একই এপিক নম্বর মানেই ভুয়ো ভোটার নয়!
রাজ্যের ভোটার তালিকা নিয়ে উত্তপ্ত রাজনীতি। একাধিক ভোটারের একই এপিক (EPIC) নম্বর থাকার অভিযোগ ঘিরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরব হয়েছেন। তিনি দাবি করেছেন, বাংলার ভোটার তালিকায় ভিন্রাজ্যের লোকদের নাম ঢোকানো হচ্ছে, যা সুষ্ঠু নির্বাচনের ক্ষেত্রে বড় বাধা হতে পারে। তবে এবার এই বিতর্ক নিয়ে ব্যাখ্যা দিল নির্বাচন কমিশন। তাদের স্পষ্ট বক্তব্য— একই এপিক নম্বর থাকা মানেই ভোটার ভুয়ো নয়!
📜 কমিশনের ব্যাখ্যা: কেন একাধিক ভোটারের একই নম্বর?
নির্বাচন কমিশনের জারি করা বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে—
✅ একই এপিক নম্বর থাকা মানেই ভুয়ো ভোটার নয়। কারণ, ভোটার তালিকায় নিবন্ধনের সময় ভোটারদের বিভিন্ন তথ্য যাচাই হয়।
✅ একই নম্বর থাকলেও ভোটারদের কেন্দ্র আলাদা হয়। অর্থাৎ, এক ব্যক্তির নামে থাকা এপিক নম্বর দিয়ে অন্য কেউ অন্য রাজ্যে ভোট দিতে পারবেন না।
✅ কমিশন স্বীকার করেছে যে একই নম্বরের একাধিক ভোটার কার্ডের সমস্যা রয়েছে। ভবিষ্যতে যাতে এই সমস্যা না থাকে, তা নিশ্চিত করতে তারা কাজ করছে।
এই ব্যাখ্যা দিয়েই কমিশন বুঝিয়ে দিয়েছে, ভোটার তালিকা নিয়ে ওঠা অভিযোগের সবটাই বাস্তবসম্মত নয়।
🔥 মমতার অভিযোগ: এপিক নম্বরে কারচুপি!
বিধানসভা নির্বাচনের এখনও প্রায় এক বছর বাকি, কিন্তু ভোটার তালিকা নিয়ে রাজনৈতিক বিতর্ক তুঙ্গে।
📌 মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্প্রতি অভিযোগ করেছেন—
➡️ বাংলার ভোটারদের একই এপিক নম্বরে হরিয়ানা, গুজরাত, মহারাষ্ট্রের ব্যক্তিদের নাম তোলা হচ্ছে।
➡️ মুর্শিদাবাদের রানিনগর এবং উত্তরবঙ্গের গঙ্গারামপুর থেকে এমন বেশ কিছু ঘটনা সামনে এসেছে।
➡️ ফিল্ড সার্ভে না করে অনলাইন ভিত্তিক অপারেশন চালিয়ে ভোটার তালিকায় ‘ভূতুড়ে’ নাম তোলা হচ্ছে।
এমনকি, মমতা দাবি করেছেন— এই কাজ বিজেপি ও নির্বাচন কমিশনের মদতে করা হচ্ছে!
🔍 ভোটার কার্ড ও আধারের তুলনা: প্রশ্ন উঠছে কেন?
নাগরিকদের পরিচয়ের জন্য আধার কার্ডের নম্বর একক এবং অনন্য। কারও সঙ্গে কারও মিল হয় না।
👉 তাহলে ভোটার কার্ডের ক্ষেত্রেও কি তেমন হওয়া উচিত নয়?
কমিশনের ব্যাখ্যা অনুযায়ী, এর আগে কিছু প্রযুক্তিগত কারণে একই এপিক নম্বর ইস্যু হয়ে থাকতে পারে। তবে এটি দ্রুত ঠিক করা হবে এবং ভবিষ্যতে যাতে এই সমস্যা না থাকে, তা নিশ্চিত করা হবে।
⚖️ রাজনৈতিক তরজা: বিজেপি বনাম তৃণমূল
এই ইস্যুতে রাজ্যের দুই প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী দল তৃণমূল কংগ্রেস ও বিজেপির মধ্যে রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়েছে।
🗣️ তৃণমূলের অভিযোগ— বিজেপি ভোটার তালিকায় কারচুপি করছে, যাতে বহিরাগত ভোটার ঢুকিয়ে বাংলার ভোটে প্রভাব ফেলা যায়।
🗣️ বিজেপির পাল্টা দাবি— তৃণমূল নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে ভিত্তিহীন অভিযোগ করছে। তারা চাইছে, ভোটার তালিকা সংশোধনের নামে নিজেদের সুবিধাজনকভাবে ভোটার যোগ-বিয়োগ করতে।
নির্বাচন কমিশনের সাম্প্রতিক ব্যাখ্যা পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত করতে পারলেও, ভোটের আবহ যত গরম হবে, এই বিতর্ক আরও বাড়বে বলেই মনে করা হচ্ছে।
🔎 তাহলে এবার কী করবে কমিশন?
নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে—
✔️ এক ব্যক্তি একাধিক জায়গায় ভোট দিতে পারবেন না।
✔️ ভোটার কার্ডের অনন্যতা বজায় রাখার জন্য নতুন নিয়ম কার্যকর করা হবে।
✔️ ভোটার তালিকা পুনরায় যাচাই করা হবে।
তবে কমিশনের ব্যাখ্যার পরেও অনেকের মনে প্রশ্ন রয়ে গেছে—
👉 এতদিন ধরে এই সমস্যা থেকে গেল কেন?
👉 ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটেও কি এই ধরনের কারচুপি হয়েছিল?
👉 এপিক নম্বর এক থাকলে তা বদলাতে কেন এত দেরি করা হচ্ছে?
এই প্রশ্নের জবাব এখনো পুরোপুরি মেলেনি। তবে একটা বিষয় স্পষ্ট— ভোটের আগে এই বিতর্ক আরও বড় হবে এবং রাজনৈতিক দলগুলি একে প্রচারের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করবে!