Monday, December 1, 2025

আমেরিকার ৫০% শুল্কের মোকাবিলায় ভারতের সামনে তিনটি রাস্তা: কী হতে পারে সমাধান?

Share

আমেরিকার ৫০% শুল্কের মোকাবিলায় ভারতের সামনে তিনটি রাস্তা!

সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতের উপরে আরও ২৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক চাপানোর ঘোষণা করেছেন। এর ফলে মোট শুল্কের হার দাঁড়াল ৫০ শতাংশ, যা আমেরিকার পক্ষ থেকে কোনও দেশের উপর আরোপিত সর্বোচ্চ শুল্ক বলেই মনে করা হচ্ছে। এই সিদ্ধান্তের ফলে ভারত-আমেরিকা বাণিজ্য সম্পর্কে বড় ধাক্কা লাগতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারতের সামনে এই পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার তিনটি পথ খোলা আছে।

১. কূটনৈতিক আলোচনা ও সমঝোতা
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, প্রথম এবং সবচেয়ে কৌশলী পথ হল আলোচনা। চলতি মাসের শেষে আমেরিকার একটি বাণিজ্য প্রতিনিধি দল ভারতে আসছে। এই সময় ভারত ও আমেরিকার মধ্যে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে সমস্যার সমাধান খোঁজা যেতে পারে।

ট্রাম্প বরাবরই ভারতের সঙ্গে একটি বাণিজ্যচুক্তি করতে আগ্রহী ছিলেন, কিন্তু দিল্লির ‘ধীরে চলো’ নীতিতে তিনি বিরক্ত হন। ভারত মার্কিন কৃষি পণ্যের জন্য বাজার খুলতে রাজি হয়নি এবং রাশিয়া থেকে তেল কেনা বন্ধ করেনি। এই অবস্থায় আলোচনার মাধ্যমে কিছু পণ্যের উপর শুল্ক কমানোর পথে হাঁটতে পারে ভারত।

২. রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্যে সমন্বয় ও বিকল্প উৎস খোঁজা
দ্বিতীয় পথটি হল, রাশিয়ার সঙ্গে বর্তমান জ্বালানি আমদানি ব্যবস্থায় কিছু পরিবর্তন আনা। যদিও ভারত স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, জাতীয় স্বার্থে রাশিয়ার থেকে সস্তায় তেল কেনা চালিয়ে যাবে, তবুও আন্তর্জাতিক চাপ বাড়লে বিকল্পের দিকেও নজর দিতে হতে পারে।

ইরাক, সৌদি আরব, ও আমিরশাহির মতো দেশগুলি অতীতেও ভারতের প্রধান তেল সরবরাহকারী ছিল। প্রয়োজনে সেই সম্পর্ক আরও মজবুত করে রাশিয়ার উপর নির্ভরতা কমানো যেতে পারে। এমনকি, কিছু পরিমাণে আমেরিকা থেকেও খনিজ তেল আমদানি বাড়ানোর ভাবনাচিন্তা হচ্ছে।

৩. আমেরিকা-বিরোধী দেশগুলির সঙ্গে জোটবদ্ধতা
তৃতীয় রাস্তাটি তুলনামূলক কঠিন ও কৌশলগত — আন্তর্জাতিক জোট গড়া। ভারত যদি আমেরিকার একই ধরনের পদক্ষেপের শিকার দেশগুলির সঙ্গে কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও জোরদার করে, তবে তা একটি শক্ত প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারে।

ব্রাজিল, রাশিয়া, চিন — এই দেশগুলির সঙ্গে ভারতের ইতিমধ্যেই ব্রিকস-এর মতো প্ল্যাটফর্মে সংযোগ রয়েছে। ব্রাজিলও ট্রাম্পের ৫০% শুল্কের কোপে পড়েছে। জানা গেছে, ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এই বিষয়ে ফোনে কথা বলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনও চলতি মাসে ভারত সফরে আসছেন — যেখানে এই ইস্যু নিয়ে আলোচনা হতে পারে।

কেন দ্রুত পদক্ষেপ প্রয়োজন?
২০২৫ সালের মার্চ পর্যন্ত সময়ে আমেরিকায় ভারত রফতানি করেছে প্রায় ৭.৬ লক্ষ কোটি টাকার পণ্য। পোশাক, ওষুধ, রত্ন, গয়না, এবং পেট্রোরসায়নিক — সবই এতে রয়েছে। এই রফতানি ভারতের জিডিপির প্রায় ২ শতাংশ। যদি ৫০ শতাংশ শুল্ক কার্যকর হয়, তবে এই রফতানির বড় অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং সরাসরি প্রভাব পড়বে অর্থনীতিতে।

এই কারণে, শুল্ক সংকট কাটিয়ে উঠতে ভারতকে দ্রুত এবং কৌশলী পদক্ষেপ নিতে হবে — কূটনীতি, বাজার-বিকল্প এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক— সব কিছু একসঙ্গে বিবেচনায় রেখেই।

দোকানের মশলার বদলে ঘরেই বানিয়ে নিন মাংসের স্বাদ বাড়ানোর জাদুমন্ত্র

Read more

Local News