আলু নিয়ে রাজনীতি
পশ্চিমবঙ্গের বাজারে আলুর সরবরাহ গত মাসখানেক ধরেই কমে গেছে, যার ফলে দামও বৃদ্ধি পেয়েছে। সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন, রাজ্যে আলুর ঘাটতি হতে পারে। এই পরিস্থিতি এড়াতে, তিনি ভিনরাজ্যে আলু রফতানি বন্ধ করার কথাও বলেছিলেন। এর পরেই আলু ব্যবসায়ীদের একাংশ অভিযোগ করেন, মুখ্যমন্ত্রীর এই সিদ্ধান্তের কারণে প্রশাসন রাজ্যের বাইরে আলু পাঠানোর উপর কড়া নজরদারি শুরু করে। সীমানায় আলুর গাড়ি আটকে দেওয়া হয়, ফলে অন্যান্য রাজ্যে আলুর সরবরাহে ব্যাঘাত ঘটে।
এই পরিস্থিতি নিয়ে এবার মুখ খুললেন ওড়িশার মন্ত্রী ক্রুশ্নাচন্দ্র পাত্র। তিনি অভিযোগ করেছেন যে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলার আলু সরবরাহ নিয়ে রাজনীতি করছেন। তাঁর কথায়, “পশ্চিমবঙ্গ সরকার কখনো আলু সরবরাহে অনুমতি দেয়, আবার কখনো তা বন্ধ করে দেয়। এখন আর আমরা তাদের কাছে আলু সরবরাহের জন্য অনুরোধ করব না।” তিনি আরও জানান, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ওড়িশায় আলু পাঠাতে নিষেধ করেছেন, তাই তাঁর সঙ্গে কথা বলে কোনো লাভ নেই।” তবে, মন্ত্রী ক্রুশ্না বলেছেন যে, যদি পশ্চিমবঙ্গ সরকার নিজে থেকে আলু পাঠায়, তবে তারা তা গ্রহণ করবে।
এই অভিযোগের জবাবে, পশ্চিমবঙ্গের কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বলেন, “এই বিষয়ে রাজনীতি কোথা থেকে আসছে? মুখ্যমন্ত্রী বাংলার মানুষের প্রতি দায়বদ্ধ। তাই রাজ্যের মানুষের জন্য অল্প দামে আলু পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব তাঁর। এখানে কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নেই।” শোভনদেবের মতে, যারা রাজনীতি খুঁজছেন, তারা হয়তো বিষয়টি সঠিকভাবে বুঝতে পারছেন না। একই সুর শোনা গেছে খাদ্য সরবরাহমন্ত্রী বেচারাম মান্নার কথায়। তিনি বলেছেন, “আমরা আগে রাজ্যের মানুষের জন্য আলু বরাদ্দ করছি, এরপরই বাইরে পাঠানোর চিন্তা হবে। আমাদের মুখ্যমন্ত্রী কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে আলু সরবরাহে বাধা দিচ্ছেন না। বরং, ওড়িশার মন্ত্রীই রাজনীতি করছেন।”
এদিকে, ওড়িশা সরকার রাজ্যের আলু সরবরাহের জন্য উত্তরপ্রদেশের উপর ভরসা করছে। ক্রুশ্না জানিয়েছেন, “আমরা উত্তরপ্রদেশ থেকে আলু আমদানির ব্যবস্থা করেছি এবং আগামী দু’বছরের মধ্যে আলু উৎপাদনে স্বনির্ভর হবে ওড়িশা।”
এখন দেখার বিষয় হবে, এই পরিস্থিতি কিভাবে সমাধান হয় এবং আলু সরবরাহের ক্ষেত্রে দু’দেশের মধ্যে চলমান উত্তেজনা কিভাবে মিটে।