Sunday, February 23, 2025

কর্নাটকের পরে গুজরাতে এইচএমপিভির হানা! শিশুদের যত্নে বিশেষ পরামর্শ চিকিৎসকদের

Share

গুজরাতে এইচএমপিভির হানা

ভারতে হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাস (এইচএমপিভি)-এর সংক্রমণের খবর উঠে আসায় অভিভাবকদের মধ্যে উদ্বেগ ছড়িয়েছে। কর্নাটকের পর গুজরাতেও এই ভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। তবে চিকিৎসকদের মতে, এই ভাইরাস কোভিডের মতো প্রাণঘাতী নয়। শিশুদের ক্ষেত্রে এটি সঠিক যত্ন এবং সতর্কতার মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।

এইচএমপিভি: সংক্রমণের প্রকৃতি এবং প্রভাব

বেঙ্গালুরুতে আট মাস এবং তিন মাস বয়সি দুই শিশুর শরীরে এইচএমপিভির সংক্রমণ শনাক্ত করা হয়েছে। গুজরাতেও নতুন করে এর সংক্রমণ দেখা গেছে। তবে কেন্দ্র জানিয়েছে, চিনে যে এইচএমপিভি ভাইরাস ছড়িয়েছে, তার সঙ্গে ভারতের সংক্রমণের কোনও সম্পর্ক নেই।

চিকিৎসক সুবর্ণ গোস্বামী বলেন, “এইচএমপিভি নতুন কোনও ভাইরাস নয়। শীতকালে সাধারণত যেসব ভাইরাসের সংক্রমণ ঘটে, এটি তাদের মধ্যে অন্যতম। এই ভাইরাসের কারণে সর্দি-কাশি বা সামান্য জ্বর হতে পারে, যা সাধারণত পাঁচ থেকে ছয় দিনের মধ্যেই সেরে যায়। খুব বেশি ক্ষেত্রে চিকিৎসার প্রয়োজন পড়ে না।”

তবে এই ভাইরাস মূলত চার থেকে চোদ্দ বছর বয়সি শিশুদের মধ্যে বেশি ছড়ায়। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকা শিশু এবং যারা কোনও ক্রনিক অসুখে ভুগছে, তাদের ক্ষেত্রে এই ভাইরাস কিছুটা বেশি বিপজ্জনক হতে পারে।

এইচএমপিভির

সদ্যোজাত এবং ছোট শিশুদের সংক্রমণের আশঙ্কা

চিকিৎসকরা বলছেন, সদ্যোজাত শিশুরা তুলনামূলক সুরক্ষিত। মায়ের থেকে প্রাপ্ত অ্যান্টিবডি তাদের অনেক ভাইরাসজনিত রোগ থেকে রক্ষা করে। কোভিডের মতোই, এইচএমপিভি-ও সদ্যোজাতদের মধ্যে তেমন গুরুতর প্রভাব ফেলেনি।

তবে চার বছরের বেশি বয়সি শিশুদের মধ্যে জ্বর, সর্দি বা কাশি দেখা দিলে তাদের স্কুলে না পাঠানোর পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসক সুবর্ণ গোস্বামী। একই সঙ্গে শিশুদের বদ্ধ পরিবেশ, যেমন পুল কার বা ভিড় বাসে যাওয়ার সময় মাস্ক পরার বিষয়েও জোর দিয়েছেন তিনি।

চিকিৎসক শুভম সাহার মতে, “এইচএমপিভি কোভিডের মতো প্রাণঘাতী নয়। তবে শিশুদের এবং বয়স্কদের সংক্রমণ থেকে রক্ষা করতে পরিচ্ছন্নতা ও সতর্কতার প্রয়োজন।”

শিশুদের সংক্রমণ থেকে দূরে রাখতে যা করবেন

১. পরিচ্ছন্নতার অভ্যাস গড়ে তুলুন:
সংক্রমণ ঠেকাতে সবচেয়ে কার্যকরী উপায় হলো পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা। শিশুদের বারবার হাত ধোয়ার অভ্যাস শেখান। শুধু খাবারের আগে নয়, যে কোনও খাবার বা চকলেট খাওয়ার আগে হাত সাবান দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে।

২. বাইরে থেকে ফিরে পরিষ্কার হোন:
বাইরে থেকে ফিরে সোজা বাথরুমে যান। পোশাক বদলে হাত-মুখ ধুয়ে তবেই শিশুর কাছে যান। বাইরের সংস্পর্শ থেকে আপনার সঙ্গে ভাইরাস বাড়িতে আসতে পারে।

৩. অ্যালার্জি বা হাঁপানি থাকা শিশুদের প্রতি বিশেষ যত্ন:
যেসব শিশুর হাঁপানি বা অ্যালার্জিজনিত সর্দি-কাশির প্রবণতা আছে, তাদের বাইরে মাস্ক ব্যবহার করতে বলুন। শীতকালে এই ধরনের সমস্যা বেড়ে যেতে পারে।

  1. ড্রপলেট থেকে দূরে থাকুন:
    এইচএমপিভি ড্রপলেটের মাধ্যমে ছড়ায়। হাঁচি-কাশি থেকে ভাইরাস ছড়ানোর আশঙ্কা বেশি। যেসব ব্যক্তি সর্দি-কাশিতে ভুগছেন, তাদের কাছ থেকে শিশুদের দূরে রাখুন।

এইচএমপিভি নিয়ে চিকিৎসকদের বার্তা

চিকিৎসকরা আশ্বস্ত করছেন, এইচএমপিভি নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই। তবে সর্দি-কাশি বা জ্বর নিয়ে অবহেলা করা ঠিক হবে না। শিশুদের ভালো করে বিশ্রাম দেওয়া এবং তাদের খাদ্যাভ্যাসে পুষ্টিকর খাবার অন্তর্ভুক্ত করা জরুরি।

উপসংহার

এইচএমপিভি সংক্রমণ গুরুতর হলেও তা সঠিক যত্নের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। অভিভাবকদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হলো, শিশুদের স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতন থাকা এবং প্রাথমিক সতর্কতা বজায় রাখা। চিনের পর ভারতে এই ভাইরাস নিয়ে উদ্বেগ থাকলেও চিকিৎসকদের মতে, সতর্ক থাকলেই এই সংক্রমণ রোধ করা সম্ভব।

বাবা বাসচালক, ৩০০০ টাকা পারিশ্রমিক থেকে ব্যক্তিগত বিমান! ৪১ বছরে দিলজিতের সম্পত্তি কত?

Read more

Local News