ওজন বাড়লে কটাক্ষ কেন?
সবসময় স্পষ্টবাদী স্বরা ভাস্কর আবারও মুখ খুললেন সামাজিক কটাক্ষের বিরুদ্ধে। ব্যক্তিগত মতামতের জন্য আগেও বহুবার সমালোচিত হয়েছেন তিনি। এবার ওজন বৃদ্ধি নিয়ে ট্রোলড হওয়ার প্রসঙ্গে বলিউড তারকা ঐশ্বর্যা রাইয়ের উদাহরণ টেনে প্রশ্ন তুললেন স্বরা।
মহিলাদের শরীর নিয়ে সবসময় কাটাছেঁড়া!
২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে কন্যাসন্তান রাবিয়ার জন্ম দেন স্বরা। মা হওয়ার পর তাঁর স্বাভাবিক শারীরিক পরিবর্তন হয়েছে, যা নিয়ে শুরু হয় সমাজমাধ্যমে কটাক্ষ। তবে এই প্রবণতা নতুন কিছু নয়। স্বরার দাবি, মহিলারা ওজন কমালেও কটাক্ষের শিকার হন, বাড়ালেও নিন্দার মুখে পড়তে হয়। সমাজে নারীদের সবসময়ই এক বিশেষ ছাঁচে ফেলার প্রবণতা দেখা যায়।
এক সাক্ষাৎকারে স্বরা বলেন, “মহিলাদের জীবনের প্রতিটি দিক নিয়েই কথা বলা হয়, বিশ্লেষণ করা হয়, এমনকি তাঁদের মাতৃত্বও বাদ যায় না। একজন নারী যদি মা হন, তবে তাঁর শরীরের পরিবর্তন নিয়েও প্রশ্ন ওঠে! অথচ পুরুষদের ক্ষেত্রে এই ধরনের সমালোচনা হয় না।”
ঐশ্বর্যার মতো তারকাও বাদ যান না!
স্বরা মনে করিয়ে দেন, এমনকি বলিউডের অন্যতম সুন্দরী তারকা ঐশ্বর্যা রাই বচ্চনও এ ধরনের ট্রোলিংয়ের শিকার হয়েছিলেন। মা হওয়ার পর তাঁর ওজন কিছুটা বেড়ে গিয়েছিল, যা নিয়ে সমাজমাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়। এক সাক্ষাৎকারে ঐশ্বর্যাকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, তিনি কবে আবার ‘স্লিম’ হয়ে ফিরবেন? তিনি অত্যন্ত ভদ্রভাবে উত্তর দিয়েছিলেন, ‘সন্তান আসার পরে এটাই আমার জীবন। এই ভাবেই আমি বাঁচছি।’ ঐশ্বর্যার এই উত্তর স্বরার মনে গভীরভাবে দাগ কেটেছিল।
এই উদাহরণ টেনে স্বরা বলেন, “যে নারীকে গোটা বিশ্ব ‘সবচেয়ে সুন্দরী’ বলে মনে করে, তাকেও যদি এই ধরনের কটাক্ষের শিকার হতে হয়, তাহলে আমি তো সাধারণ একজন মানুষ। তাহলে আমাকেও ছেড়ে কথা বলবে কেন?”
কেন শুধু নারীদেরই শারীরিক পরিবর্তন নিয়ে এত আলোচনা?
স্বরার মতে, সমাজে এখনো এমন মানসিকতা প্রচলিত যে, নারীদের অবশ্যই ‘একটা নির্দিষ্ট আকৃতি’ ধরে রাখতে হবে। তাঁরা মা হোন বা না হোন, তাঁদের চেহারা নিয়ে সবসময় এক ধরনের অযাচিত মন্তব্য ধেয়ে আসে। “আমরা কি সবসময় একই রকম থাকতে পারি? শরীর তো জীবনেরই অংশ, পরিবর্তন হবেই,” বলেন তিনি।
সুন্দরতা মানে আত্মবিশ্বাস
স্বরার মতে, সৌন্দর্য শুধু বাহ্যিক নয়, বরং আত্মবিশ্বাসের মধ্যে লুকিয়ে থাকে। তিনি বলেন, “সুন্দরতা মানে শুধু রোগা হওয়া নয়, সুন্দরতা হল নিজের শরীরকে ভালোবাসা, আত্মবিশ্বাস রাখা।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের উচিত সমাজের এই ধারণাগুলোর পরিবর্তন ঘটানো। প্রত্যেক নারী যেন নিজের শরীর ও জীবনের সিদ্ধান্ত নিজেই নিতে পারে, বাইরের সমালোচনার চাপে না পড়ে।”
নারীর শরীর নিয়ে কটাক্ষের যুগ কি শেষ হবে?
স্বরা মনে করেন, সমাজের এই দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করতে হলে নারীদেরই নিজেদের পক্ষে কথা বলতে হবে। “যতক্ষণ না আমরা প্রতিবাদ করব, ততক্ষণ পর্যন্ত এই অন্যায় চলতেই থাকবে,” বলেন তিনি।
এই প্রসঙ্গে স্বরার বক্তব্য একটাই— ওজন বাড়ুক বা কমুক, শরীর নিয়ে ট্রোল করা বন্ধ হওয়া দরকার। প্রত্যেকেরই নিজের মতো করে সুন্দর থাকার অধিকার রয়েছে।
গোটা রান্না: সরস্বতী পুজোয় পূর্ব বাংলার ঐতিহ্য, চচ্চড়ির স্বাদে নতুনত্ব