কাশ্মীরে টানা ৮ দিন সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘন!
পাকিস্তান ফের উত্তেজনার আগুন ছড়াল কাশ্মীরে। টানা আট দিন ধরে নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর সংঘর্ষবিরতি ভেঙে ভারতের বিভিন্ন সেনাঘাঁটিতে গুলিবর্ষণ করছে পাক সেনা। বৃহস্পতিবার রাত ও শুক্রবার ভোরে জম্মু ও কাশ্মীরের কুপওয়ারা, বারামুলা, পুঞ্চ, নওশেরা এবং আখনুর—এই পাঁচটি জায়গায় গুলি ছোড়ে তারা। প্রতিটি ক্ষেত্রেই ভারতীয় সেনা দিয়েছে জোরালো পাল্টা জবাব।
যুদ্ধের মতো পরিস্থিতি, চরম উত্তেজনায় নিয়ন্ত্রণরেখা
পহেলগাঁও জঙ্গি হামলার পর থেকেই পরিস্থিতি ক্রমেই উত্তপ্ত। ভারত-পাক কূটনৈতিক সম্পর্ক এখন তলানিতে। সীমান্তের এই টানা উত্তেজনা শুধু সীমান্ত রক্ষীদের নয়, আতঙ্ক ছড়াচ্ছে স্থানীয়দের মধ্যেও। নিয়ন্ত্রণরেখা যেন এক উত্তাল যুদ্ধভূমি, যেখানে প্রতিটি দিন কাটছে অনিশ্চয়তায়।
জঙ্গিদের ফেরাতে পাক সেনার ‘চালবাজি’?
প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের মতে, পাকিস্তানের এই আচরণের পেছনে রয়েছে সুপরিকল্পিত কৌশল। জঙ্গিদের নিরাপদে ফেরত পাঠানোর জন্য ইচ্ছাকৃতভাবেই গুলিবর্ষণ করে ভারতীয় সেনার দৃষ্টি অন্যদিকে ঘুরিয়ে দিচ্ছে ইসলামাবাদ। ফলে সীমান্তে যখন গোলাগুলি চলছে, সেই সময় হয়তো পিছনের দিক দিয়ে জঙ্গিরা চুপিচুপি ফিরে যাচ্ছে পাকিস্তানে।
ভারতীয় সেনার জবাবও ভয়ংকর
তবে ভারতও এবার কোনো অবস্থায় ছেড়ে কথা বলছে না। প্রতিটি হামলার যথাযথ জবাব দিচ্ছে ভারতীয় সেনা। সীমান্তে নজরদারি আরও কড়া করা হয়েছে, বাড়ানো হয়েছে সেনা মোতায়েন। ভারতীয় সেনার পক্ষ থেকে স্পষ্ট বার্তা—যেকোনো পরিস্থিতির মোকাবিলায় তারা সম্পূর্ণ প্রস্তুত।
শিমলা চুক্তি নিয়ে হুঁশিয়ারি পাকিস্তানের
এর মধ্যেই ইসলামাবাদে বসে জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির বৈঠকে ভারত-বিরোধী তৎপরতা আরও তীব্র করার সিদ্ধান্ত নেয় পাকিস্তান। জলপ্রবাহ বন্ধ হলে সেটিকে ‘যুদ্ধের ঘোষণা’ হিসেবে গণ্য করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে তারা। এমনকি, তারা দাবি করেছে শিমলা চুক্তি স্থগিত করার অধিকারও তাদের রয়েছে।
১৯৭২ সালের শিমলা চুক্তির মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণরেখা নির্ধারণ করা হয়েছিল। সেই চুক্তির অধীনেই দুই দেশের বাহিনী যার যার অবস্থানে থেকেছে এতদিন। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে সেই চুক্তি নিয়েই প্রশ্ন তুলে দিয়েছে ইসলামাবাদ।
সীমান্তে থমথমে অবস্থা, বাড়ছে আশঙ্কা
প্রতিদিন নতুন করে সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘন এবং রাজনৈতিক উত্তেজনার জেরে সীমান্তের সাধারণ মানুষ এক প্রকার আতঙ্কের মধ্যেই দিন কাটাচ্ছেন। ছোট ছোট গ্রামে রাতে বাতি নিভিয়ে, দোতলার ঘরে না উঠে, মাথার উপর কম্বল চাপা দিয়ে ঘুমোতে হচ্ছে—কখন যে গুলি এসে পড়ে, কেউ জানে না।
এই উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে আগামী দিনে ভারত-পাক সম্পর্ক কোন দিকে মোড় নেবে, তা এখনই বলা কঠিন। তবে এটুকু স্পষ্ট—কাশ্মীর সীমান্তে যুদ্ধ না হলেও, যুদ্ধকালীন প্রস্তুতি পুরোদমে চলছে।
গরমে বাহুমূলের বিশেষ যত্ন: দুর্গন্ধ ও তেলচিটে ভাব দূর করার ৫ সহজ ধাপ

