বিহারের ভোটার তালিকা ইস্যুতে সুপ্রিম কোর্টের স্পষ্ট বার্তা!
বিহারে ভোটার তালিকার বিশেষ ও নিবিড় সংশোধন (SIR) প্রক্রিয়া ঘিরে জোর বিতর্কের মধ্যে সুপ্রিম কোর্ট এক গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করল। শীর্ষ আদালত জানিয়ে দিল—আধার কার্ড থাকলেই কেউ ভারতের নাগরিক, এমনটা ধরে নেওয়া যায় না।
মঙ্গলবার এই মামলার শুনানিতে বিচারপতি সূর্য কান্ত ও বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী স্পষ্ট ভাষায় বলেন, “নির্বাচন কমিশন ঠিক বলেছে। আধার নাগরিকত্বের প্রমাণ হতে পারে না।” এর মানে, আধার কার্ড থাকা মানেই কেউ ভারতীয় নাগরিক, এই যুক্তি মানা যায় না। নাগরিকত্ব যাচাই করতে হলে অন্য উপযুক্ত নথির প্রয়োজন রয়েছে।
আদালতে প্রশ্ন ওঠে, নির্বাচন কমিশনের আদৌ এমন প্রক্রিয়া চালানোর ক্ষমতা আছে কি না? এক্ষেত্রে বিচারপতি কান্ত বলেন, “কমিশনের ক্ষমতা কতদূর, সেটা নির্ভর করছে সংবিধান ও আইন অনুযায়ী তাদের দায়িত্বের উপর। এটা ২০০৩ সালের আইন হোক বা ২০১৩-র নির্দেশ—মূল প্রশ্ন হল কমিশন তাদের কাজের সীমারেখা অতিক্রম করেছে কি না।”
আইনজীবী কপিল সিব্বল আদালতে বলেন, কমিশন যেসব নথি চাচ্ছে, সেগুলো সবার কাছে নাও থাকতে পারে। এই অবস্থায় সাধারণ মানুষ কীভাবে আবেদন করবেন? উত্তরে বিচারপতির মন্তব্য, “কোথাও বলা হয়নি সব নথি একসঙ্গে দিতে হবে। নাগরিকত্ব প্রমাণে একটিমাত্র নথিও যথেষ্ট হতে পারে—যেমন, জাতিগত শংসাপত্র, জন্মসনদ কিংবা প্রশাসনের প্রদত্ত কোনও দলিল।”
আদালতের পর্যবেক্ষণ আরও একবার মনে করিয়ে দিল যে নাগরিকত্ব একটি সাংবিধানিক অধিকার, যার যাচাই হবে উপযুক্ত নথি ও আইনি প্রক্রিয়ার ভিত্তিতে, কোনও একটি পরিচয়পত্রের উপর নির্ভর করে নয়।
এই প্রসঙ্গে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়েও আদালতে প্রশ্ন ওঠে। আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি বলেন, ভোটের ঠিক আগে কমিশনের এই বিশেষ তালিকা সংশোধনের উদ্যোগ আসলে এক্তিয়ারের বাইরে গিয়ে নাগরিকত্ব নির্ধারণের চেষ্টা। এটা কমিশনের কাজ নয়। যদি কোনও ভোটারকে তালিকা থেকে বাদ দিতে হয়, তবে সেটা আইনি প্রক্রিয়া মেনেই করতে হবে।
আদালতের বক্তব্যে এই প্রশ্নেরও উত্তর পাওয়া যায়—কমিশনের কাজ হচ্ছে তথ্য যাচাই, তবে নাগরিকত্ব নির্ধারণ নয়। আর কোনও ভোটারের নাম তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হলে, সেটা যেন যথাযথ আইন মেনেই করা হয়, সে ব্যাপারে আদালতও সতর্ক।
এখন প্রশ্ন হল, বিহারে ভোটার তালিকা সংশোধনের নামে আদৌ কি কোনও ভোটারদের অযথা বাদ দেওয়া হচ্ছে? নাকি এটা শুধুই একটি যাচাইকরণ প্রক্রিয়া? এই প্রশ্নের জবাব আগামী শুনানিতে স্পষ্ট হতে পারে।
শীর্ষ আদালতের এই পর্যবেক্ষণ নাগরিক অধিকার রক্ষায় একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা বহন করে। আধার একটি পরিচয়পত্র—তবে সেটি নাগরিকত্বের প্রমাণ নয়। এবং শুধুমাত্র এই নথির অভাবে কাউকে ভারতের ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়া যায় না।
এই মামলার পরবর্তী শুনানি বুধবার। ততদিনে বিষয়টি আরও পরিণত রূপ পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
কয়েক সপ্তাহ ধরে নতুন অভ্যাস শুরু করেছেন সোহা আলি খান, শরীর ভালো রাখতে খালি পেটে কী খান তিনি?

