Friday, February 7, 2025

ইসকেমিক স্ট্রোকে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা: চিকিৎসক মনোজ কুমার মাহাতার দৃষ্টি

Share

ইসকেমিক স্ট্রোকে

বর্তমান সময়ে জীবনযাত্রার মান পরিবর্তনের ফলে ‘স্ট্রোক’ ও ‘হার্ট অ্যাটাক’ এর মতো রোগের হার ক্রমশ বেড়ে চলেছে। সঠিক রক্ত সঞ্চালন ছাড়া শরীরের প্রতিটি কোষের জন্য অক্সিজেন পৌঁছানো সম্ভব নয়। যখন মস্তিষ্কের কোষে রক্ত সঞ্চালন বাধাগ্রস্ত হয়, তখনই স্ট্রোকের সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়। মস্তিষ্কের রক্তনালী বন্ধ হলে বা ছিঁড়ে গেলে, মানুষের জীবনহানির আশঙ্কা থাকে। স্নায়ু কোষগুলি বিকল হয়ে পড়লে শরীরের অন্যান্য অঙ্গগুলির কার্যকারিতাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

স্ট্রোকের বৃদ্ধির কারণ

সাধারণভাবে, ৬০ বছরের বেশি বয়সী মানুষদের মধ্যে স্ট্রোকের ঝুঁকি বেশি হলেও, সাম্প্রতিক সময়ে তরুণ প্রজন্ম এবং এমনকি শিশুদের মধ্যেও এই রোগ দেখা যাচ্ছে। তবে, চিকিৎসার ক্ষেত্রেও অনেক উন্নতি হয়েছে। বর্তমানে, ইসকেমিক স্ট্রোকের হার প্রায় ৮০ শতাংশ, যা মূলত চিকিৎসকদের জন্য একটি নতুন চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দেয়।

ইসকেমিক স্ট্রোক: শনাক্তকরণ ও চিকিৎসা

কলকাতার অ্যাপোলো মাল্টিস্পেশ্যালিটি হাসপাতালের ইন্টারভেনশনাল নিউরোলজি বিভাগের সিনিয়র কনসালট্যান্ট চিকিৎসক মনোজ কুমার মাহাতা জানিয়েছেন, “স্ট্রোকের লক্ষণগুলো খুব দ্রুত শনাক্ত করা জরুরি। যদি হঠাৎ করে মুখ বেঁকে যায়, কথা বন্ধ হয়ে যায় অথবা হাতে ও পায়ে দুর্বলতা দেখা দেয়, তবে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া উচিত।”

তিনি আরও উল্লেখ করেন, “ইসকেমিক স্ট্রোক ও হেমোরেজিক স্ট্রোক ছাড়াও ‘মিনি স্ট্রোক’ নামক একটি অবস্থা হয়, যেখানে কিছুক্ষণ স্ট্রোকের লক্ষণগুলি থাকার পর রোগী আবার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে। এই ক্ষেত্রে সঠিক চিকিৎসা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”

চিকিৎসা পদ্ধতি

ইসকেমিক স্ট্রোকে আক্রান্ত রোগীদের দ্রুত চিকিৎসা দিতে হবে। প্রাথমিক চিকিৎসা হিসেবে রোগীর রক্তচাপ, হৃদস্পন্দন এবং অন্যান্য স্বাস্থ্যসূচকগুলি পর্যবেক্ষণ করা হয়। চিকিত্সার জন্য রক্ত পাতলকারী ওষুধ ব্যবহার করা হয়, যা রক্তনালীকে আবার খুলে দেয়। কখনও কখনও ইন্টারভেনশনাল প্রসিডিওর ব্যবহার করে অবরুদ্ধ রক্তনালীগুলি সরিয়ে দেওয়া হয়।

জীবনযাত্রার পরিবর্তন

স্ট্রোকের মতো রোগকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে জীবনযাত্রার বদল গুরুত্বপূর্ণ। চিকিৎসক মাহাতা জানিয়েছেন, “অতিরিক্ত ধূমপান, মদ্যপান এবং দুশ্চিন্তা এড়ানো জরুরি। স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস এবং নিয়মিত ব্যায়াম স্বাস্থ্য রক্ষা করতে সাহায্য করবে।”

উপসংহার

স্ট্রোকের জন্য সতর্কতা অবলম্বন এবং দ্রুত চিকিৎসা প্রক্রিয়া একান্ত প্রয়োজন। চিকিৎসকদের পরামর্শ মেনে চললে এবং জীবনযাত্রার কিছু পরিবর্তন ঘটালে এই রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। যে কোনও লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যাওয়া উচিত। জীবনের প্রতি যত্নশীল হলে অনেকের জন্য এই রোগকে প্রতিহত করা সম্ভব।

Read more

Local News