ওয়াকফ বিল নিয়ে তুমুল বিতর্ক!
ভারতে ওয়াকফ বোর্ডের ক্ষমতা কমানোর প্রস্তাব এনে নতুন ওয়াকফ (সংশোধনী) বিল পেশ করতে চলেছে মোদী সরকার। তবে এই বিলের বিরুদ্ধে এবার বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’ একসঙ্গে লড়াইয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বুধবার (২ এপ্রিল) লোকসভায় এই বিল উত্থাপিত হবে, আর বৃহস্পতিবার (৩ এপ্রিল) তা রাজ্যসভায় পেশ করা হবে। বিরোধীদের কড়া আপত্তির মুখে শেষ পর্যন্ত বিজেপি সরকার বিলটি পাশ করাতে পারে কি না, তা নিয়েই চলছে জল্পনা।
বিরোধীদের কৌশল: ঐক্যবদ্ধ লড়াই
🔴 ‘ইন্ডিয়া’ জোট ইতিমধ্যেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তারা একসঙ্গে বিলের বিরোধিতা করবে।
🔵 কংগ্রেস সাংসদ কেসি বেণুগোপাল জানান, সব দল মিলে ‘ইন্ডিয়া’ জোটের সাংসদরা একযোগে বিলের বিরুদ্ধে ভোট দেবেন।
🟡 কেরলের আরএসপি সাংসদ এনকে প্রেমচন্দ্রন বলেন, “ঐকমত্যের ভিত্তিতে আমরা বিলের বিরুদ্ধে ভোটদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”
এদিকে, বিজেপি সংসদীয় দলের তরফে তাদের সাংসদদের বিল পাশ করাতে উপস্থিত থাকার জন্য হুইপ জারি করা হয়েছে। অর্থাৎ, এই বিল নিয়ে সংসদে তুমুল উত্তেজনা ও বিতর্ক হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল।
কেন বিরোধীরা বিরোধিতা করছে?
👉 ৮ অগস্ট, ২০২৪ সালে কেন্দ্রীয় সংখ্যালঘু মন্ত্রী কিরেন রিজিজু লোকসভায় ওয়াকফ (সংশোধনী) বিল উত্থাপন করেন।
👉 বিরোধীরা অভিযোগ তোলে, এই বিল মুসলিম সম্প্রদায়ের ধর্মীয় স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করবে এবং ওয়াকফ বোর্ডকে সম্পূর্ণ সরকারি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসবে।
👉 কংগ্রেস, তৃণমূলসহ অন্যান্য বিরোধী দলগুলো মনে করে, এই বিল পাস হলে ওয়াকফ বোর্ডের ক্ষমতা খর্ব হবে এবং সরকারি আধিকারিকরা মুসলিমদের ধর্মীয় সম্পত্তির ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে পারবে।
কী আছে নতুন ওয়াকফ বিল ২০২৫-এ?
✅ ওয়াকফ বোর্ডের ক্ষমতা কমিয়ে দেবে সরকার।
✅ কোনো সম্পত্তি ওয়াকফ হবে কি না, সেই সিদ্ধান্ত নেবে জেলাশাসক বা সমপদমর্যাদার সরকারি আধিকারিক।
✅ ওয়াকফ বোর্ডের দুই সদস্য অমুসলিম হবেন।
✅ ওয়াকফ সম্পত্তির নথিভুক্তি কেন্দ্রীয় পোর্টালের মাধ্যমে হবে।
✅ সরকার ওয়াকফ বোর্ডের দখলকৃত জমির পর্যালোচনা করতে পারবে।
বিরোধীদের মতে, এই পরিবর্তনগুলো মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য ক্ষতিকর এবং ধর্মীয় সম্পত্তির ওপর সরকারের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার ষড়যন্ত্র।
বিল পাশ করাতে পারবে বিজেপি?
🟠 সংসদীয় সংখ্যা গরিষ্ঠতা বজায় থাকলেও বিজেপির শরিক দলগুলো এখনো দ্বিধায় রয়েছে।
🟢 অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডু ইতিমধ্যেই মুসলিমদের পাশে দাঁড়িয়ে ওয়াকফ সম্পত্তি রক্ষার ডাক দিয়েছেন।
🔴 বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের দলও এই বিলের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে পারে।
🟣 টিডিপি ও জেডিইউ যদি বিরোধীদের সঙ্গে আসে, তাহলে লোকসভায় বিল পাশ করাতে অসুবিধায় পড়তে পারে মোদী সরকার।
সংসদে সংঘাতের আশঙ্কা!
✅ ‘ইন্ডিয়া’ জোটের বিরোধিতার কারণে লোকসভায় উত্তপ্ত বিতর্ক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
✅ বিজেপি যদি তাদের সংখ্যাগরিষ্ঠতার সুবিধা নিয়ে বিলটি পাশ করাতে চায়, তাহলে বিরোধীরা তীব্র বিক্ষোভ দেখাবে।
✅ যদি রাজ্যসভায় বিল পাস করানো কঠিন হয়ে যায়, তাহলে মোদী সরকারকে বিকল্প পথ খুঁজতে হবে।
এদিকে, এই বিল নিয়ে মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যেও বিপুল অসন্তোষ রয়েছে। অনেকেই মনে করছেন, এটি মুসলিমদের ধর্মীয় স্বায়ত্তশাসন খর্ব করার চেষ্টা।
শেষ পর্যন্ত কী হবে?
👉 বিজেপি যদি শরিক দলগুলোর সমর্থন পায়, তাহলে সহজেই বিলটি পাস হবে।
👉 যদি জেডিইউ বা টিডিপি পিছিয়ে আসে, তাহলে বিরোধীদের শক্তিশালী প্রতিরোধের মুখে পড়তে পারে মোদী সরকার।
👉 রাজ্যসভায় বিরোধীদের অবস্থান বেশি শক্তিশালী, তাই সেখানেও চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে বিলটি।
পরবর্তী ২৪ ঘণ্টা ভারতের রাজনীতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে! 🚨🔥
ট্রাম্পের ‘পাল্টা শুল্ক’ ঘোষণার অপেক্ষায় বিশ্ব, ভারতের চিন্তা বাড়ছে!

