Thursday, January 30, 2025

কাঁদতে কাঁদতে জেহ দৌড়ে পালায়, ছুটে আসেন সইফ: সেই রাতের ভয়াবহ অভিজ্ঞতা নিয়ে মুখ খুললেন ন্যানি

Share

মুম্বইয়ের বান্দ্রার তারকাখচিত এলাকায় সইফ আলি খান ও করিনা কপূর খানের বিলাসবহুল বাড়িতে দুষ্কৃতীর অনুপ্রবেশের ঘটনায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। এই ঘটনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল তাদের ছোট ছেলে জেহ এবং তার ন্যানি এলিয়াম্মা ফিলিপস্। সইফ-করিনার পরিবারের অংশ হয়ে গেল চার বছর ধরে জেহর দেখাশোনা করছেন এলিয়াম্মা। সেই ভয়ংকর রাতের অভিজ্ঞতা নিয়ে এবার মুখ খুললেন তিনি।

ঘটনার সূত্রপাত: অদ্ভুত শব্দে ঘুম ভাঙে ন্যানির

ঘটনাটি ঘটে গভীর রাতে, যখন সবাই ঘুমিয়ে ছিলেন। রাত আড়াইটার দিকে একটি শব্দ শুনতে পান এলিয়াম্মা। প্রথমে তিনি ভেবেছিলেন, করিনা ছেলেকে দেখতে এসেছেন। কিন্তু দ্রুতই বুঝতে পারেন, বিষয়টা স্বাভাবিক নয়। সংবাদমাধ্যমে তিনি বলেন, “আমি ভেবেছিলাম করিনা এসেছেন জেহর খোঁজ নিতে। কিন্তু হঠাৎ মনে হল, কিছু একটা অস্বাভাবিক। উঠে দেখলাম, একজন অপরিচিত মানুষের ছায়া ঘরের মধ্যে নড়ছে।”

সইফ

দুষ্কৃতীর মুখোমুখি ন্যানি

শৌচালয় থেকে বেরিয়ে আসতে দেখা যায় সেই অপরিচিত মানুষটিকে। তিনি সরাসরি জেহর ঘরে ঢোকার চেষ্টা করেন। এই দৃশ্য দেখে সঙ্গে সঙ্গে সতর্ক হয়ে যান এলিয়াম্মা। তিনি নিজেই জানান, “আমি বুঝতে পারলাম, বিপদ ঘনিয়ে আসছে। কাউকে সতর্ক করতে পারিনি, শুধু নিজের সাহস জোগাড় করে জেহকে রক্ষা করতে উদ্যোগী হই।”

এলিয়াম্মা বলেন, “দুষ্কৃতী জেহর ঘরে ঢোকার চেষ্টা করছিল। আমি তাকে ঠেকানোর চেষ্টা করি। কোনও শব্দ না করতে সবাইকে সতর্ক করি। আমি জেহকে কোলে নিয়ে সেখান থেকে পালানোর চেষ্টা করি।” কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত, দুষ্কৃতী তখনই তাদের দেখতে পেয়ে যায়। সে একটি কাঠের লাঠি দিয়ে এলিয়াম্মার ওপর আঘাত করে এবং ধারালো অস্ত্র দিয়ে তার কব্জিতে আঘাত করে।

এক কোটি টাকার দাবি

এই পরিস্থিতিতে এলিয়াম্মা ভয় না পেয়ে দুষ্কৃতীর উদ্দেশে প্রশ্ন করেন, সে কী চায়। তখনই দুষ্কৃতী জানায়, সে এক কোটি টাকা দাবি করছে। তার ভয়ঙ্কর চেহারা এবং আচরণ সত্ত্বেও, এলিয়াম্মা দৃঢ় মনোভাব নিয়ে পরিস্থিতি মোকাবিলা করেন। এই ফাঁকে কাঁদতে কাঁদতে ঘর থেকে পালিয়ে যায় জেহ।

জেহর কান্না শুনে ছুটে আসেন সইফ ও করিনা

জেহর কান্নার আওয়াজে সইফ এবং করিনা ঘুম থেকে জেগে ওঠেন এবং দ্রুত ছুটে আসেন। সইফ ঘটনাস্থলে পৌঁছাতেই দুষ্কৃতী তার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। তখনকার পরিস্থিতি ছিল অত্যন্ত উত্তেজনাপূর্ণ এবং বিপজ্জনক। সইফ নিজের জীবন বাজি রেখে তার পরিবারকে রক্ষা করার চেষ্টা করেন।

নিরাপত্তার গলদ এবং দুষ্কৃতীর পালিয়ে যাওয়া

এই ঘটনার পর থেকেই প্রশ্ন উঠছে, কীভাবে এমন একটি বিলাসবহুল আবাসনে দুষ্কৃতী অনুপ্রবেশ করতে পারল? সিসিটিভি ক্যামেরা থাকা সত্ত্বেও কেন সময়মতো তাকে শনাক্ত করা গেল না? সইফের আবাসনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে এখন তীব্র সমালোচনা হচ্ছে।

ন্যানির সাহসিকতা: একাধিক প্রাণ বাঁচালেন তিনি

এই ঘটনায় এলিয়াম্মার সাহসিকতা বিশেষভাবে প্রশংসিত হয়েছে। নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তিনি জেহকে রক্ষা করেছেন এবং দুষ্কৃতীকে সময়মতো থামানোর চেষ্টা করেছেন। তার উপস্থিত বুদ্ধি এবং নির্ভীক মনোভাবই হয়তো বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে দেয়নি।

সইফের পরিবারের উদ্বেগ ও করিনার আবেদন

এই ঘটনার পর সইফ এবং করিনা অত্যন্ত চিন্তিত। করিনা সমাজমাধ্যমে একটি বার্তা দিয়েছেন, যেখানে তিনি সবাইকে অনুরোধ করেছেন, যেন এই ঘটনার নিয়ে অহেতুক গুজব বা জল্পনা না ছড়ানো হয়। সইফের পরিবার এখন পুরোপুরি মুম্বই পুলিশের ওপর নির্ভর করছে, যারা এই ঘটনার তদন্ত করছে।

শেষ কথা

এই ভয়াবহ ঘটনা শুধু সইফের পরিবারের নয়, গোটা মুম্বইয়ের অভিজাত আবাসনগুলোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েও বড় প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। একজন অপরিচিত ব্যক্তি কীভাবে এত সুরক্ষিত আবাসনের ভিতরে প্রবেশ করতে পারল এবং এমন ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটাতে পারল, তা এখনো রহস্য। দুষ্কৃতী এখনো অধরা। তবে একমাত্র এলিয়াম্মার সাহস এবং উপস্থিত বুদ্ধিই সইফ-করিনার পরিবারকে বড় বিপদ থেকে রক্ষা করেছে।

সইফ আলি খান: ৬টা কোপ, শিরদাঁড়ার পাশেই গভীর ক্ষত সইফের, অবস্থা কি আশঙ্কাজনক?

Read more

Local News