বিজেপিকে উদ্যোগী হতে বললেন স্পিকার!
উত্তরবঙ্গের দাবিদাওয়া নিয়ে কেন্দ্রের কাছে সর্বদলীয় প্রতিনিধি দল পাঠানোর প্রস্তাব বহু আগেই গৃহীত হয়েছিল। রাজ্যের তৎকালীন সিদ্ধান্তে সায় দিয়েছিল প্রধান বিরোধী দল বিজেপিও। কিন্তু দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হয়নি। বুধবার বিধানসভায় সেই প্রসঙ্গ ফের তুলে আনেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিজেপির শিলিগুড়ি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষকে উদ্যোগী হওয়ার পরামর্শ দেন। তবে আলোচনার মধ্যে উঠে আসে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর সাসপেনশনের প্রসঙ্গও।
শঙ্কর ঘোষকে উদ্যোগী হওয়ার বার্তা স্পিকারের
আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক সুমন কাঞ্জিলালের এক প্রশ্নের জবাব দিচ্ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী মানস ভুঁইয়া। সেই সূত্র ধরেই স্পিকার বলেন, উত্তরবঙ্গের দাবিদাওয়া নিয়ে কেন্দ্রের কাছে প্রতিনিধি দল পাঠানোর বিষয়টি নিয়ে বিজেপিরই এগিয়ে আসা উচিত। তিনি সরাসরি শিলিগুড়ির বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষকে এই বিষয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে আলোচনায় উদ্যোগী হতে বলেন।
শুভেন্দুর সাসপেনশনের প্রসঙ্গ টেনে পাল্টা শঙ্কর
তবে স্পিকারের কথার জবাবে শঙ্কর ঘোষ বলেন, “যিনি এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকারী, সেই বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে অনৈতিকভাবে সাসপেন্ড করা হয়েছে। তাই এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব নয়।” শঙ্করের মন্তব্যের পর স্পিকার স্পষ্ট জানিয়ে দেন, শুভেন্দুর সাসপেনশন নিয়ে আলোচনাটি কার্যবিবরণীতে অন্তর্ভুক্ত হবে না। একই সঙ্গে তিনি বলেন, “সাসপেনশন প্রত্যাহারের দাবি জানালে সঠিক প্রক্রিয়ায় আবেদন করুন।”
শোভনদেবের কটাক্ষ: “আপনারা রাজ্যের স্বার্থে উদ্যোগ নিতে পারলেন না!”
এই প্রসঙ্গে বিধানসভার পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় শঙ্করের বক্তব্যের তীব্র প্রতিক্রিয়া জানান। তিনি বলেন, “আপনি কৌশলে আসল বিষয়টি এড়িয়ে গেলেন। বাংলার মানুষ দেখল, রাজ্যের স্বার্থে কেন্দ্রের কাছে প্রতিনিধি দল পাঠানোর প্রস্তাব আপনাদের জন্য সম্ভব হল না। অথচ অযথা বিরোধী দলনেতার প্রসঙ্গ তুললেন। আমি বার বার জানতে চেয়েছি, কবে যাবেন? কিন্তু আপনি কিছুই জানাননি।”
উত্তরবঙ্গের দাবিদাওয়া নিয়ে কেন্দ্রের নীরবতা
উত্তরবঙ্গের দীর্ঘদিনের বিভিন্ন সমস্যা ও দাবিদাওয়া নিয়ে আলোচনা হলেও কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে এখনও কোনো সাড়া মেলেনি। রাজ্যের তরফে সর্বদলীয় প্রতিনিধি দল পাঠানোর সিদ্ধান্ত গৃহীত হলেও, সেই প্রক্রিয়া থমকে আছে রাজনৈতিক টানাপোড়েনের কারণে। স্পিকারের বক্তব্য থেকে স্পষ্ট, রাজ্য চাইছে কেন্দ্রের কাছে বিষয়টি পৌঁছাক, কিন্তু বিরোধী পক্ষের অসহযোগিতার কারণে সেটি সম্ভব হচ্ছে না।
কবে হবে বাস্তবায়ন? উত্তর নেই কারও কাছে
বিধানসভার আলোচনায় স্পষ্ট হয়ে গেছে, রাজ্য সরকার উত্তরবঙ্গের স্বার্থে কেন্দ্রের কাছে দাবি উত্থাপন করতে প্রস্তুত। তবে বিজেপি শিবির এখনই এ নিয়ে কোনো পদক্ষেপ নিতে চাইছে না। বিরোধী দলনেতার সাসপেনশনের ইস্যুকে সামনে এনে বিজেপি এই প্রসঙ্গে নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করেনি।
এই পরিস্থিতিতে উত্তরবঙ্গের মানুষের দাবি আদায়ের প্রক্রিয়া কতটা এগোবে, তা নিয়ে সংশয় থেকেই যাচ্ছে। রাজনীতি সরগরম থাকলেও, সমস্যার সমাধান যে কবে হবে, তার উত্তর এখনো অধরা।
মাটির নীচ থেকে গর্জনের শব্দ! ভূমিকম্পের নতুন অভিজ্ঞতায় আতঙ্কিত দিল্লিবাসী— কেন হল এমন?