কসবায় উত্তেজনার পারদ চড়ছে
কলকাতার কসবায় উত্তেজনা দিন দিন বাড়ছে। জমি ও বাড়ি সংক্রান্ত বিবাদের কারণে গুলশন কলোনি এবং সংলগ্ন নোনাডাঙা এলাকায় বেশ কিছুদিন ধরেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব চলছিল। কিন্তু কলকাতা পুরসভার এক পুরপ্রতিনিধির ওপর খুনের চেষ্টা এই পরিস্থিতিকে আরও ঘোরালো করে তুলেছে। লালবাজার এবং আনন্দপুর থানার পুলিশ সেখানে টহল দিলেও নতুন করে উত্তেজনা ছড়ানোর আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।
ঘটনার সূত্রপাত
গত সপ্তাহে সুশান্ত ঘোষ নামে এক পুরপ্রতিনিধির ওপর দুষ্কৃতীরা গুলি চালানোর চেষ্টা করে। স্কুটারে চড়ে এসে তার বাড়ির সামনে পিস্তল হাতে আক্রমণ করে তারা। শেষ মুহূর্তে গুলি না চালানোয় সুশান্ত বেঁচে যান। এই ঘটনায় পুলিশ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে। তাদের মধ্যে অন্যতম অভিযুক্ত গুলজার। তদন্তে জানা গেছে, জমি দখল এবং গোষ্ঠী রাজনীতির কারণে সুশান্তকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়েছিল।
জমি ও সিন্ডিকেট দখলের লড়াই
গুলশন কলোনি এবং নোনাডাঙা এলাকায় জমি ও জলাভূমি বুজিয়ে বহুতল নির্মাণের সিন্ডিকেট দীর্ঘদিন ধরে সক্রিয়। পুরপ্রতিনিধি পরিবর্তনের পর থেকে পুরনো গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে সমীকরণ বদলাতে শুরু করে। এই নতুন সমীকরণে ক্ষমতার ভারসাম্য নষ্ট হয়, এবং বেশ কয়েকটি নতুন গোষ্ঠী মাথাচাড়া দেয়। জুলকার ও গুলজারের মতো নেতারা তাদের শক্তি বৃদ্ধির চেষ্টা চালায়।
এলাকা দখলের প্রতিযোগিতা
সুশান্তের ওপর হামলার ঘটনায় গোষ্ঠীগুলির লড়াই আরও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। স্থানীয় সূত্রে খবর, গুলজারের গ্রেপ্তারির পর তার অনুগামীরা এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে। এতে অন্য প্রভাবশালী গোষ্ঠীগুলির মধ্যে চাপা উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। বিরোধী গোষ্ঠীগুলিকে সরিয়ে নিজেদের দখল নিশ্চিত করার প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে।
লালবাজারের সতর্কতা
এলাকার উত্তেজনা থামাতে এবং সংঘর্ষ এড়াতে পুলিশ ২৪ ঘণ্টার টহলদারি চালু করেছে। লালবাজার এবং আনন্দপুর থানার যৌথ প্রচেষ্টায় পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা চলছে। এক পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, “যে কোনও ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমরা সতর্ক এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।”
এই পরিস্থিতি আরও কীভাবে মোড় নেবে, তা এখনই বলা মুশকিল। গোষ্ঠীগত সংঘাত এবং জমি দখলের লড়াইয়ের এই সংকট কসবার সামাজিক এবং রাজনৈতিক পরিবেশকে কীভাবে প্রভাবিত করবে, তা সময়ই বলে দেবে। স্থানীয় বাসিন্দারা আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন এবং দ্রুত শান্তি ফেরার অপেক্ষায় আছেন।

