আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ
আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ এবং তার আশপাশের এলাকায় বেআইনি জমায়েত বন্ধ রাখতে কলকাতা পুলিশ আগে থেকেই নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল। সেই নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ আরও ১৫ দিন বাড়ানো হয়েছে। ১৬ অক্টোবর থেকে শুরু করে আগামী ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে। কলকাতা পুলিশের কমিশনার মনোজ বর্মা এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছেন। বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, সংশ্লিষ্ট এলাকায় শান্তিভঙ্গের আশঙ্কা থেকেই এই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
নিষেধাজ্ঞার মূল কারণ: আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের এক মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনার পর থেকেই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয়, এই ঘটনার প্রতিবাদ ছড়িয়ে পড়েছে গোটা দেশজুড়ে। এমনকি বিদেশেও এই ঘটনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানো হচ্ছে। ১৪ আগস্টের রাতে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের ভেতরে একদল দুষ্কৃতী ঢুকে ভাঙচুর চালায়, যার ফলে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে ওঠে। সে সময় পুলিশ পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না নেওয়ার অভিযোগ ওঠে, তবে পরবর্তীতে অনেক দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করা হয়। এর পর থেকেই আরজি কর এবং তার আশপাশের এলাকায় বাড়তি পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।
নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা এলাকা: কলকাতা পুলিশ ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতার ১৬৩ নম্বর ধারা (পূর্বের ফৌজদারি কার্যবিধির ১৪৪ ধারা) মেনে এই নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, শ্যামপুকুর, উল্টোডাঙা এবং টালা থানার আওতাভুক্ত কিছু এলাকায় এই নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে। এর মধ্যে রয়েছে বেলগাছিয়া রোড, জেকে মিত্র রোড ক্রসিং, এবং শ্যামবাজার পাঁচ মাথার মোড়। এই নিষেধাজ্ঞা অনুযায়ী, এই এলাকাগুলিতে পাঁচ জন বা তার বেশি মানুষের বেআইনি জমায়েত করা যাবে না। এই পদক্ষেপের মূল উদ্দেশ্য হল আইনশৃঙ্খলা রক্ষা এবং শান্তি বজায় রাখা।
নিরাপত্তা ব্যবস্থার কড়াকড়ি: মহিলা চিকিৎসকের খুনের ঘটনার পর থেকেই আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে নিরাপত্তা ব্যবস্থা বেশ আঁটসাঁট করা হয়েছে। পুলিশের বাড়তি টহল, নজরদারি, এবং দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হচ্ছে। এই নিষেধাজ্ঞা বহাল রাখার ফলে, যে কোনও ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়ানো যাবে বলে মনে করা হচ্ছে।
নিষেধাজ্ঞার সময়সীমা বৃদ্ধি: মঙ্গলবার জারি করা বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, এই নিষেধাজ্ঞা ১৬ অক্টোবর থেকে ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত কার্যকর থাকবে। কলকাতা পুলিশ জানিয়েছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষা এবং পরিস্থিতি শান্ত রাখতে এই নিষেধাজ্ঞা অপরিহার্য। পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে পরবর্তী সময়ে এই নিষেধাজ্ঞা বাড়ানো হতে পারে কিনা, তা ভবিষ্যতে বিবেচনা করা হবে।
এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা এলাকায় সাধারণ নাগরিকদের চলাফেরায় কোনও বাধা নেই, তবে পাঁচ জন বা তার বেশি মানুষের জমায়েত করা বেআইনি হিসেবে গণ্য হবে এবং তাতে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।