Monday, December 1, 2025

এসএসসি নিয়োগ বাতিল: হাই কোর্টের রায়ে বিপাকে প্রার্থীরা, সুপ্রিম কোর্টের দারস্থ

Share

এসএসসি নিয়োগ বাতিল!

পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই বিতর্ক চলছিল। এবার কলকাতা হাই কোর্টের এক গুরুত্বপূর্ণ রায়ে সেই বিতর্ক আরও জটিল হয়ে উঠেছে। হাই কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, স্কুল সার্ভিস কমিশনের (SSC) মাধ্যমে ২০১৬ সালের পর নিয়োগ হওয়া হাজার হাজার প্রার্থীর চাকরি বাতিলের মুখে। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত প্রার্থীরা এবার সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

কী ঘটেছিল?

২০১৬ সালের পর শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় দুর্নীতি হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। তার তদন্তে উঠে আসে অনেক অনিয়মের প্রমাণ। কলকাতা হাই কোর্ট জানিয়ে দেয়, নিয়োগে বৈধতা নেই। ফলে আপাতত যাঁদের চাকরি হয়েছে, তাঁদের কাজ স্থগিত রাখতে হবে। এর ফলে প্রায় ২৩ হাজার প্রার্থী সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বলে জানা যাচ্ছে।

প্রার্থীদের প্রতিক্রিয়া

চাকরি হারানোর আশঙ্কায় প্রার্থীরা স্বাভাবিক ভাবেই হতাশ ও ক্ষুব্ধ। অনেকেই জানিয়েছেন, তাঁরা দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে আসছেন। পরিবারের একমাত্র রোজগেরে সদস্য অনেকেই। এই পরিস্থিতিতে হঠাৎ চাকরি হারানো মানে পথে বসা।

কিছু প্রার্থী সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, “আমরা চাকরিতে ঢোকার আগে সমস্ত নিয়ম মেনেই পরীক্ষা দিয়েছি। পরে যদি কোথাও ভুল থেকে থাকে, সেটা তো আমাদের দোষ নয়। হঠাৎ করে আমাদের চাকরি চলে গেলে আমাদের পরিবার কীভাবে চলবে?”

সুপ্রিম কোর্টের দারস্থ হওয়ার সিদ্ধান্ত

এই পরিস্থিতিতে ক্ষতিগ্রস্ত প্রার্থীরা সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তাঁদের দাবি, আদালতের নির্দেশে ন্যায়বিচার হোক, কিন্তু যারা প্রকৃত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে নিয়োগ পেয়েছেন, তাঁদের যেন বাদ দেওয়া না হয়।

আইনজীবীদের মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন ইতিমধ্যেই জমা পড়েছে বলে জানা গিয়েছে। আশা করা হচ্ছে, আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই শুনানি হবে।

সরকারের ভূমিকা

পশ্চিমবঙ্গ সরকারও এই পরিস্থিতি নিয়ে চিন্তিত। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, “যারা সত্যি সত্যি পরীক্ষা দিয়ে চাকরি পেয়েছে, তাদের পাশে আমরা আছি।” তবে একই সঙ্গে তিনি দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়ার কথাও বলেছেন।

সরকার সূত্রে খবর, আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী ইতিমধ্যেই স্কুল শিক্ষা দফতর প্রয়োজনীয় নথিপত্র প্রস্তুত করছে। তবে সরকারও চাইছে, যাঁরা সম্পূর্ণ বৈধ নিয়মে চাকরি পেয়েছেন, তাঁদের যেন চাকরি না যায়।

পরবর্তী পদক্ষেপ

এই মামলার ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের উপর। আইনজীবী মহলের মতে, শীর্ষ আদালত যদি অন্তর্বর্তীকালীন রায় দেয়, তাহলে অন্তত কিছুটা স্বস্তি মিলতে পারে প্রার্থীদের মধ্যে।

শেষ কথা

বলা যায়, শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত এই বিতর্ক শুধু আইনি লড়াই নয়, হাজার হাজার পরিবারকে নিয়ে এক সামাজিক ও অর্থনৈতিক সংকট। এখন নজর রয়েছে সুপ্রিম কোর্টের উপর। আদালত কী রায় দেয়, সেটাই ঠিক করবে এই প্রার্থীদের ভবিষ্যৎ।

গোপালগঞ্জে উত্তেজনা: ‘নাইন সিরকার’ ওসাম চারজনের মৃত্যু, কারফিউ জারি

Read more

Local News