আইনজীবী বৃন্দা গ্রোভার দায়িত্ব ছাড়লেন
মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টে আরজি কর মামলার শুনানি চলাকালীন নির্যাতিতার পরিবারের হয়ে সওয়াল করেছিলেন বর্ষীয়ান আইনজীবী বৃন্দা গ্রোভার। কিন্তু বুধবার তিনি এই মামলার সঙ্গে তাঁর সংযুক্তি সমাপ্ত করার ঘোষণা করলেন। কেন তিনি এই সিদ্ধান্ত নিলেন, তা নিয়েও ব্যাখ্যা দিয়েছেন বৃন্দার দফতর।
আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের এক মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের চেষ্টার অভিযোগে মামলা চলছে। এরই মধ্যে নির্যাতিতার পরিবারকে আইনি সহায়তা দিয়ে আসছিলেন বৃন্দা। গত তিন মাস ধরে এই মামলা নিয়ে তিনি তৎপর ছিলেন, কিন্তু হঠাৎ করে কেন তিনি সরে গেলেন? বৃন্দা নিজে জানিয়েছেন, কিছু নির্দিষ্ট কারণ এবং পরিস্থিতির কারণে তাঁকে এই সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। তাঁর মতে, গত তিন মাস ধরে নিয়ম মেনে তিনি আইনগত সহায়তা প্রদান করেছেন এবং সিবিআইয়ের সঙ্গেও সহযোগিতা করেছেন। তাঁর দফতর জানায়, এই বিষয়ে নিম্ন আদালতকেও অবহিত করা হয়েছে।
বৃন্দার দফতর জানিয়েছে, গত সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হয়ে প্রায় তিন মাস ধরে তিনি আরজি কর মামলার বিচারপ্রক্রিয়ায় যুক্ত ছিলেন। বিচারপ্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর থেকে নিয়মিতভাবে শিয়ালদহ আদালতে শুনানি হয়েছে, যেখানে ৫১ জন সাক্ষীর মধ্যে ৪৩ জনের সাক্ষ্যগ্রহণও সম্পন্ন হয়েছে। মামলার বাকি সাক্ষী গ্রহনের কাজ খুব শীঘ্রই শেষ হবে, এমনটাই জানিয়েছেন বৃন্দা। তবে বিচারপ্রক্রিয়া শুরুর পরই তিনি আরজি কর মামলায় সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
শুধু সুপ্রিম কোর্টে নয়, শিয়ালদহ আদালতেও মামলার শুনানিতে নিয়মিতভাবে উপস্থিত ছিলেন বৃন্দা এবং তাঁর দফতরের আইনজীবীরা। এমনকি, বিচারপ্রক্রিয়া শুরুর প্রথম দিনও তিনি শিয়ালদহ আদালতে হাজির ছিলেন। পরবর্তী সময়ে তাঁর দফতরের আইনজীবীরা মামলার প্রতিটি শুনানিতে উপস্থিত থেকে মামলার পক্ষে সওয়াল করেছেন। তবে বুধবার সরে গিয়ে বৃন্দা তার দফতর থেকে একটি বিবৃতি প্রকাশ করেন, যেখানে তিনি জানান, মামলার বিচারপ্রক্রিয়া এখন সম্পূর্ণরূপে শিয়ালদহ আদালতে চলছে এবং অতিরিক্ত চার্জশিট জমা দেওয়ার জন্য সিবিআইও প্রস্তুত।
মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের শুনানির পর নির্যাতিতার বাবা-মা সিবিআইয়ের ভূমিকা নিয়ে কিছু অভিযোগ জানান। তাঁরা অভিযোগ করেন, সিবিআই তাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে না এবং আদালতে ‘মিথ্যা’ বলছে। এদিকে, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সঞ্জীব খন্না মামলার পরবর্তী শুনানির জন্য ১৭ মার্চ তারিখ ঠিক করেছেন। তবে এই দীর্ঘ সময় পর শুনানির তারিখ কেন দেওয়া হল, সেই বিষয়েও হতাশা প্রকাশ করেন নির্যাতিতার বাবা-মা।
বৃন্দা গ্রোভার বলেন, তিনি এবং তাঁর দফতর আগেও এই মামলায় বিনা পারিশ্রমিকেই অনেক সাহায্য করেছেন। কিন্তু বুধবার তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে এই মামলা থেকে সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। এর আগে, আইনজীবী বিকাশ ভট্টাচার্য এই মামলায় নির্যাতিতার পরিবারের পক্ষে সওয়াল করছিলেন, পরে তাঁর জায়গায় বৃন্দা গ্রোভার দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
এই মামলার দিকে আবার নজর দিয়েছে সুপ্রিম কোর্টও, এবং আগামী ১৭ মার্চ এই মামলার পরবর্তী শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।
