Monday, December 1, 2025

আমেরিকার মাটিতে দাঁড়িয়ে পরমাণু হুমকি! পাকিস্তানি সেনাপ্রধানের মন্তব্যে বিস্মিত ভারত, দিল কড়া বার্তা

Share

আমেরিকার মাটিতে দাঁড়িয়ে পরমাণু হুমকি!!

পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনিরের সাম্প্রতিক মন্তব্য ঘিরে কূটনৈতিক উত্তেজনার পারদ চড়ছে। আমেরিকার মাটি থেকে ভারতে পরোক্ষে পরমাণু হামলার হুমকি দিয়ে তিনি যেভাবে কথা বলেছেন, তাতে রীতিমতো ক্ষুব্ধ নয়াদিল্লি। শুধু পাকিস্তান নয়, এমন ‘বন্ধুত্বপূর্ণ’ তৃতীয় দেশের মাটি থেকে এমন মন্তব্যকে দুর্ভাগ্যজনক বলেও কড়া সুরে সমালোচনা করেছে ভারত সরকার।

সম্প্রতি বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রনধীর জয়সওয়াল এক বিবৃতিতে স্পষ্ট জানিয়েছেন— ভারত কোনও পরমাণু হুমকির কাছে মাথা নত করবে না। জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

কী বলেছিলেন পাক সেনাপ্রধান?

ফ্লোরিডার টাম্পায় এক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে আসিম মুনির বলেন,
“আমরা পরমাণু শক্তিধর দেশ। যদি ধ্বংসের পথে যেতেই হয়, তাহলে আমরা অর্ধেক পৃথিবীকে সঙ্গে নিয়েই ধ্বংস হব।”

এই বক্তব্যে কার্যত ভারতকেই লক্ষ্যবস্তু করেছেন তিনি। তাঁর কথায়, যদি ভারত সিন্ধু নদীতে বাঁধ তৈরি করে, তাহলে পাকিস্তান ১০টি মিসাইল ছুঁড়ে সেই বাঁধ গুঁড়িয়ে দেবে।
তিনি আরও বলেন, “সিন্ধু নদ ভারতের পৈতৃক সম্পত্তি নয়, আর আমাদের কাছে ক্ষেপণাস্ত্রের কোনও অভাব নেই।”

পর্যবেক্ষকদের মতে, আমেরিকার মাটিতে দাঁড়িয়ে এ ধরনের উস্কানিমূলক পরমাণু মন্তব্য আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক শিষ্টাচারের পরিপন্থী। এমন মন্তব্য কেবল সম্পর্কের অবনতি ঘটায় না, বিশ্ব জুড়ে নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ তৈরি করে।

ভারতের পাল্টা বার্তা

নয়াদিল্লি জানিয়েছে, পাকিস্তানের মতো দেশের হাতে পরমাণু অস্ত্র থাকা নিয়ে যে সন্দেহ ও শঙ্কা এত দিন আন্তর্জাতিক মহলে ছিল, আসিম মুনিরের বক্তব্যে তা আরও দৃঢ় হলো।

বিদেশ মন্ত্রকের বিবৃতিতে বলা হয়:
“এই ধরনের দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্যে আন্তর্জাতিক সমাজ সিদ্ধান্ত নিতে পারে, কোন দেশের হাতে পরমাণু অস্ত্র নিরাপদ।”

এছাড়াও, ভারত মনে করিয়ে দিয়েছে, পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী একাধিক বার জঙ্গিগোষ্ঠীর সঙ্গে সরাসরি বা পরোক্ষে সম্পর্ক রেখেছে। ফলে, এই ধরনের হুমকি কেবল ভারত নয়, গোটা উপমহাদেশের নিরাপত্তার জন্য বিপজ্জনক।

পরমাণু হুমকির পাশাপাশি জলের কূটনীতি

কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে সম্প্রতি জঙ্গি হামলার প্রেক্ষিতে ভারত সিন্ধু জলবণ্টন চুক্তি সাময়িকভাবে স্থগিত করেছিল। এর জবাবে আসিম মুনির ‘জলযুদ্ধ’-এর হুমকিও দেন। তাঁর বক্তব্য অনুযায়ী, ভারত যতই বাঁধ বানাক, পাকিস্তান সেগুলো ধ্বংস করে দেবে।

তবে আন্তর্জাতিক মহলে এমন হুমকি খুব একটা ভালো চোখে দেখা হচ্ছে না। কারণ, সিন্ধু চুক্তির মতো বিষয়গুলিকে এত দিন কূটনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের পথে রাখা হয়েছিল। কিন্তু এই ধরনের ভাষা ভবিষ্যতে যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে।

আমেরিকার ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন

যেখানে এই মন্তব্য করা হয়েছে, সেই আমেরিকার প্রতিও পরোক্ষে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে ভারত। এক বিবৃতিতে বলা হয়, “বন্ধুত্বপূর্ণ দেশের মাটিতে দাঁড়িয়ে এই ধরনের হুমকি দেওয়া অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।”

পাকিস্তান এবং আমেরিকার সম্পর্ক সম্প্রতি খনিজ তেল আমদানির মাধ্যমে কিছুটা ঘনিষ্ঠ হয়েছে। অন্য দিকে, রাশিয়া থেকে তেল কেনার কারণে আমেরিকার রোষে পড়েছে ভারত। এই প্রেক্ষাপটে ইসলামাবাদ-ওয়াশিংটনের সম্পর্ক নিয়েও নতুন করে আলোচনার দরজা খুলেছে।


উপসংহার:
আসিম মুনিরের মন্তব্য যতটাই চাঞ্চল্যকর, ততটাই তা কূটনৈতিক ভাবে অনভিপ্রেত। পরমাণু শক্তির মতো সংবেদনশীল ইস্যু নিয়ে এমন হুমকি বিশ্ব রাজনীতির জন্য উদ্বেগজনক। আর ভারত যেভাবে সোজাসাপটা জবাব দিয়েছে, তাতে স্পষ্ট— এই ধরনের কৌশলে তারা আর ভয়ের রাজনীতি খেলবে না।

কয়েক সপ্তাহ ধরে নতুন অভ্যাস শুরু করেছেন সোহা আলি খান, শরীর ভালো রাখতে খালি পেটে কী খান তিনি?

Read more

Local News