ইপিএলের দলবদল উন্মাদনা!
শুক্রবার থেকে শুরু হচ্ছে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ (ইপিএল)। নতুন মৌসুমের আগে শীর্ষ ক্লাবগুলো দলে শক্তি বাড়াতে একেবারে ঝড় তুলেছে ট্রান্সফার মার্কেটে। শুধু ছয়টি ক্লাব মিলিয়েই খরচ করেছে অভাবনীয় ২২,৯১৬ কোটি টাকা। ফুটবলপ্রেমীদের কাছে লড়াইটা এ বার শুধু মাঠেই নয়, সমানভাবে মাঠের বাইরেও। কে কতটা সঠিক বিনিয়োগ করেছে, তার হিসাব মিলবে মৌসুমের শেষে।
লিভারপুলের রেকর্ড খরচ
গতবারের চ্যাম্পিয়ন লিভারপুল এবারও ট্রফি ধরে রাখার জন্য মরিয়া। তবে দল থেকে চলে গেছেন ট্রেন্ট আলেকজান্ডার-আর্নল্ড ও ডারউইন নুনেজ, আর দুর্ঘটনায় হারিয়েছেন দিয়োগো জোতাকে। এই ঘাটতি পূরণে তারা ভেঙেছে ব্যাংক। বায়ার লেভারকুসেন থেকে ফ্লোরিয়ান উইর্ৎজ-কে ১৩৭৭ কোটিতে দলে নেওয়া এ মৌসুমের সবচেয়ে বড় চুক্তি। আরও এসেছে জেরেমি ফ্রিমপং, হুগো একিতিকে ও মিলোস কেরকেজ। মোট খরচ দাঁড়িয়েছে ৩৪৫৪ কোটি টাকা, এবং গুঞ্জন চলছে নিউক্যাসল থেকে আলেকজান্ডার ইসাককে নেওয়ার প্রচেষ্টা নিয়েও।
ম্যান সিটির পুনরুত্থান মিশন
টানা চার বছর শিরোপা জেতার পর গতবার মাঝপথে হোঁচট খায় ম্যানচেস্টার সিটি। কেভিন দে ব্রুইনের বিদায় ও রদ্রির চোটে বড় ধাক্কা খেয়েছে তারা। গুয়ার্দিওলা এবার নতুনদের দিয়ে শক্তি বাড়িয়েছেন—রায়ান আইত-নুরি, রায়ান চেরকি, টিয়ানি রেইন্ডার্স ও ভেরে নাইপান; খরচ ১৭৫১ কোটি টাকা। গুয়ার্দিওলার সামনে চ্যালেঞ্জ—প্রমাণ করা যে তিনি এখনও অপরাজেয় কৌশলী।
আর্সেনালের শিরোপা ক্ষুধা
মিকেল আর্তেতার আর্সেনাল বেশ কয়েক মৌসুম ধরে শীর্ষে লড়লেও শেষ মুহূর্তে পিছিয়ে যায়। এবার গোলের খরা মেটাতে ৭৫৯ কোটিতে ভিক্টর গিয়োকেরেসকে এনেছে, যিনি গত মৌসুমে ইউরোপের সর্বোচ্চ গোলদাতা। সঙ্গে এসেছে নোনি মাদুয়েকে, মার্তিন জুবিমেন্দি, কেপা আরিজাবালাগা, ক্রিশ্চিয়ান নরগার্ড ও ক্রিশ্চিয়ান মসকেরা। লক্ষ্য পরিষ্কার—ট্রফি ঘরে তোলা।
চেলসির শীর্ষে ফেরার চেষ্টা
টড বোহেলির মালিকানায় বারবার সমালোচিত হওয়া চেলসি এবার দল গঠনে ২৮০২ কোটি টাকা খরচ করে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ব্যয়কারী ক্লাব। নিয়েছে লিয়াম ডেলাপ, মামাদৌ সার, জোয়াও পেদ্রো ও এস্তেভাওয়ের মতো তারকা। কনফারেন্স লিগ ও ক্লাব বিশ্বকাপ জেতার পর এবার ইপিএলে বড় লক্ষ্যে চোখ রাখছে এনজো মারেস্কার দল।
ম্যান ইউয়ের দীর্ঘ পথ
রুবেন আমোরিমের অধীনে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড গত মৌসুমে প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেনি, শেষ করেছে ১৫তম স্থানে। তবুও কর্তৃপক্ষ তার প্রতি আস্থা রেখেছে এবং দলবদলে খরচ করেছে ২৪৯৮ কোটি টাকা—যা তৃতীয় সর্বোচ্চ। অভিজ্ঞ ম্যাথেউস কুনহা, ব্রায়ান এমবিউমো ও ৮৭৫ কোটিতে কেনা বেঞ্জামিন সেসকোকে ঘিরেই নতুন আশা। তবে ট্রফি জয়ের জন্য আরও সময় লাগতে পারে বলে বিশেষজ্ঞদের মত।
স্পার্সের নতুন দিগন্ত
টটেনহ্যাম হটস্পার নতুন কোচ টমাস ফ্রাঙ্কের অধীনে নতুন শুরু করতে চায়। যদিও খরচে তারা শীর্ষে না থাকলেও লক্ষ্য স্পষ্ট—পয়েন্ট তালিকায় শীর্ষে ফিরে আসা এবং বড় দলের সঙ্গে সমানে লড়াই করা।
মৌসুম শুরুর আগে ট্রান্সফার মার্কেটে এই বিপুল অর্থব্যয় প্রমাণ করছে, ইপিএলের লড়াই এবার শুধু প্রতিভা ও কৌশলের নয়, বরং অর্থনৈতিক শক্তিরও। কে সেরা প্রমাণিত হবে, সেটাই এখন দেখার বিষয়।
শুল্কযুদ্ধের মাঝেই আমেরিকা সফরে মোদী? ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক ঘিরে জল্পনা তুঙ্গে

