস্থায়ী তাঁবুগুলিতে পুণ্যার্থীদের রান্নার ব্যবস্থা থাকে। সেখান থেকেই কোনোভাবে আগুন ছড়িয়েছে কি না, সেটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

অগ্নিকাণ্ডে আতঙ্কিত মেলার পরিবেশ

ঘনবসতিপূর্ণ কুম্ভমেলা প্রাঙ্গণে এমন ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ফলে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। আগুন লাগার পরপরই দমকল বাহিনী এবং জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী (এনডিআরএফ) ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। দমকলের বেশ কয়েকটি ইঞ্জিন এবং অ্যাম্বুলেন্স দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নেভানোর কাজে লেগে পড়ে। এনডিআরএফও তাঁদের দক্ষতায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার কাজে সাহায্য করে।

কুম্ভমেলায়

প্রশাসনের তৎপরতা: পুণ্যার্থীদের উদ্ধার

মেলায় মোতায়েন থাকা পুলিশ এবং প্রশাসনিক কর্মীরা সঙ্গে সঙ্গে দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান। পুণ্যার্থীদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু হয়। আখড়া থানার ইনচার্জ ভাস্কর মিশ্র জানান, সেক্টর ১৯-এ দু’টি গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের কারণে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। তবে দ্রুত উদ্ধারকাজ শুরু হওয়ায় কোনো প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি।

কী থেকে আগুন? তদন্তের প্রশ্ন

যদিও পুলিশ গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের কথা জানিয়েছে, তবু কীভাবে আগুন লাগল তা নিয়ে স্পষ্ট কোনো ধারণা তৈরি হয়নি। তাঁবুগুলিতে ব্যবহৃত গ্যাস সিলিন্ডারের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কোনো ধরনের অব্যবস্থাপনার জন্যই এই দুর্ঘটনা ঘটেছে কি না, সেটিও খতিয়ে দেখছে প্রশাসন।

মহাকুম্ভ প্রশাসনের বিবৃতি

প্রয়াগরাজ মহাকুম্ভের সমাজমাধ্যম হ্যান্ডল ‘মহাকুম্ভ ২০২৫’ থেকে এক বিবৃতি প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, “এই অগ্নিকাণ্ড অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা। মেলা প্রাঙ্গণে উদ্ধার এবং ত্রাণের জন্য আমরা প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নিয়েছি। মা গঙ্গার কাছে প্রার্থনা করছি, সকল পুণ্যার্থী এবং অংশগ্রহণকারীরা নিরাপদে থাকুন।”

মহাকুম্ভের ব্যস্ততা এবং নিরাপত্তার চ্যালেঞ্জ

কুম্ভমেলায় লাখ লাখ মানুষের ভিড় প্রতিদিনই বাড়ছে। এত বিশাল জনসমাগম সামলানোর জন্য প্রশাসন একাধিক সেক্টরে মেলা প্রাঙ্গণকে ভাগ করেছে। প্রতিটি সেক্টরে নিরাপত্তা এবং জরুরি সেবার জন্য আলাদা ব্যবস্থা রাখা হলেও, এমন অগ্নিকাণ্ড প্রশাসনের প্রস্তুতির দিকে আঙুল তোলে।

দমকল বাহিনীর দক্ষতা: পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে

দমকল কর্মীরা তাঁদের চেষ্টায় দ্রুত পরিস্থিতি সামাল দেন। আগুন যাতে আরও ছড়িয়ে পড়তে না পারে, সেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়। তাঁবুগুলির দাহ্য উপাদান এবং ঘনবসতিপূর্ণ অবস্থার কারণে পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারত। তবে তাদের দ্রুত পদক্ষেপের কারণে বড়সড় বিপর্যয় এড়ানো সম্ভব হয়েছে।

পুণ্যার্থীদের প্রতিক্রিয়া

এই দুর্ঘটনার পর মেলায় উপস্থিত পুণ্যার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিলেও, অনেকেই প্রশাসনের পদক্ষেপ এবং উদ্ধারকাজের প্রশংসা করেছেন। তবে তাঁবুগুলির নির্মাণ এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা নিয়ে তারা প্রশ্ন তুলেছেন।

উপসংহার: দায়িত্বে ঘাটতি ও ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ

কুম্ভমেলায় এমন অগ্নিকাণ্ড প্রশাসনের প্রস্তুতির ঘাটতিকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়। গ্যাস সিলিন্ডারের ব্যবহারে আরও সতর্কতা এবং নিরাপত্তার প্রয়োজনীয়তা স্পষ্ট। এমন বিপুল জনসমাগমে আরও দক্ষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং জরুরি সেবার উন্নয়ন প্রয়োজন। মা গঙ্গার পুণ্যধামেই পুণ্যার্থীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে হাজির হন না, তা নিশ্চিত করাই প্রশাসনের মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত।

বন্ধ হয়ে গিয়েছে পুঁটিরামের পুরনো দোকান, কী হারাল কলকাতা? স্মৃতি হাতড়ালেন শহরের মিষ্টিবিলাসীরা

Read more

Local News