Friday, May 9, 2025

ঈশ্বরের খোঁজে ‘অনন্ত’ পথচলা: জন্মদিনে ১৪০ কিমির আধ্যাত্মিক যাত্রা শেষে দ্বারকায় পৌঁছলেন অনন্ত অম্বানী

Share

ঈশ্বরের খোঁজে ‘অনন্ত’ পথচলা

রামনবমীর পবিত্র দিনে, সূর্য যখন মাথার উপর ঠিকরে পড়ছে, তখন গুজরাতের পবিত্র নগরী দ্বারকায় পা রাখলেন অনন্ত অম্বানী। জমকালো কোনও আয়োজন নয়, না ছিল সেলিব্রিটির ভিড়। ছিল শুধু এক গভীর আত্মনিবেদন, ছিল বিশ্বাসের একান্ত নিঃশব্দ চিহ্ন—‘অনন্ত যাত্রা’-র পরিপূর্ণতা।

গুজরাতের জামনগর থেকে শুরু হয়েছিল এই যাত্রা ২৯ মার্চ। প্রতিদিন গড়ে ১২ থেকে ১৫ কিমি করে হেঁটে ৩০ বছরের অনন্ত পৌঁছে গেলেন দ্বারকায়, প্রায় ১৪০ কিলোমিটার পথ পেরিয়ে। তাঁর গন্তব্য ছিল শ্রীকৃষ্ণের নগর, যেখানে পৌঁছে তিনি দর্শন নেন দ্বারকাধীশের, প্রণাম জানান নিঃশর্তভাবে।

এই যাত্রা কেবল একটি হাঁটার অভিজান নয়, এটি ছিল এক নিঃশব্দ, নিবেদিত আত্মার ভ্রমণ। শারীরিক প্রতিবন্ধকতা, বিরল হরমোনজনিত রোগ কুশিং সিনড্রোম, শ্বাসকষ্টের সমস্যা—সব কিছুকে উপেক্ষা করে ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বাস আর আত্মসমর্পণেই অনন্ত শুরু করেছিলেন এই পথচলা।

যাত্রাপথে তিনি কারও মনোযোগের কেন্দ্র হতে চাননি। রাজকীয় নিরাপত্তা থাকলেও, তাঁর যাত্রা ছিল নিঃশব্দ, শান্ত ও সংযত। মাঝে মাঝে দেখা গিয়েছে তাঁকে হনুমান চালিশা বা সুন্দরকাণ্ড জপ করতে। অনেক সাধারণ মানুষ এই যাত্রাপথে তাঁর সঙ্গে হাঁটতেও শুরু করেন, কেউ কেউ দ্বারকাধীশের ছবি এনে দিয়েছেন তাঁকে। তিনি কারও অনুরোধ ফেলেননি—সবার সঙ্গে মিশেছেন আন্তরিকতায়।

“আমি ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানাতে হেঁটে যাব। যন্ত্রণা সইব, কারণ আমি আত্মসমর্পণ করেছি। দুর্বল হয়ে নয়, বিশ্বাসের জোরে মাথা নত করব,”—এই কথায় অনন্ত যেন আজকের প্রজন্মকে একটা বার্তাই দিয়ে দিলেন। তিনি বলেন, “তোমার ভক্তি হোক তোমার পথপ্রদর্শক। বিশ্বাসই হোক তোমার আসল শক্তি।”

ধর্মপ্রাণ অনন্তের এটাই প্রথম আধ্যাত্মিক যাত্রা নয়। বদ্রীনাথ, কেদারনাথ, কামাখ্যা থেকে কুম্ভমেলা—সেইসব স্থানে এর আগেও তাঁর উপস্থিতি দেখা গেছে। কিন্তু দ্বারকায় এই নির্জন, দীর্ঘ পদযাত্রা যেন তাঁর ঈশ্বরের প্রতি গভীর ভালবাসা ও কৃতজ্ঞতার সবচেয়ে শক্তিশালী প্রকাশ।

জন্মদিনে যখন অধিকাংশ মানুষ পার্টি, কেক আর সেলফিতে মেতে ওঠেন, তখন অনন্ত নিজের জন্মদিনে বেছে নিলেন আত্মবিশ্লেষণের পথ। পা রাখলেন কৃষ্ণের শহরে, মন রেখে এলেন ভগবানের চরণে।

ব্যবসার কৌশল নয়, এই যাত্রা ছিল আত্মার উপলব্ধি। আর তাতেই প্রমাণ করে দিলেন—অম্বানী পরিবারের কনিষ্ঠ সন্তান অনন্ত কেবল অর্থবিত্তের উত্তরাধিকার নয়, তিনি এক গভীর বিশ্বাস আর আত্মারও উত্তরাধিকার। এক নতুন প্রজন্মের কাছে হয়ে উঠলেন অনুপ্রেরণা, যাঁর কাছে ঈশ্বর-ভক্তি শুধু বিশ্বাস নয়, এক অবিচল জীবনদর্শন।

তালা ভাঙার পাল্টা তালা! কসবা থেকে হুগলি—চাকরিহারাদের ক্ষোভে কাঁপছে রাজ্য

Read more

Local News