Sunday, November 30, 2025

আরাধ্যার বড় হয়ে ওঠার নেপথ্যের নায়ক–নায়িকা: অভিষেকের চোখে ঐশ্বর্যার অবদানই সবচেয়ে বড় 🌼

Share

আরাধ্যার বড় হয়ে ওঠার নেপথ্যের নায়ক–নায়িকা!

চোখের পলকে ১৪ বছরে পা দিল আরাধ্যা বচ্চন। জন্মের মুহূর্ত থেকেই সংবাদমাধ্যমের নজরে থাকলেও, তাকে কখনওই ঝলমলে লাইমলাইটের মধ্যে ঠেলে দেননি অভিষেক বচ্চন ও ঐশ্বর্যা রাই বচ্চন। বরং চেষ্টা করেছেন তাকে সাধারণ, স্বাভাবিক এক পরিবেশে বড় করে তুলতে—যেন বচ্চন তকমার চাপ কোনও দিন তার স্বপ্ন, ভাবনা বা সত্তার ওপর হাল্কা ছায়াও না ফেলতে পারে।

অভিষেকের মতে, আরাধ্যার সহজ-সরল বেড়ে ওঠার পেছনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা তাঁর স্ত্রী ঐশ্বর্যার। এক সাম্প্রতিক সাক্ষাৎকারে অভিনেতা অকপটে স্বীকার করেছেন, “আরাধ্যা আজ যা—তার সম্পূর্ণ কৃতিত্ব ঐশ্বর্যার। আমি বাইরে শুটিং করি, কাজের ফাঁকে দৌড়োই। আর ঐশ্বর্যা বাড়িতে ওর দেখাশোনা থেকে শুরু করে মানসিক গঠন—সবটাই করে।”

আরাধ্যার দৈনন্দিন জীবনটাকে যতটা সম্ভব সাধারণ রাখতে চেয়েছেন তাঁরা দু’জনেই। বাবা, মা, দাদা–দিদিমা—সবার জনপ্রিয়তা সত্ত্বেও আরাধ্যা যেন কখনও মনে না করে যে সে অন্যদের থেকে আলাদা। অভিষেক বলেন, “ঐশ্বর্যা ওকে খুব স্বাভাবিক ভাবে গাইড করেছে। আমাদের পুরো পরিবারই বিনোদনজগতের সঙ্গে যুক্ত। তবুও কখনও ওকে এ সবের ঝলমলে দিকটা প্রাধান্য দিয়ে দেখানো হয়নি।”

মজার ব্যাপার, যতটা আলো আর ক্যামেরা বড়দের ঘিরে থাকে, তার বিপরীতে আরাধ্যা তেমন কোনও আগ্রহই দেখায়নি। সমাজমাধ্যমে তাকে আলাদা করে কখনও দেখা যায় না, আর কোনও অনুষ্ঠান বললেই সে থাকে মা’য়ের হাত ধরে। এভাবেই তাঁরা প্রত্যাশা করেছেন তার বড় হওয়াটা যেন হয় স্বতঃস্ফূর্ত, চাপমুক্ত ও মুক্তস্বভাবের।

অভিষেক হাসতে হাসতেই বলেন, “আরাধ্যা খুবই নর্মাল একটা বাচ্চা। ওর জগৎ স্কুল, বন্ধু, খেলা—এসবেই ভরা। সিনেমা দেখার প্রতি তেমন আগ্রহ নেই। আমি মাঝে মাঝে ভাবি, তাকে জিজ্ঞেস করলে যদি বলে আমার কোনও ছবিই তার ভাল লাগে না? সেই সত্যিটা শুনতে প্রস্তুত কিনা আমি নিশ্চিত নই!”

অভিষেক আরও জানান, আরাধ্যার চোখ যাতে কখনও গ্ল্যামার অথবা বিখ্যাত বচ্চন পরিবারের চাপে না ঝলসে যায়, সেই বিষয়ে ঐশ্বর্যাই সবচেয়ে বেশি সতর্ক। তিনি নিশ্চিত করেছেন—যে জগতে তাঁর নিজের সাফল্য আকাশ ছুঁয়েছে, সেই জগৎকেই আরাধ্যার সামনে তুলে ধরেছেন একেবারে সাধারণ, সহজপাঠের মতো।

১৪ বছর বয়সে দাঁড়িয়েই আরাধ্যা ইতিমধ্যেই বুঝে গিয়েছে, আলোয় থাকা আর মানুষ হয়ে ওঠার মধ্যে পার্থক্য কী। আর সেই শেখানোর অবিরাম প্রয়াসে সবচেয়ে বেশি কৃতিত্ব পাওয়ার অধিকারী—মা ঐশ্বর্যা।

অভিষেকের ভাষায়, “আমরা দু’জন মিলে চেষ্টা করি, কিন্তু আসল কৃতিত্ব ঐশ্বর্যার। আমি বাইরে থাকি, আর ও ঘর সামলায়, মেয়েকে সামলায়। আরাধ্যা খুব ভালোভাবেই বেড়ে উঠছে—এটাই আমার কাছে সবচেয়ে বড় সুখ।”

আজ যখন চলচ্চিত্র তারকার সন্তানদেরও নিজের মতো করে বেড়ে ওঠার স্বাধীনতা নদীর মতো প্রবাহিত করা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে, তখন আরাধ্যার জীবন ও লালনপালনের এই সতর্ক পথচলা নতুন প্রজন্মের কাছে একটা সুন্দর উদাহরণ হয়ে রইল—যেখানে ‘স্টারকিড’ হওয়ার আগে সে একজন ‘সাধারণ মেয়ে’ হতে পারে, নিজের মতো করে। 🌸✨

Read more

Local News