Friday, March 21, 2025

কলকাতা ও পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে লটারি কেলেঙ্কারি নিয়ে ইডির তদন্ত: তল্লাশি অভিযান জারি

Share

লটারি কেলেঙ্কারি নিয়ে ইডির তদন্ত

রাজ্যের বিভিন্ন অঞ্চলে সম্প্রতি লটারির আড়ালে বিপুল পরিমাণ অর্থের অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে, যা নজরে এনেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। এই মামলার সূত্র ধরে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে কলকাতার লেকটাউন এবং উত্তর ২৪ পরগনার মাইকেল নগরসহ বেশ কিছু জায়গায় তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছে ইডি। এ ধরনের অভিযানে মূলত ইডির বিশেষজ্ঞ দলগুলি গোপন তথ্যানুসন্ধান ও প্রমাণ সংগ্রহে নিয়োজিত থাকে।

লটারি কেলেঙ্কারির অভিযোগ ও তদন্তের পটভূমি

এই অভিযানে মাইকেল নগরে একটি লটারি সংস্থার গুদামে তল্লাশি চালানো হয়েছে। ইডির প্রাথমিক অনুমান, এই চক্রটি রাজ্যের বাইরে থেকেও পরিচালিত হতে পারে এবং এতে প্রভাবশালীদের যোগসাজশ রয়েছে। এছাড়া, এই অনিয়মের জাল কতদূর বিস্তৃত তা নিয়েও তদন্তকারীদের মধ্যে সন্দেহ রয়েছে। ইডির তরফে জানা গেছে, দিল্লি সদর দফতর থেকে বিশেষ দল এসে এই তল্লাশি অভিযান পরিচালনা করছে, যারা আর্থিক প্রতারণার বিভিন্ন দিক বিশ্লেষণ করছেন।

প্রতারণার কৌশল ও আগে ঘটা ঘটনা

এই ধরনের লটারি প্রতারণা নতুন কিছু নয়। এর আগেও ২০২৩ সালের অক্টোবরে উত্তর ২৪ পরগনার মধ্যমগ্রামে একই ধরনের প্রতারণার অভিযোগ উঠে এসেছিল। সেসময় অভিযোগ উঠেছিল যে প্রকৃত বিজেতাদের বঞ্চিত করে, ভুয়া পুরস্কারপ্রাপকদের হাতে কোটি কোটি টাকা তুলে দেওয়ার মাধ্যমে লটারির টাকা নয়ছয় করা হয়েছে। অর্থনৈতিক অনিয়মের বিষয়টি সামনে আসার পর আয়কর দপ্তরও এই কেলেঙ্কারির তদন্তে নামে এবং গুদামে ও ছাপাখানায় তল্লাশি চালায়। প্রভাবশালীদের যোগ এবং রাজনৈতিক সংযোগের সম্ভাবনার কথাও সেই সময় আলোচিত হয়েছিল।

ইডির কার্যক্রম ও ভবিষ্যৎ পদক্ষেপ

ইডির মতে, লটারি প্রতারণা চক্রের আড়ালে বিপুল পরিমাণ বেআইনি টাকা আদান-প্রদান হচ্ছে, যা বেশকিছু প্রভাবশালী ব্যক্তির জন্য লাভজনক ব্যবসা হয়ে উঠেছে। এই কারণে দেশজুড়ে বিশেষত রাজ্যের লটারির গুদাম, ছাপাখানা এবং আর্থিক লেনদেনের কেন্দ্রগুলোতে তল্লাশি চালানোর জন্য ইডি বিশেষ পরিকল্পনা নিয়েছে। তাদের লক্ষ্য একদিকে এই চক্রটি ভেঙে দেওয়া এবং অপরদিকে বেআইনি অর্থের উৎস এবং প্রবাহ বন্ধ করা।

সমাজে প্রতারণার প্রভাব ও সচেতনতা

লটারির এই ধরনের প্রতারণামূলক কর্মকাণ্ড শুধু অর্থনীতির ওপর চাপ ফেলে না, এটি সাধারণ মানুষকেও বিভ্রান্ত করে। সাধারণ নাগরিকরা নিজেদের সম্পদ ও অর্থ সঞ্চয়ে বিশ্বাস করে লটারি কিনে থাকেন, অথচ এসব প্রতারণার কারণে তারা হতাশ ও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। ইডির এই পদক্ষেপ সাধারণ মানুষকে সচেতন করার পাশাপাশি বেআইনি কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে কড়া বার্তা দিচ্ছে।

সমাজের বৃহত্তর পরিসরে ইডির অভিযান ও সতর্কবার্তা

সরকারও এই ধরনের বেআইনি কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছে। সমাজমাধ্যমের মাধ্যমে প্রচার এবং লোকসচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে, যাতে সাধারণ মানুষ প্রতারণার হাত থেকে নিজেদের সুরক্ষিত রাখতে পারেন। ইডির মতাদর্শের মূলকথা হলো—এই ধরনের অপরাধী চক্র যতই শক্তিশালী হোক না কেন, আইনের চোখ ফাঁকি দিয়ে বেশিদিন টিকে থাকা সম্ভব নয়।

এভাবে ইডি ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সমন্বিত প্রচেষ্টা সমাজের বুকে লুকিয়ে থাকা এসব প্রতারণার চক্রকে উন্মোচিত করবে এবং সাধারণ মানুষকে সুরক্ষিত রাখবে।

Read more

Local News