Monday, March 31, 2025

কলকাতায় ম্যান সিটির স্কুল- বাণিজ্য সম্মেলনের মঞ্চে এই চুক্তি সম্পন্ন হয়

Share

কলকাতায় ম্যান সিটির স্কুল

মঙ্গলবার, লন্ডনে আয়োজিত বাণিজ্য সম্মেলনের মঞ্চে এই চুক্তি সম্পন্ন হয়। ম্যান সিটির তরফে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে তুলে দেওয়া হয় ক্লাবের সিগনেচার জার্সি। টেকনো ইন্ডিয়ার পক্ষে দেবদূত রায়চৌধুরী এবং ম্যান সিটির প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। বাংলার তরুণ ফুটবল প্রতিভাদের আন্তর্জাতিক মানের প্রশিক্ষণ দেওয়ার লক্ষ্যেই এই উদ্যোগ।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানালেন, ‘‘ফুটবল বাংলার আবেগ। কলকাতায় ম্যান সিটির মতো বিশ্বখ্যাত ক্লাবের স্কুল তৈরি হবে, এটাই বাংলার ক্রীড়াজগতের জন্য গর্বের বিষয়।’’

নীরবতা যখন প্ল্যাটিনামের মতো দামি

রাজনীতি মানেই বিতর্ক আর সমালোচনা। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানেন, কখন কীভাবে উত্তর দিতে হয়। ‘‘সাইলেন্স ইজ প্ল্যাটিনাম’’— লন্ডনে এক আলোচনায় মুখ্যমন্ত্রী নিজেই বললেন এই কথা। তিনি মনে করেন, নীরবতার মূল্য হীরের চেয়েও বেশি।

সমালোচনায় কান না দিয়ে নিজের লক্ষ্যে এগিয়ে যাওয়াই তার পন্থা। মুখ্যমন্ত্রীর স্পষ্ট বক্তব্য, ‘‘যারা নিন্দা করবে, তারা করবেই। আমি আমার কাজ করে যাব।’’ এমন আত্মবিশ্বাসী মন্তব্যে তার রাজনৈতিক অভিজ্ঞতার ছাপ স্পষ্ট।

ঠান্ডায় ‘পাকামি’ নয়

লন্ডনের হাড়কাঁপানো ঠান্ডায় সফরসঙ্গীদের যত্ন নিতে ভুলছেন না মমতা। শীতবস্ত্র না পরে বেরোলে স্নেহসুলভ ধমকও দিচ্ছেন তিনি। শিল্পসচিব বন্দনা যাদবকে সোয়েটার পরতে বলেই ক্ষান্ত নন, প্রয়োজনে নিজের সোয়েটার ধার দেওয়ার প্রস্তাবও দিয়েছেন। ‘‘ঠান্ডা লেগে যাবে, পাকামি কোরো না!’’— দিদির এই সাবধানবাণী তার সহজ-সরল ব্যক্তিত্বেরই প্রতিফলন।

মাঠের ডাক

ফুটবলের প্রতি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভালোবাসা কারও অজানা নয়। সেন্ট জেমস কোর্ট হোটেলের কাছে শিশুদের ফুটবল প্রশিক্ষণ চলতে দেখে দাঁড়িয়ে পড়লেন তিনি। উৎসাহ দেখে মনে হচ্ছিল, সুযোগ পেলেই মাঠে নেমে কয়েকটা শট নিতে দ্বিধা করবেন না! ভারতীয় হাই কমিশনারও কলকাতার ফুটবলপ্রেমের কথা তুলে ধরলেন, মোহনবাগান ও ইস্টবেঙ্গলের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বিতার কথা মনে করিয়ে দিলেন।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও গর্বভরে বললেন, ‘‘এখন তো কলকাতা ক্রিকেটেও এগিয়ে। সৌরভ গাঙ্গুলির মতো কিংবদন্তি আমাদের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর, সঞ্জীব গোয়েঙ্কা আইপিএল দলও কিনেছেন।’’ বাংলার খেলাধুলোর প্রতি তার আবেগ স্পষ্ট।

রবীন্দ্রসুরে প্রাণের আবেদন

বাংলার কৃষ্টি আর সংস্কৃতির কথা বলতে গিয়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে স্মরণ না করা যেন অসম্পূর্ণ। লন্ডনের ভারতীয় হাই কমিশনে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে নিজের লেখা কবিতা না পড়লেও মমতা গাইলেন রবিঠাকুরের গান, ‘‘প্রাণ ভরিয়ে, তৃষা হরিয়ে, মোরে আরও আরও আরও দাও প্রাণ।’’

তার কণ্ঠে এই গান যেন প্রাণ পেল নতুন আবেদন। শুধু কূটনৈতিক সৌজন্য নয়, রবীন্দ্রসংগীতের এই পরিবেশনা প্রবাসী বাঙালিদের মনেও দোলা দিল।

উপসংহার

লন্ডন সফরে বাণিজ্য থেকে ক্রীড়া, রাজনীতি থেকে সংস্কৃতি— মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছুঁয়ে গেলেন সবকিছুই। কলকাতার ফুটবলের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের আশ্বাস, রাজনীতিতে নীরবতার মূল্যবোধ আর রবীন্দ্রসুরে প্রাণের আহ্বান— সব মিলিয়ে তার সফর স্মরণীয় হয়ে রইল। বাংলার ক্রীড়াপ্রেমীরা অপেক্ষায়, কবে মাঠে গড়াবে ম্যান সিটির স্কুলের প্রথম প্রশিক্ষণ সেশন।

কনকনে ঠান্ডায় লন্ডনে মমতা: বিলেতে শুরু ছয় দিনের কর্মসূচি!

Read more

Local News