উদ্ধব ঠাকরে বিতর্কের পরেই নিতিন গডকড়ীর হেলিকপ্টারে তল্লাশি
মহারাষ্ট্রে নির্বাচনী প্রচারের মাঝে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিতিন গডকড়ীর হেলিকপ্টারে আচমকা তল্লাশি চালানোর ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। এই ঘটনাটি ঘটে শিবসেনা (ইউবিটি) প্রধান উদ্ধব ঠাকরের ব্যাগ তল্লাশির বিতর্কের ঠিক পরেই। সোমবার ও মঙ্গলবার, দু’দিন ধরে উদ্ধবের ব্যাগ তল্লাশি করার পর তিনি প্রশ্ন তোলেন, “প্রধানমন্ত্রী এবং শাসক দলের নেতাদেরও কি এভাবে ব্যাগ পরীক্ষা করবে কমিশন?” এই প্রশ্নের আবহেই গডকড়ীর হেলিকপ্টারে নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা তল্লাশি চালান।
মঙ্গলবার মহারাষ্ট্রের লাতুরে একটি প্রচারসভায় গিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহণ মন্ত্রী নিতিন গডকড়ী। সেখানে তাঁর হেলিকপ্টারে এসে তল্লাশি চালান নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা। তল্লাশির পর হেলিকপ্টার থেকে কিছু ব্যাগ নিয়ে বের হতে দেখা যায় ওই কর্মকর্তাদের। সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ঘটনার বেশ কয়েকটি ভিডিও ছড়িয়েছে, যেখানে দেখা যাচ্ছে, গডকড়ীর হেলিকপ্টারে একাধিক নির্বাচনী আধিকারিক তল্লাশি চালাচ্ছেন। যদিও এই ভিডিওগুলোর সত্যতা স্বতন্ত্রভাবে যাচাই করা হয়নি, তবে ভিডিওগুলো নিয়ে মানুষের মধ্যে কৌতূহল তৈরি হয়েছে।
নির্বাচন কমিশনের দাবি, এই তল্লাশি চলেছে নির্বাচনী আচরণবিধি অনুযায়ী, যাতে কোনো প্রকার প্রভাবশালী ব্যক্তি বা নেতা প্রচারের সময় ভোটারদের প্রলুব্ধ করতে নগদ অর্থ বা অন্যান্য উপহার নিয়ে যেতে না পারে। এই তল্লাশি নিয়ে নির্বাচন কমিশন আরও জানায় যে, তাদের দায়িত্বপালনের ক্ষেত্রেও পক্ষপাতের কোনো অবকাশ নেই।
উদ্ধব ঠাকরের সাম্প্রতিক তল্লাশির ঘটনায় উত্তেজনা শুরু হয় প্রথমে যবৎমল জেলার ওয়ানি এবং পরে লাতুরে, যেখানে তাঁর ব্যাগ তল্লাশি করে নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা। এই ঘটনার পর ঠাকরে বলেন, “আমি বিব্রত হইনি, তবে চাই নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা তাদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করুন এবং আমি আমার দায়িত্ব পালন করব।” এরপরই তিনি প্রশ্ন তোলেন, “এই ধরনের তল্লাশি কি প্রধানমন্ত্রীর ক্ষেত্রেও চালানো হবে?” শিবসেনা (ইউবিটি) নেতার মন্তব্যে বিরোধী শিবিরে বিতর্কের ঝড় ওঠে।
উদ্ধবের এই বক্তব্যের পরে যখন নিতিন গডকড়ীর হেলিকপ্টারে তল্লাশি চালানো হয়, তখন অনেকে এটিকে বিরোধীদের জন্য ‘একটি বার্তা’ হিসেবে দেখতে শুরু করেন। বিজেপির একাংশের মতে, এটি উদ্ধবের প্রশ্নের একটি সরাসরি প্রতিক্রিয়া, যাতে কমিশনের নিরপেক্ষতা প্রকাশ পায়। বিরোধী পক্ষ থেকে বলা হয়, কমিশনের এই পদক্ষেপ বিশেষভাবে বিরোধীদের চাপে ফেলতে তোলা হয়েছিল, যেখানে নির্বাচন কমিশন একরকম শক্ত অবস্থানে থেকে তাদের দায়িত্বপালনের প্রমাণ দিয়েছে।
তবে, গডকড়ীর হেলিকপ্টারে তল্লাশি চালানোর মাধ্যমে কমিশন যেন একটি বার্তা দিতে চেয়েছে যে, নির্বাচন সংক্রান্ত নিয়মাবলী সবার ক্ষেত্রেই সমানভাবে প্রযোজ্য।