জয়পুরে জরুরি অবতরণ এয়ার ইন্ডিয়া বিমানের!
আকাশে ওড়ার পরও গন্তব্যে পৌঁছানো গেল না—মাঝ আকাশেই ফিরতে হল শুরু স্থলে। জয়পুর থেকে মুম্বইয়ের উদ্দেশ্যে রওনা হওয়া এয়ার ইন্ডিয়া একটি যাত্রীবাহী বিমান যান্ত্রিক ত্রুটির জেরে টেক-অফের কিছু পরেই আবার জয়পুর বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণ করল।
এই ঘটনায় আতঙ্কে ভুগেছেন বিমানে থাকা যাত্রীরা। অনেকেই সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার করেছেন তাদের ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা।
কী ঘটেছিল ঠিক?
ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার। এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইট নম্বর AI-611 জয়পুর থেকে মুম্বই যাচ্ছিল। বিমানটি নির্ধারিত সময়েই জয়পুর বিমানবন্দর থেকে ওড়ে। তবে ওড়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই পাইলট বুঝতে পারেন, বিমানে কোনও যান্ত্রিক সমস্যা দেখা দিয়েছে। তৎক্ষণাৎ বিমানের কন্ট্রোল টাওয়ারে যোগাযোগ করে তিনি জরুরি অবতরণের অনুমতি চান।
আকাশে ভেসে থাকা বিমানকে নিরাপদে মাটিতে নামানোর জন্য বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ সঙ্গে সঙ্গে প্রস্তুতি নেয়। শেষমেশ, প্রায় ২০ মিনিটের মধ্যে বিমানটি সফলভাবে জয়পুর বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক
ঘটনার সময় বিমানে ছিলেন প্রায় ১৪০ জন যাত্রী। হঠাৎ করেই বিমানের গতিবিধি বদলে যাওয়ায় যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। অনেকেই ভাবেন, বিমান দুর্ঘটনার মুখে পড়তে চলেছে। কেউ কেউ প্রিয়জনকে ফোন করে উদ্বেগ জানাতে শুরু করেন। তবে পাইলট এবং কেবিন ক্রুরা শান্ত ভাবে পরিস্থিতি সামলে যাত্রীদের আশ্বস্ত করার চেষ্টা করেন।
একজন যাত্রী বলেন, “বিমান হঠাৎ খুব কাঁপছিল। আমরা বুঝতেই পারছিলাম না কী হচ্ছে। তারপর ঘোষণা এল, জয়পুরেই ফিরছি। মনে হচ্ছিল প্রাণ নিয়ে ফিরতে পারব তো?”
কী বলছে এয়ার ইন্ডিয়া?
এয়ার ইন্ডিয়া কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, যান্ত্রিক ত্রুটি ধরা পড়তেই নিরাপত্তার স্বার্থে অবিলম্বে বিমানটিকে ফিরিয়ে আনা হয়। কোনও বড় বিপর্যয় ঘটেনি, তবে সতর্কতা মেনেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যাত্রীদের জন্য পরবর্তী ফ্লাইটের ব্যবস্থা করা হয়েছে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছে সংস্থা।
প্রশ্ন উঠছে রক্ষণাবেক্ষণ নিয়েও
ঘটনার পর অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন বিমান সংস্থার রক্ষণাবেক্ষণ প্রক্রিয়া নিয়ে। যান্ত্রিক ত্রুটি থাকলে সেটা উড়ানের আগে ধরা পড়ল না কেন? বারবার যান্ত্রিক সমস্যার কারণে মাঝ আকাশ থেকে ফেরা ঘটনা নিয়ে যাত্রীদের মধ্যে উদ্বেগ বেড়েই চলেছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বিমানযাত্রার ক্ষেত্রে যাত্রীদের নিরাপত্তা প্রথম প্রাধান্য হওয়া উচিত। যান্ত্রিক ত্রুটি সম্পর্কিত সব তথ্য নিয়মিত পরীক্ষা ও সার্ভিসিংয়ের মাধ্যমে আগেই ধরা উচিত, যাতে এমন আতঙ্কের মুখোমুখি না হতে হয় যাত্রীদের।
শেষে রক্ষা
ভাগ্য ভালো বলতেই হয়, কোনও বড় দুর্ঘটনা ঘটেনি। পাইলটের দ্রুত সিদ্ধান্ত ও অভিজ্ঞতার কারণে বহু প্রাণ রক্ষা পেল।
এই ঘটনা আমাদের বারবার মনে করিয়ে দেয়, আকাশে ওড়ার আগে মাটির প্রস্তুতি কতটা জরুরি। যাত্রীরা শুধু গন্তব্যে পৌঁছাতে চান না, তাঁরা নিরাপদে পৌঁছাতে চান—এই প্রত্যাশা পূরণ করাই এয়ারলাইনের আসল দায়িত্ব।
মায়ের খরচ চালাতে অস্বীকৃতি! আদালতের রায়, খোরপোশ ঠিক করবেন কাল্যাণীর এসডিও

