Thursday, January 30, 2025

আবার ভিন্‌রাজ্যে ডার্বি: এক বনাম ১১-এর দ্বৈরথে কি মোহনবাগানের জয়, না কি ইস্টবেঙ্গল ঘুরিয়ে দেবে ভাগ্যের চাকা?

Share

ভিন্‌রাজ্যে ডার্বি

শনিবার আইএসএলের দশম কলকাতা ডার্বি। এই ডার্বি ঘিরে উত্তেজনা আকাশচুম্বী। তবে প্রশ্ন একটাই—শেষ পাঁচ বছরে যে ধারা দেখা গেছে, তা কি এবারও অব্যাহত থাকবে? নাকি ইস্টবেঙ্গল এবার মোহনবাগানের জয়রথ থামিয়ে চমক দেবে?

২০২০-২১ মরসুমে আইএসএলে যোগ দেওয়ার পর থেকে দুই ঐতিহ্যবাহী দলের দেখা হয়েছে নয়বার। তবে এখানে রেকর্ড একেবারেই একতরফা। মোহনবাগান জিতেছে আটবার, আর একটি ম্যাচ ড্র হয়েছে। অন্যদিকে, ইস্টবেঙ্গল একবারও জয় পায়নি। লাল-হলুদ সমর্থকদের হতাশার গল্প যেন এখানেই থেমে থাকে না।

ইস্টবেঙ্গলের চ্যালেঞ্জ
ইস্টবেঙ্গলের কোচ অস্কার ব্রুজ়ো এই ম্যাচে তাঁর দলকে কীভাবে প্রস্তুত করবেন, তা এখন বড় প্রশ্ন। ডার্বির আগে ইস্টবেঙ্গলের অন্যতম ভরসা আনোয়ার আলি চোট পেয়েছেন, যা দলের জন্য বিশাল ধাক্কা। তাঁর অনুপস্থিতিতে ইস্টবেঙ্গলের রক্ষণ দুর্বল হয়ে পড়েছে। যদিও ব্রুজ়ো প্রকাশ্যে নিজের দুশ্চিন্তা দেখাননি, তবে ভেতরে ভেতরে যে চাপ রয়েছে, তা সহজেই অনুমেয়।

দলের অন্য কিছু খেলোয়াড়ের ফর্মও চিন্তার কারণ। দিমিত্রিয়স দিয়ামানতাকোস কেরালার হয়ে দুর্দান্ত খেললেও, ইস্টবেঙ্গলে তেমন ফর্মে নেই। ক্লেটন সিলভা নিজের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করছেন, তবে বয়সের ছাপ তাঁর খেলায় পড়ছে। নাওরেম মহেশ এবং পিভি বিষ্ণুর মতো প্রতিভাবান খেলোয়াড়রা রয়েছেন, কিন্তু তাঁরা ডার্বির চাপ সামলাতে কতটা প্রস্তুত, তা নিয়ে সন্দেহ আছে।

ভিন্‌রাজ্যে

মোহনবাগানের শক্তি
অন্যদিকে, মোহনবাগান যেন আগেই ম্যাচটা জিতে মাঠে নামছে। দলের গভীরতা এবং ভারসাম্য অন্য উচ্চতায় রয়েছে। ডার্বির ঠিক আগে গ্রেগ স্টুয়ার্ট চোটমুক্ত হয়ে দলে ফিরেছেন। তাঁর সঙ্গে জেমি ম্যাকলারেন এবং জেসন কামিংসের মতো খেলোয়াড়রা যে কোনো মুহূর্তে খেলার মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারেন।

মোহনবাগানের কোচ হোসে মোলিনা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন যে, তাঁর দলের মানসিকতা বদলাবে না। ম্যাচটি ডার্বি হলেও, তাঁরা প্রতিটি ম্যাচের মতোই ১০০ শতাংশ দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নামবেন। তাঁদের রিজার্ভ বেঞ্চের গভীরতা এতটাই, যে চোট বা ফর্মহীনতা কোনো সমস্যাই তৈরি করে না।

ডার্বির চাপ এবং পরিসংখ্যান
কলকাতা ডার্বির মতো ম্যাচে পরিসংখ্যান যে সবসময় ঠিক থাকবে, তা বলা যায় না। তবে এখনও পর্যন্ত মোহনবাগান এগিয়ে রয়েছে ২২-৫ গোল ব্যবধানে। ইস্টবেঙ্গলের আক্রমণ এবং রক্ষণে ধারাবাহিকতার অভাব স্পষ্ট। অন্যদিকে, মোহনবাগান পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে থাকা দলগুলির একটি।

কোচদের মন্তব্য
মোহনবাগানের কোচ মোলিনা বলেছেন, “আমাদের ছেলেরা লড়াইয়ের জন্য তৈরি। তবে সহজ ম্যাচ হবে না। আমরা জানি, ইস্টবেঙ্গল কীভাবে খেলে এবং সেই অনুযায়ী আমাদের পরিকল্পনা সাজিয়েছি। যদি নিজেদের সেরা খেলাটা খেলতে পারি, তবে জয়ের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী।”

অন্যদিকে, ইস্টবেঙ্গলের কোচ ব্রুজ়ো বলেন, “এই ম্যাচে ‘আন্ডারডগ’ বলে কিছু নেই। দুই দলের জেতার সুযোগ ৫০-৫০। মোহনবাগান হয়তো ভালো ফর্মে রয়েছে, তবে আমরা আমাদের সেরাটা দেওয়ার জন্য প্রস্তুত।”

শেষ কথা
ডার্বি ম্যাচ সবসময়ই বিশেষ কিছু। খাতায়-কলমে মোহনবাগান এগিয়ে থাকলেও, ফুটবল এমন একটি খেলা যেখানে এক মুহূর্তে সব পাল্টে যেতে পারে। ইস্টবেঙ্গলের সমর্থকরা হয়তো আশায় বুক বাঁধছেন, আর মোহনবাগান সমর্থকরা আশা করছেন জয়রথ অক্ষত থাকবে।

শনিবারের ম্যাচ শুধু দুই দলের নয়, বরং দুই ঐতিহ্যের লড়াই। একদিকে অভিজাত মোহনবাগান, আরেকদিকে জেদী ইস্টবেঙ্গল। ফুটবলপ্রেমীরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন—শেষ বাঁশির ধ্বনিতে কোন দল হাসবে?

বাড়ির লাগোয়া জমিতে সবজি বাগান করতে চান? বীজ পোঁতার আগে মনে রাখুন এই ৫টি বিষয়

Read more

Local News