Thursday, January 30, 2025

কারখানার আড়ালে মাদকচক্র গুজরাতে, ১০৭ কোটি টাকার মাদক বাজেয়াপ্ত করল এটিএস

Share

কারখানার আড়ালে মাদকচক্র গুজরাতে

গুজরাতে এক বিপুল মাদকচক্রের খোলসা করেছে পুলিশ। গুজরাত পুলিশের সন্ত্রাসদমন শাখা (এটিএস) সম্প্রতি এক অভিযান চালিয়ে ১০৭ কোটি টাকার মাদক উদ্ধার করেছে, যা গোটা অঞ্চলে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। এই মাদকচক্রের মূল কেন্দ্রে ছিল একটি কারখানা, যেখানে মাদক তৈরি হতো আড়ালে। এই অভিযানে আরও উদ্ধার হয়েছে প্রায় ২০০০ কেজি কাঁচামাল, যা দিয়ে আরো বহু কোটি টাকার মাদক ও নেশাজাত দ্রব্য তৈরি করা সম্ভব।

এটিএস সূত্রে জানা গেছে, উদ্ধারকৃত কাঁচামালের পরিমাণ এতটাই বিপুল যে, তা দিয়ে প্রায় ৫০ কোটি টাকার মাদক ও নেশার ওষুধ তৈরি করা সম্ভব। সুত্রটি জানিয়েছে, গোপন সূত্রে খবর পেয়ে তারা আনন্দ জেলার খাম্বাতে একটি কারখানার আড়ালে মাদক তৈরির কাজ চলছে এমন তথ্য পেয়েছিল। সেই তথ্যের ভিত্তিতে এটিএস তাদের অভিযান শুরু করে এবং নেজা গ্রামে পৌঁছে তল্লাশি চালায়।

এটিএস-এর অভিযান চলে ‘গ্রিনলাইফ ইন্ডাস্ট্রিজ’ নামে পরিচিত একটি কারখানায়, যেখানে তারা মাদক তৈরির যন্ত্রপাতি, সরঞ্জাম, এবং বিপুল পরিমাণ মাদক উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। পুলিশ জানিয়েছে, মাদক তৈরির এই অবৈধ কার্যক্রমের সঙ্গে পাঁচজন ব্যক্তি জড়িত ছিলেন, যাদের মধ্যে রঞ্জিত দাভি, বিজয় মাকওয়ানা, হেমন্ত পটেল, লালজি মাকওয়ানা এবং জয়দীপ মাকওয়ানা নামক ব্যক্তিরা প্রধান ভূমিকা পালন করছিলেন।

এটি একটি জটিল আন্তর্জাতিক মাদকচক্রের অংশ হতে পারে, কারণ উদ্ধারকৃত কাঁচামালগুলি বিদেশ থেকে আসা হতে পারে। পুলিশের তদন্ত অনুসারে, এই চক্রটি পরিচালিত হচ্ছিল অজয় জৈন নামে এক ব্যক্তির মাধ্যমে, যিনি গোটা সিন্ডিকেটের কুয়ো ছিল।

রঞ্জিত দাভি, যিনি এই চক্রের মূল ব্যক্তি বলে চিহ্নিত হয়েছেন, তার একটি নিজস্ব কারখানা ছিল যেখানে এই বিপুল পরিমাণ মাদক তৈরি হচ্ছিল। অপরদিকে, বিজয় মাকওয়ানা এবং হেমন্ত পটেল হলেন দুজন কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার, যারা একটি ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থায় কাজ করতেন এবং তারা মাদক তৈরির কেমিক্যাল প্রক্রিয়াগুলির পেছনে ছিলেন। লালজি ও জয়দীপ তাদের সহকর্মী হিসেবে কাজ করছিলেন এবং পুরো চক্রটি পরিকল্পনা করে মাদক উৎপাদন করছিল।

এটি একটি ভয়াবহ ঘটনা যা সমাজের জন্য বড় ধরনের হুমকি তৈরি করতে পারে। মাদক চক্রের এই অন্ধকার জগত থেকে পুলিশ যে সফল অভিযান চালিয়ে মাদক উদ্ধার করেছে, তা একটি বড় ধরনের জয় বলে বিবেচিত হচ্ছে। তবে, এই অভিযানে শুধুমাত্র কয়েকজন অপরাধীকে গ্রেফতার করা সম্ভব হলেও, পুরো চক্রের শিকড় আরো গভীরে ছড়িয়ে থাকতে পারে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। পুলিশের তদন্ত এখনো চলমান এবং আশা করা হচ্ছে, আরো অনেক তথ্য সামনে আসবে যা এই আন্তর্জাতিক মাদকচক্রের আরও অনেক সদস্যকে সনাক্ত করতে সাহায্য করবে।

এটি যেন আরও একটি সতর্কবার্তা যে, আমাদের সমাজে মাদক এবং অপরাধের বিস্তার কতটা বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে, এবং আমাদের সকলের সচেতন থাকা উচিত এই ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে।

হেলে পড়া বাড়ি: শাসক ও বিরোধীদের তরজা নিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতোর

Read more

Local News