বেকারত্ব নিয়ে হতাশ ইরাকে কী শেখালেন আমির খান
তারকা-সন্তান মানেই যেন বিলাসবহুল জীবন, ঝলমলে পার্টি আর ক্যামেরার আলো-আড়ালে সাজানো এক রঙিন জগৎ। কিন্তু এই চিত্রনাট্যের বাইরে যে বাস্তবতা রয়েছে, তা স্পষ্ট করে দিলেন বলিউডের ‘মিস্টার পারফেকশনিস্ট’ আমির খানের কন্যা, ইরা খান।
এক সাম্প্রতিক সাক্ষাৎকারে ইরা অকপটে জানালেন তাঁর ‘বেকার’ জীবনের হতাশার কথা। বয়স ২৬-২৭ এর কোঠায় দাঁড়িয়ে ইরার অনুভব—নিজেকে তিনি পুরোপুরি এক ‘বেকার মানুষ’ বলে মনে করেন। তাঁর কথায়, “আমার বাবা-মা আমার উপর অনেক অর্থ খরচ করেছেন, কিন্তু আমি যেন কিছুই ফিরিয়ে দিতে পারছি না। আমি সত্যিই নিজেকে এক বেকার মানুষ বলেই মনে করি।”
ইরার এই বক্তব্য অনেককেই চমকে দিতে পারে। কারণ তিনি শুধু একজন তারকা-সন্তান নন, তিনি একটি মানসিক স্বাস্থ্য সংক্রান্ত স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্ণধারও। ‘আগাতসু’ নামে এই সংস্থার সিইও ইরা নিজেই। তাহলে প্রশ্ন ওঠে—নিজে সংগঠন চালিয়ে, মানুষকে সাহায্য করে, এত কাজের মাঝেও কেন এই ‘বেকারত্ব’ নিয়ে হতাশা?
এই প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন তাঁর বাবা, আমির খান। মেয়ের বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, “ইরার আসল কথাটা হল—সে অর্থ উপার্জন করছে না। তাই নিজেকে বেকার ভাবছে।” তবে এখানেই থেমে থাকেননি আমির। মেয়ের এই হতাশা দূর করতে তিনি এক গুরুত্বপূর্ণ জীবনপাঠও দিয়েছেন।
আমির ইরাকে বোঝান, জীবনের মূল উদ্দেশ্য শুধু টাকা রোজগার নয়। তাঁর কথায়, “অনেকে মানুষকে সাহায্য করেন এবং তার বিনিময়ে অর্থ নেন। আবার কেউ কেউ নিঃস্বার্থভাবে সাহায্য করেন। তুমি যদি কাউকে সাহায্য করো, কারও কাজে লাগো—সেটাই আসল। তুমি তার বিনিময়ে অর্থ নিচ্ছো কি না, সেটা বড় বিষয় নয়।”
একজন বাবা হিসেবে নিজের কন্যার প্রতি গর্বিত আমির আরও বলেন, “তুমি এত মানুষকে সাহায্য করছ, ওদের পাশে দাঁড়াচ্ছ—এটাই আমার কাছে সবচেয়ে বড় কথা। তুমি টাকা উপার্জন করছ কি না, সেটা আমার কাছে গুরুত্বহীন। আমি চাই তুমি মন থেকে ভালো কাজ করো, মানুষের পাশে থাকো। সেটাই জীবনের আসল সাফল্য।”
তারকা-সন্তান হয়েও ইরার এই স্পষ্ট এবং সাহসী স্বীকারোক্তি আমাদের মনে করিয়ে দেয়, প্রত্যেক মানুষেরই নিজের মতো করে আত্মসংঘাতের পথ থাকে। শুধু বাইরের চাকচিক্য দিয়ে সেই লড়াইয়ের আঁচ বোঝা যায় না। আর বাবা আমির খানের শেখানো এই জীবনদর্শন হয়তো শুধু ইরার জন্য নয়, আমাদের সবার জন্যই এক মূল্যবান বার্তা—জীবনের মাপকাঠি টাকা নয়, মানুষের পাশে থাকা, ভালো কাজ করাই আসল।
‘ব্রহ্মস’ নয়, কেন ‘হাতুড়ি’র ঘা? অপারেশন ‘সিঁদুর’-এ ভারত বেছে নিল স্ক্যাল্প ও হ্যামার, কারণ জানেন?

