উর্ফি জাভেদের অনন্য শরীরচর্চার গল্প!
বলিউড তারকা নয়, বরং অনলাইন আইকন উর্ফি জাভেদের জীবনযাপন অনেক সময়ই আমাদের সাধারণ ধারণাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। সম্প্রতি তিনি এক স্বীকারোক্তিতে জানিয়েছেন—এক সময় তার দিনে মাত্র তিন থেকে চার টুকরো চিকেন খেতে হতো এবং নামতেই বাধা দিতেন, শুধুভাবে তাঁকে ‘অত্যন্ত পাতলা দেখাতে’।
স্বীকারোক্তি: গোপন কষ্টের কথা
তিনি জানিয়েছেন, তিন‑চার বছর আগে তাঁর সঙ্গে যা হয়েছিল তা বডি ডিসমরফিয়া নামে পরিচিত একটি মানসিক সমস্যা। তাঁর উদ্দেশ্য ছিল “অত্যন্ত পাতলা” হওয়া। তাই তিনি প্রায় কিছুই খেতেন না—প্রাত্যহিক খাবারে প্রায়শই টানা রটিন ছিল মাত্র কয়েকটি চিকেন টুকরো, ব্যায়াম করেননি, শুধু দৌড়তেন। ফলে শারীরিক না কী, মনোভাবই ভেঙে পড়েছিল—বললেন, “মানসিকভাবে আমি চরম বিপর্যস্ত ছিলাম” ।
একবার কেউ তাঁকে কথা বললে তিনি নিজেকে বিরক্ত মনে করতেন, এমনকি বিরক্ত হয়ে বলতে চাইতেন কিংবা ভাবতেন—“তুমি আমার সঙ্গে কথা কেন বলছ?”—মনশ্চাপ তাঁদের দৈনিক সঙ্গী হয়েছিল।
পরিবর্তনের পথ: স্বীকৃতি, রিকভারি ও পুনর্নির্মাণ
শেষ পর্যন্ত উর্ফি উপলব্ধি করেন—এই অস্বাস্থ্যকর ধারণা ও অভ্যাস তাঁকে শক্তিশালী করেছেন না, বরং ক্ষতক্ষতি দিয়েছেন। ধাপে ধাপে তিনি নিজেকে বেরিয়ে আসতে শুরু করেন:
- এখন তিনি জিমে গিয়ে ভার উত্তোলন করছেন,
- নিয়মিত ওজন ও পুষ্টিজাত খাবার গ্রহণ করছেন,
- আর ফিটনেসের চাপ কমিয়ে দিয়ে দিয়েছেন মোটা পরিমাণ খাওয়ার অনুমতি নিজেকে।
এখন উর্ফি জানেন—’পাতলা হওয়া’ তাঁর মানসিক শান্তির শর্ত নয়, বরং আত্মমর্যাদা ও স্বাস্থ্যই আসল চাবিকাঠি।
বর্তমান জীবনধারা: ফিটনেস, ফ্যাশন ও খাবারের ভারসাম্য
উর্ফি এখন যেমন আলোচিত শতদন্ত ফ্যাশনে, তেমনই স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনে মানবিক এক ভারসাম্য বজায় রেখেছেন:
- তিনি গরম পানি নিয়ে দিন শুরু করেন, মাঝে মাঝে শেক বা ডালিয়া খান,
- সকাল-সন্ধ্যায় যোগা, জগিং ও হালকা কার্ডিও চালান,
- মাঝে মাঝে HIIT, পিলেটস ও MMA স্টাইল ব্যায়ামের অভ্যাস করেন—তাহলে মাংসপেশি টোনড হয় ।
খাবারে উর্ফি বেছে নেন স্বাস্থ্যকর পথ:
- লাঞ্চে গ্রিলড ফিশ, সালাদ, শস্য ও ডাল;
- ডিনারে রুটি ও সবজির স্যাজল ডায়েট, চালে বিরতি;
- মাঝে মাঝে তিনি আনার বিরিয়ানি বা মুচমুচে বার্গার-আইস্ক্রিম উপভোগ করেন—’চিট মিল’ হিসেবে নিজেকে সময় দেন ।
যে সব শিক্ষা আমরা নিতে পারি
- নিজের শরীর শুনো—তোমার কাছে যা ভালো লেগে, মানসিক ও শারীরিকভাবে তা ঠিক থাকো।
- স্বাস্থ্য বড় সম্পদ, ওজন হোক বা না—মানসিক মানেই গুরুত্বপূর্ণ।
- খাও—কিন্তু সুষমভাবে: পুষ্টি ও স্বাদ মিলাতে পারার মতো খাবার তুমি নির্বাচন করো।
- ব্যায়াম মনোযোগী হও; মর্যাদা ও আত্মবিশ্বাস তৈরি করো শরীরে, বেশি চাপে নয়।
- বিদায় বলো বডি শেমিংকে; নিজেকে ভালোবাসো—তুমি যেমন আছো, თავმূর্তিতে।
উর্ফির এই গল্প কেবল একটি ব্যক্তির রূপান্তর নয়; এটি একটি মানসিক জয়। খুবই মৃদু ও সুস্থ পথেই বাধ্য হয়ে না চললেও নিজেকে সঠিকভাবে বুঝে, নিজের কথা শুনে খাওয়া, ব্যায়াম করা—এটিই আসল শক্তি। তাঁর সাহস আমাদের শেখায়—নিজেকে ক্ষমা করা, নিজেকে ভালোবাসা, আর নিজের পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে নতুন জীবন খুঁজে পাওয়া।

