ঘূর্ণিঝড় ‘ফেনজল’!
ঘূর্ণিঝড় ‘ফেনজল’ উপকূলের দিকে এগিয়ে আসছে এবং তামিলনাড়ু সহ দক্ষিণ ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে ভারী বৃষ্টির সঙ্গে ঝোড়ো হাওয়া শুরু হয়েছে। শনিবার বিকেলে তামিলনাড়ুর উপকূলে আছড়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে ‘ফেনজল’। এর ফলে রাজ্যের বেশ কিছু উপকূলবর্তী জেলায় চূড়ান্ত সতর্কতা জারি করা হয়েছে, এবং ইতিমধ্যেই বৃষ্টির পরিমাণ বাড়তে শুরু করেছে।
মৌসম ভবন সূত্রে জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড়টি বর্তমানে পুদুচেরি থেকে প্রায় ১৫০ কিলোমিটার পূর্বে, চেন্নাই থেকে ১৪০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে, নাগাপত্তিনম থেকে ২১০ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে এবং শ্রীলঙ্কার ত্রিঙ্কোমালি থেকে ৪০০ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থান করছে। এর ফলে সমুদ্র উত্তাল হয়ে উঠেছে, এবং হাওয়ার গতিবেগও বাড়ছে।
এ পরিস্থিতিতে চেন্নাই বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বৃষ্টির কারণে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত বিমান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। চেন্নাইগামী বেশ কয়েকটি বিমান ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং শনিবার সকাল থেকেই ২২টি বিমান বাতিল করা হয়েছে। ইন্ডিগো বিমান সংস্থা জানিয়েছে, তারা সাময়িকভাবে চেন্নাইগামী সমস্ত ফ্লাইট বন্ধ রাখছে।
এছাড়া, রেলওয়ে কর্তৃপক্ষও জানিয়েছে, প্রাথমিকভাবে কিছু ট্রেন চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। ভারী বৃষ্টির কারণে কাঞ্চিপুরমে ঝোড়ো হাওয়া বইছে এবং বৃষ্টির পরিমাণও বেড়েছে।
মৌসম ভবন জানাচ্ছে, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে রাজ্যের তিরুভাল্লুর, চেঙ্গলপাট্টু, ভিল্লুপুরম, কল্লাকুর্চি, কুড্ডুলুর এবং পুদুচেরিতে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। আগামী ২-৩ দিন ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।
শুক্রবার থেকেই চেন্নাই শহরের বেশ কিছু এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়েছে, এবং ১৩৪টি এলাকা বৃষ্টিতে ডুবে গেছে। শহরের পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে, কারণ শনিবার পর্যন্ত ৬২২ মিলিমিটার বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।
অপরদিকে, ঘূর্ণিঝড় ‘ফেনজল’ আছড়ে পড়ার সময় সর্বাধিক গতিবেগ ঘণ্টায় ৯০ কিলোমিটার পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে। এ পরিস্থিতিতে তামিলনাড়ু সরকারের পক্ষ থেকে চেন্নাই, তিরুভাল্লুর, কাঞ্চিপুরম, চেঙ্গলপাট্টুতে সব স্কুল ও কলেজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সরকারি কর্মীদের জন্য বাড়ি থেকে কাজ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
নিরাপত্তার জন্য সরকারি পরিবহণও গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাগুলিতে স্থগিত রাখা হয়েছে। পুদুচেরিতে সমুদ্রসৈকত খালি করে দেওয়া হয়েছে, এবং পর্যটকদের নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া, দক্ষিণ অন্ধ্রপ্রদেশ, কেরল এবং অভ্যন্তরীণ কর্নাটকেও ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। গোটা অঞ্চলটির জন্য সতর্কতা জারি করা হয়েছে, এবং পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে বলে সতর্ক করা হয়েছে।
এই ধরনের পরিস্থিতিতে সবাইকে সতর্কতা অবলম্বন করার জন্য প্রশাসন এবং চিকিৎসকরা বারবার আবেদন জানাচ্ছেন।
4o mini